আজকের শিরোনাম :

কে কোথায় উঁকি দিল সেটি বড় বিষয় নয় : তথ্যমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:৫৩

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন ভোটের গোপন কক্ষে কোনো স্থানে কারো কারো ‘উঁকি’ দেয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে এসেছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, এতবড় একটি নির্বাচনে কে কোথাও উঁকি দিল সেটি বড় বিষয় নয় বরং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোনো ধরনের কেন্দ্র দখল বা হাঙ্গামা ঘটেনি, লোকক্ষয় হয়নি।

আজ রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি-ডিএসসিসি) নির্বাচনের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমি দেখেছি কয়েকটি কাগজে লিখেছে- গোপন কক্ষে কোনো কোনো জায়গায় উঁকি দেয়া হয়েছে। এত বড় একটি নির্বাচন আড়াই হাজার ভোট কেন্দ্র, ১৩ হাজারেরও বেশি বুথ, এখানে কয়েকটি গোপন কক্ষে কেউ উঁকি দিয়েছে, এটা কি বড় বিষয়? নাকি এত বড় একটি কর্মযজ্ঞ, এত ভোটার, এতগুলো ভোটকেন্দ্র, কোথাও কোনো গণ্ডগোল হয়নি, মারপিটের ঘটনা ঘটেনি, অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হয়েছে, কেন্দ্র দখলের ঘটনা ঘটেনি- সেটি মূল বিষয়?

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি অতীতের দিকে যদি তাকাই, সেই হিসেবে উঁকি দেয়াটা বড় বিষয় নয়। কিন্তু কেউ কেউ এই উঁকি দেয়াটাকে বড় বিষয় হিসেবে দেখানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। যা অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক।

মন্ত্রী বলেন, এখানে কে কোথায় উঁকি দিল সেটিকে বড় করে দেখিয়ে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রক্রিয়া বিএনপির। সেটিকে যারা বড় করিয়ে দেখাচ্ছে তারাও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপির অপচেষ্টার সঙ্গে অংশগ্রহণ করছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, গতকালের দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপমহাদেশের অন্যান্য নির্বাচন বিবেচনা করলে গতকালের নির্বাচনটি ইতিহাসের একটি ভালো নির্বাচন ছিল।

ভোটার উপস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, অনেকে প্রশ্ন রেখেছেন যে, ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। আমি হিসাব করে দেখেছি যে, মোটামুটি ২৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। এই ভোটার উপস্থিতি আরও অনেক বেশি হতো। ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ যুক্ত বলে আমি মনে করি। প্রথমত, টানা তিন দিন ছুটি, সেই কারণে ঢাকা শহরের অনেক ভোটার গ্রামে চলে গেছে। দ্বিতীয়ত, শুরু থেকেই ইভিএম নিয়ে বিএনপির নেতিবাচক প্রচারণা। ইভিএম নিয়ে মানুষের মধ্যে একটা সংশয় তারা তৈরি করেছে। ইভিএমের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা চালানোর কারণেই আমি মনে করি ৮-১০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে। কারণ তারা এটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল।

হাছান মাহমুদ বলেন, তারা (বিএনপি) প্রথম থেকে বলে এসেছে নির্বাচনকে তারা আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়েছে। এমনকি ভোটের দুইদিন আগে (বিএনপি মহাসচিব) মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বলেছেন, আমাদের সফলতা হচ্ছে সেখানেই যে আমরা ঘর থেকে বের হতে পেরেছি অর্থাৎ নির্বাচনী প্রচারণা-প্রপাগান্ডা চালাচ্ছি।

তিনি বলেন, এতে জনগণের মধ্যে এই ধারণা জন্মেছে যে, বিএনপি তো জয়লাভের জন্য নির্বাচন করছে না। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হচ্ছে না। সেই কারণে অনেক ভোটার ভোট দিতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে। এসব কারণে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে যারা ভোট দেয়ার জন্য যোগ্য, তাদের ৯৯ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ ভোটার হয়, কিংবা এরও বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে যারা ভোট দেয়ার জন্য যোগ্য, তাদের মধ্যে মাত্র ৬০ শতাংশ ভোটার হয়। সেই ৬০ শতাংশের মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভোট পড়ে। কোনো নির্বাচনে ৪০ শতাংশ, যখন খুব ভালো ভোট হয় তখন ৫০ শতাংশ ভোট পড়ে। সেই হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভোটদানের যোগ্য ভোটারের তুলনায় আমাদের দেশে গতকাল যে নির্বাচন হয়েছে সেখানেও ভোটার উপস্থিতি অনেক ভালো।

ভোটের দিন একজন সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমার জানা মতে, বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে তার প্রতিবাদে বিএনপির হরতাল ডাকার প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, বইমেলার দিন হরতাল তারা ডেকেছে। ধানমন্ডির বাসা থেকে আসার সময় কয়েক জায়গায় জ্যামে পড়েছি, চালক বলল আজ হরতাল, আমি বললাম তাই নাকি। হরতালের তো চিহ্ন দেখতে পেলাম না।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ