গার্মেন্টস শ্রমিকরা চান ১২ হাজার, মালিকরা দিতে চান অর্ধেক
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০১৮, ১১:৫৫
ঢাকা, ১৭ জুলাই, এবিনিউজ : বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে নিজেদের আগের দাবি থেকে সরে এসেছেন শ্রমিকরা। এখন তারা ন্যূনতম মজুরি হিসেবে ১২ হাজার ২০ টাকা দাবি করেছেন। এর আগে তাদের দাবি ছিল ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা।
যদিও এর সঙ্গে দ্বিমত করছে কিছু কিছু শ্রমিক সংগঠন। এ ছাড়া মজুরি বোর্ডের কাছে মালিকরা ন্যূনতম মজুরি প্রস্তাব করছেন ৬ হাজার ৩৬০ টাকা।
এ বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নতুন করে নির্ধারণের জন্য একটি মজুরি বোর্ড গঠন করা হয়। সে বোর্ডের তৃতীয় বৈঠকে সোমবার মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা ন্যূনতম মজুরি হিসেবে নিজেদের প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
এতে দেখা যায়, শ্রমিকদের প্রতিনিধি ১২ হাজার ২০ টাকা ন্যূনতম মজুরি হিসেবে প্রস্তাব করেছেন। মজুরি বোর্ডে নির্বাচিত শ্রমিক প্রতিনিধি বেগম শামসুন্নাহার ভূঁইয়া বলেন, আগের মজুরি বোর্ডের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে তিনি এ প্রস্তাব করেছেন।
তিনি বলেন, ‘শ্রমিক ফেডারেশনগুলোর ভিন্ন ভিন্ন মজুরির দাবি ছিল। কারো ছিল ১৬ হাজার টাকা, আবার কারো ১৮ হাজার টাকা। আমি সার্বিক বিষয় চিন্তা করে ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ২০ টাকা প্রস্তাব করেছি।’
শামসুন্নাহার বলেন, ‘আমি হিসাব করেছি ২০১০ সালে শ্রমিকদের দাবি কত টাকা ছিল, আর কত টাকা পেয়েছে, আর ২০১৩ সালে দাবি কত টাকা ছিল আর কত টাকা পেয়েছে। এখন আমি ১৬ হাজার টাকা দাবি করলাম, কিন্তু পাওয়ার সময় যদি সেটা এক-তৃতীয়াংশ হয়ে যায়, তাহলে সমস্যা হবে। সে জন্য আমি ১২ হাজার টাকা প্রস্তাব করেছি।’
শামসুন্নাহার ভূঁইয়া জাতীয় শ্রমিক লীগের নারীবিষয়ক সম্পাদক। এ মুহূর্তে তৈরি পোশাক শিল্পে একজন নতুন শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ৫,৩০০ টাকা, যা ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে কার্যকর হয়। এর মধ্যে মূল মজুরি ৩ হাজার টাকা, বাড়ি ভাড়া ১২০০ টাকা এবং চিকিৎসা, যাতায়াত ও খাদ্য ভাতা ১১০০ টাকা।
এদিকে শামসুন্নাহার ভূঁইয়ার ১২ হাজার ২০ টাকা ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিমত করছে কিছু শ্রমিক সংগঠন। মজুরি বোর্ড গঠনের আগে থেকেই শ্রমিকদের একটি বড় অংশ ১৬ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি দাবি করে আসছিলেন। বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলছেন, আজ শ্রমিক প্রতিনিধি যে প্রস্তাবনা তুলে ধরেছেন, তার সঙ্গে পোশাক শ্রমিকদের বড় অংশ একমত হবে না। ফলে ১৬ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি শ্রমিকদের মজুরি এখন ১৬ হাজার টাকাও যথেষ্ট না, কারণ বাজারে সব জিনিসের দাম যেভাবে বেড়েছে, আর আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী একজন শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি যা হওয়া উচিত কোনোটাই শ্রমিকরা পাচ্ছেন না। ফলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’ এদিকে পোশাক মালিকরা আরও কম ন্যূনতম মজুরি দিতে চান। মজুরি বোর্ডে মালিকদের প্রতিনিধি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলছেন, তারা ন্যূনতম মজুরি ৬ হাজার ৩৬০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, শ্রমিকদের বর্তমান ন্যূনতম মজুরি এবং পোশাক শিল্পের বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় নিয়েই তারা এমন প্রস্তাবনা দিয়েছেন, যা বাস্তবায়নযোগ্য। তিনি বলেন, আমরা ৬,৩৬০ টাকা প্রস্তাব করেছি। আমরা বিবেচনা করেছি গত ৫ বছরে মূল্যস্ফীতি কতটুকু হয়েছে। এখন তারা বেশি দাবি করেছে, দাবি করলেই তো হবে না, তাকে যুক্তি দিয়ে বোঝাতে হবে কেন তারা এমনটা চাচ্ছে।’ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, তবে, তাদের প্রস্তাব তারা দিয়েছে, আমাদেরটা আমরা দিয়েছি। এখন মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান আছেন, নিরপেক্ষ সদস্য, স্থায়ী সদস্য আছেন, সবাই মিলে যেটা পারি, সেটাই নির্ধারণ করব। এ বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা অক্সফাম এক প্রতিবেদনে বলেছে, বিশ্বের সাতটি প্রধান তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরিই সবচেয়ে কম। অক্সফ্যামের রিপোর্টটিতে বলা হয়, বাংলাদেশে একজন সাধারণ মানুষের খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার জন্য নিম্নতম মজুরি প্রয়োজন ২৫২ মার্কিন ডলারের সমান অর্থ। কিন্তু এ মুহূর্তে বাংলাদেশের একজন শ্রমিক মজুরি পান প্রায় ৬৭ মার্কিন ডলারের সমান অর্থ।
খবর বিবিসি বাংলা এবিএন/সাদিক/জসিম
এদিকে শামসুন্নাহার ভূঁইয়ার ১২ হাজার ২০ টাকা ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিমত করছে কিছু শ্রমিক সংগঠন। মজুরি বোর্ড গঠনের আগে থেকেই শ্রমিকদের একটি বড় অংশ ১৬ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি দাবি করে আসছিলেন। বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলছেন, আজ শ্রমিক প্রতিনিধি যে প্রস্তাবনা তুলে ধরেছেন, তার সঙ্গে পোশাক শ্রমিকদের বড় অংশ একমত হবে না। ফলে ১৬ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি শ্রমিকদের মজুরি এখন ১৬ হাজার টাকাও যথেষ্ট না, কারণ বাজারে সব জিনিসের দাম যেভাবে বেড়েছে, আর আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী একজন শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি যা হওয়া উচিত কোনোটাই শ্রমিকরা পাচ্ছেন না। ফলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’ এদিকে পোশাক মালিকরা আরও কম ন্যূনতম মজুরি দিতে চান। মজুরি বোর্ডে মালিকদের প্রতিনিধি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলছেন, তারা ন্যূনতম মজুরি ৬ হাজার ৩৬০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, শ্রমিকদের বর্তমান ন্যূনতম মজুরি এবং পোশাক শিল্পের বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় নিয়েই তারা এমন প্রস্তাবনা দিয়েছেন, যা বাস্তবায়নযোগ্য। তিনি বলেন, আমরা ৬,৩৬০ টাকা প্রস্তাব করেছি। আমরা বিবেচনা করেছি গত ৫ বছরে মূল্যস্ফীতি কতটুকু হয়েছে। এখন তারা বেশি দাবি করেছে, দাবি করলেই তো হবে না, তাকে যুক্তি দিয়ে বোঝাতে হবে কেন তারা এমনটা চাচ্ছে।’ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, তবে, তাদের প্রস্তাব তারা দিয়েছে, আমাদেরটা আমরা দিয়েছি। এখন মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান আছেন, নিরপেক্ষ সদস্য, স্থায়ী সদস্য আছেন, সবাই মিলে যেটা পারি, সেটাই নির্ধারণ করব। এ বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা অক্সফাম এক প্রতিবেদনে বলেছে, বিশ্বের সাতটি প্রধান তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরিই সবচেয়ে কম। অক্সফ্যামের রিপোর্টটিতে বলা হয়, বাংলাদেশে একজন সাধারণ মানুষের খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার জন্য নিম্নতম মজুরি প্রয়োজন ২৫২ মার্কিন ডলারের সমান অর্থ। কিন্তু এ মুহূর্তে বাংলাদেশের একজন শ্রমিক মজুরি পান প্রায় ৬৭ মার্কিন ডলারের সমান অর্থ।
খবর বিবিসি বাংলা এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ