আজকের শিরোনাম :

ভালোবাসা-শ্রদ্ধায় ভাষা শহীদদের স্মরণ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:৩৩ | আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:৩৬

আজ একুশে ফেব্রুয়ারি, রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে রাষ্ট্রভাষা পাওয়ার দিন, মহান শহীদ দিবস। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন রফিক, সালাম, বরকত, শফিউর, জব্বারসহ অনেকে। একুশের প্রথম প্রহর থেকেই সারাদেশ কৃতজ্ঞ চিত্তে ভাষা শহীদদের স্মরণ করছে।

আজ শুক্রবার বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে গর্ব আর শোকের এই দিনটি পালন করছে জাতি, আর এ দিনের মূল কর্মসূচি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো।

একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পরে স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

মধ্যরাতে ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছোঁয়ার আগেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের সারি দেখা যায় শহীদ মিনারে।

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর শহীদ মিনার সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের এই পালায় শুক্রবার সকালে নামে মানুষের ঢল। খালি পায়ে প্রভাতফেরির মিছিলে সবার কণ্ঠে অমর সেই গান- ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি..।’

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসা সর্বস্তরের মানুষে সারি আরো দীর্ঘ হয়। জগন্নাথ হল, পলাশী মোড় ছাড়িয়ে নীলক্ষেত ও ইডেন কলেজের পাশে দীর্ঘ লাইনে ফুল আর ছোট ছোট পতাকা হাতে লাইন বেঁধে অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায় সব বয়সের, সব শ্রেণি পেশার মানুষকে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ তাদের সন্তানদের নিয়ে শহীদ মিনারে আসেন ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে।  ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় শহীদ বেদী। 

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মিছিলে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর নির্দেশে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান সালাম, রফিক, বরকত, শফিউরসহ নাম না জানা অনেকে। এর পর বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেয় তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায়ই ১৯৭১ সালে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর এক ঘোষণায় ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

ঢাকার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় শহীদ মিনারেও একুশের প্রথম প্রহর থেকে ফুল দেওয়ার পালা শুরু হয়। শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শোক এবং সেই সঙ্গে অধিকার অর্জনের এই দিনটি স্মরণ করছে।

ভাষা শহীদদের স্মরণে এদিন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরেও রয়েছে বিশেষ আয়োজন। এ ছাড়া জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনেও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ