আজকের শিরোনাম :

রাজধানীতে ডেঙ্গু জ্বরে ‘মৃত্যু আতঙ্ক’

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০১৮, ১৪:৫৯

ঢাকা, ২৭ জুলাই, এবিনিউজ : রাজধানী জুড়ে বিরাজ করছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু আতঙ্ক। ডেঙ্গু হেমোরেজিক ও ডেঙ্গু শকড সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে গত দুই মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে রাজধানীতে মৃত্যু হয়েছে ৮জনের। এদের মধ্যে দুই বছরের কম বয়সের ছোট্ট শিশু, তরুণ-তরুণী, গৃহবধু এমনকি চিকিৎসকও রয়েছেন। এ সময়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছেন সাড়ে ৮ শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু ।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন তাদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করেছে মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। জানা গেছে, যারা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে তারা সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিতে চিকিৎসকের কাছে কিংবা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাননি। যখন তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তখন অনেক বিলম্ব হয়েছে। আইসিইউ ভর্তি করেও তাদের মৃত্যু ঠেকানো যায়নি। শুধু তাই নয়, মৃতদের অনেকেই এর আগেও এক বা একাধিকবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা বলেন, কেউ জ্বরে আক্রান্ত হলে ঘরে বসে না থেকে চিকিৎসক কিংবা নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 
তিনি আরো বলেন, ‘ডেঙ্গু জ্বরে যে কয়েকজন মারা গেছেন, তাদের পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে রোগতত্ত্ববিদরা আলাপ করে জেনেছেন, তারা প্রথমে নিজেরা বাসাতে অবস্থান করে হাতুড়ে ডাক্তার কিংবা পাড়া-মহল্লার ফার্মেসিস্টদের পরামর্শে ওষুধ খেয়েছেন। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছেন। কিন্তু ততক্ষণে ডেঙ্গু জ্বরের সঠিক চিকিৎসা দেয়ার সময় অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। তাই জ্বর হলে নিজেরা সিদ্ধান্ত না নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কি না, তা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে বের করতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বর হয় তা প্রায় সবার জানা আছে। ডেঙ্গু জ্বর হলে তীব্র জ্বর, মাংসপেশী ও হাড়ে ব্যথা হয়। এছাড়া কোথায় কোথায় ডেঙ্গু মশার জন্ম হয়, তা-ও সবার জানা। কিন্তু সব জেনেও অনেকেই অসচেতন। অনেকে নিজ বাড়ির আঙিনায়, ফুলের টব, ফ্রিজ ও এসিতে জমে থাকা পানি না ফেলে জমিয়ে রাখেন। তাই সেখানে এডিস মশা জম্মে।’ এ সময় তিনি বলেন, মানুষের অভ্যাস দূর করা খুব সহজ কাজ নয়।
ডা. সাবরিনা জানান, ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে বাঁচতে আইইডিসিআর, স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন জনসচেতনতা সৃষ্টিতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু মূল সচেতনতা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদেরকেই নিতে হবে।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মোট ৯৪৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার মধ্যে জানুয়ারিতে ২৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৭ জন, মার্চে ৫ জন, এপ্রিলে ১৪, মে মাসে ৩৫, জুনে ২৬৭ ও ২৫ জুলাই পর্যন্ত ৫৯০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
ভর্তি রোগীদের মধ্যে মোট আটজন মারা গেছেন। মৃতরা হলেন নার্গিস বেগম (৪৩), ফারজানা আক্তার (৩৪), রোজলিন বৈদ্য (৩১), সেজুতি (২৬) আরইয়ান (১ বছর ৭ মাস) হিমু (৮), তাহমিদ (৯) ও ডা. ফয়সাল বিল্লাহ (২৭)।

এবিএন/জসিম/নির্ঝর
 

এই বিভাগের আরো সংবাদ