আজকের শিরোনাম :

সীমান্তে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে মিয়ানমার- বাংলাদেশ একমত

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:৫৭

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, মানব ও ইয়াবা পাচার বন্ধে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ ঐকমত্যে পৌঁছেছে।

আজ বুধবার পিলখানা বিজিবি সদর দফতরে বিজিবি ও মিয়ানমার পুলিশ ফোর্স (এমপিএফ) এর উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সীমান্ত সম্মেলন শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিজিবি ডিজি এ কথা বলেন।

মিয়ানমারের সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করে ওই দেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে মিয়ানমার পুলিশ প্রধানের এমন অভিযোগের জবাবে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী কোন গোষ্ঠীর অস্তিত্ব নেই এবং বাংলাদেশের ভূমি কোনো অপরাধী অথবা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ব্যবহারের সুযোগ দেয়া হয় না। এর পরও সীমান্তে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ক্যাম্প বা আস্তানা থাকার তথ্য পাওয়া গেলে এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছে।

বিজিবি মহাপরিচালক বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় মিয়ানমার অভ্যন্তরে ইয়াবার কারখানা পরিচালনা এবং ইয়াবা পাচারের বিষয়টি সম্মেলনে উত্থাপন করেন। এমপিএফ প্রধান জানান, এ ধরনের তথ্য আমাদের জানানো হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মাদক, অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক দ্রব্য চোরাচালান প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপগুলো আরও জোরদার করতে এবং ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্ত অঞ্চলে একযোগে সমন্বিত টহল জোরদার করতে উভয় দেশ সম্মত হয়। উভয় বাহিনীর যৌথ টহলের ফলে বিগত একবছরে ইয়াবা পাচার অনেকটা কমে এসেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বিজিবির মহাপরিচালক মানব পাচার, অবৈধ সীমান্ত অতিক্রম ও মাদক পাচার বন্ধে বিভিন্ন পর্যায়ে বিশেষত বিওপি বা ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে তথ্য আদান-প্রদান এবং প্রতিনিয়ত যোগাযোগের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

চিফ অব পুলিশ জেনারেল স্টাফ, এমপিএফ পুলিশ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মায়ো থান অবৈধ মাদক পাচার ও মাদক ব্যবসা প্রতিরোধের প্রয়োজনীয়তার পুনরাবৃত্তি করে বলেন, মাদক ব্যবসা তাদের সমাজেও একই প্রভাব ফেলেছে। তিনি মাদক পাচাররোধে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

সীমান্ত এলাকায় মাদক ও নেশা জাতীয় দ্রব্য বিশেষত ইয়াবা পাচার রোধে বাংলাদেশ ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি বজায় রাখবে এবং মিয়ানমার পক্ষ তার জাতীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ নীতি অনুযায়ী মাদকবিরোধী কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

উভয় পক্ষই একে অপরের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া সীমানা রেখার উভয় পার্শ্বে ৫০ মিটার এর মধ্যে যে কোনো ধরনের সীমানা লঙ্ঘন না করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

উভয় পক্ষই সীমান্তে গোলাগুলি বা গুলি চালানোর ঘটনা (যদি থাকে) তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একে অপরকে জানাতে সম্মত হয়েছে।

উভয় পক্ষ নিজ দেশের নাগরিক কর্তৃক অজ্ঞতাবশত সীমান্তরেখা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে উভয়ে দেশের প্রচলিত নিয়মানুযায়ী তাদেরকে ফেরত পাঠাতে তৎপর থাকবে। উভয় পক্ষই সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যাগুলোর সমাধানে সঠিক তথ্য আদান-প্রদান করতে সম্মত হয়।

সীমান্ত সুরক্ষা ও যথাযথ আইন প্রয়োগ নিশ্চিতকরনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্তে যৌথ টহল পরিচালনা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে উভয় পক্ষ সম্মত হয়।

যৌথ আলোচনার দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে (বিজিবি) ৭ম সীমান্ত সম্মেলন শেষ হয়েছে। এই সীমান্ত সম্মেলনে মিয়ানমারের চীফ অব পুলিশ জেনারেল স্টাফ, পুলিশ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মায়ো থানের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের মিয়ানমার প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করে। অপরদিকে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে বিজিবির উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ