আজকের শিরোনাম :

বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৩:১৯ | আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৪:৫০

ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পরিবেশ রক্ষা, জলাধার রক্ষা, গাছ লাগানোসহ দেশের উন্নয়নে আপনারা কাজ করবেন। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এ জন্য দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। 

আজ রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আইডিইবির ২৩তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে  স্কিলস রেডিনেস ফর অ্যাচিভিং এসডিজি এবং এডপ্টিং আইআর  ৪.০ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি দেশকে গড়ে তুলতে হলে দক্ষমানব শক্তির সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আমাদের দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে। শুধু দেশের জন্য নয়, যারা বিদেশে কাজ করবেন তাদেরও দক্ষ হয়ে যেতে হবে। তাহলে আমরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হব।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকা থেকে শুরু করে সারাদেশে তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন তারা। স্বাধীনতার পরে কালভার্ট, ব্রিজ ও স্কুলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। অর্থাৎ ধ্বংসপ্রাপ্ত একটা বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য সবকিছুতেই ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অবদান রয়েছে। ১৯৫৪ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন তিনি তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একসময় বাংলাদেশের কথা বললে ভিক্ষার ঝুলির কথা বলা হতো। সেই বাংলাদেশ আর নেই। গত ১০ বছরে বাংলাদেশের পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সামনে উন্নয়নের রোল মডেল। এ বাংলাদেশ আগের বাংলাদেশ নয়। আমাদের একটি লক্ষ্য আছে, সেটি পূরণ করতে চাই। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। সেই পর্যন্ত আমাদের এখনকার পরিস্থিতি ধরে রাখতে হবে।

ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা দাবিগুলো যথাযথভাবে জানানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাজেটের আগে যদি ইনক্রিমেন্টসহ দাবি সামনে আনা যায় তা হলে কিছু একটা সমাধানের ব্যবস্থা হয়।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতর্বষ পালনের নানা কর্মসূচির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন উদযাপন করবেন তখন সবচেয়ে বড় কর্মসূচি হবে পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া। ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপণ করুন। আপনারা সারাদেশে কাজ করেন সেটা লক্ষ্য করতে হবে। আমরা ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ছি যাতে করে কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আমাদের দেশে বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠী বাস করে। খাদ্য উৎপাদনের পাশাপাশি বসবাসের ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা চাই একটি মানুষও যেন গৃহহীন না থাকে। বাংলাদেশে প্রতিটি গৃহহীন মানুষ বসবাসের উপযোগী একটি ঘর পাবে মুজিববর্ষে সেটি আমাদের লক্ষ্য। স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। মানুষের মৌলিক চাহিদা একে একে পূরণ করছি। আপনাদের কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ রক্ষা উন্নয়ন যেন ভালোভাবে হয় সেটি লক্ষ্য করবেন। অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের ক্ষেত্র বাড়বে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ একটা ব-দ্বীপ। প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এ দেশকে এগিয়ে নিতে আমরা ডেল্টা প্লান ২১০০ প্রণয়ন করেছি। ইতোমধ্যে অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছি। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে যাচ্ছি। আর এর জন্য সব চেয়ে বেশি দরকার হবে দক্ষ জনগোষ্ঠী সৃষ্টি করা।

তিনি বলেন, আমরা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছি। একটি দেশকে গড়ে তুলতে হলে দক্ষ জনগোষ্ঠী গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে দেশের মানুষ যেন সমান তালে এগিয়ে যেতে পারে তার চেষ্টা করছি।

২০২১ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, পরিকল্পনা করে কাজ করছি। ২০২১ সাল থেকে ২০৪১ সালের বাংলাদেশ কেমন হবে তার পরিকল্পনা বস্তবায়নে কাজ করছি। এ মুজিববর্ষেই প্রতিটি মানুষের বসবাস উপযোগী ঘরের ব্যবস্থা করা হবে। একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। প্রতিটি মানুষই ঘর পাবে। জাতির পিতা এটি শুরু করেছিলেন। স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে যাচ্ছি। মানুষের মৌলিক অধিকার একে একে পূরণ করে যাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, জিডিপি উন্নিত করেছি। আমাদের একটা লক্ষ্য আছে আমরা সেই লক্ষ্য পূরণ করতে চাই। আজকে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করছি। আমরা মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই। আমরা স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আমরা বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নত ও সমৃদ্ধশীল দেশে রূপান্তর করব।

এ সময় দুই সিটির নির্বাচনের প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, ঢাকাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা। যারা নৌকায় ভোট দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণের মেয়রদের জয়যুক্ত করেছেন তাদের ধন্যবাদ অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালোরাতে হত্যাকা-ের শিকার জাতির পিতা এবং তার পরিবারের নিহত সদস্যবৃন্দ, শহীদ চার নেতা, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ এবং ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন আইডিইবির সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান। 

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ