আজকের শিরোনাম :

রাশিয়ার চাপে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে পারে মিয়ানমার : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:১০ | আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৫:২৩

মিয়ানমারের ওপর রাশিয়ার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে বলে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘রাশিয়া ও রাশিয়ান ফেডারেশন যদি রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে চাপ দেয়, তাহলে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হবে দেশটি।

আজ সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সোভিয়েত/রাশিয়ায় গ্রাজুয়েটদের পঞ্চম এশিয়ান কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

এসময় ড. মোমেন বলেন, মিয়ানমারের ওপর রাশিয়ার অনেক প্রভাব রয়েছে। তারা চাপ দিলে হয়তো মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে। তখন নিপীড়িত এই মানুষগুলো একটা ভালো জীবনে ফিরে যেতে পারবে।

মন্ত্রী বলেন, রাশিয়া তথা সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের (ইউএসএসআর) সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধকালীন এবং পরবর্তীতে সোভিয়েত ইউনিয় আমাদের যে সমর্থন দিয়েছে তা ভোলার নয়। তারা একাত্তরে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি সংঘটিত নৃশংসতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আওয়াজ তুলেছিল এবং আমাদের স্বাধীনতার পরপরই পুনর্নির্মাণ ও পুনর্বাসন প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিল। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে এবং জাতিসংঘে আমাদের প্রবেশের সুবিধার্থেও বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদান করেছিল ইউএসএসআর। তাদের নিঃশর্ত সহায়তার জন্য সোভিয়েত ইউনিয়ন, তার নেতৃত্ব, সরকার ও জনগণ বাংলাদেশিদের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান অর্জন করে আছে।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছিল তাতে দুদেশের সম্পর্কে কিছুটা ভাটা পড়ে। সোভিয়েত ইউনিয়নও ১৯৯১ সালে ভেঙে ১৫টি রাষ্ট্রের জন্ম দেয়। তবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে আবারও সে সম্পর্ক সুন্দরভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বেড়েছে। অনেকগুলো চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। রূপপুর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের কাজ এগিয়ে চলছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ রাশিয়ার সঙ্গে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের পরিধি আরও বাড়াতে চায়। এর ফলে দুই দেশের মানুষ উপকৃত হবে। বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি এখন ৮.১ শতাংশ। আমাদের অর্থনীতি এখন অনেক ভালো।

বাংলাদেশে রাশিয়ার বিনিয়োগ আহ্বান করে ড. মোমেন বলেন, রাশিয়া যেন এ দেশে বিনিয়োগ করে। কারণ এখানে যেকোনো পণ্য তৈরি করলে তার মার্কেট প্রস্তুত রয়েছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে উইন উইন সিচুয়েশন হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজেন্ডার আই ইগনাতভ। 

উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সোভিয়েত অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সাব) সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার তাসকিন এ খান, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ইঞ্জিনিয়ার এস এ এম আজাদ হোসেন, অধ্যাপক শংকর বসু, নেপালের ইং আর ধ্রুবা মাহারজান, মঙ্গোলিয়ার টিসোগজোলমা ডোরজপালাম প্রমুখ।

চার দিনব্যাপী কনফারেন্সের পরবর্তী দু’দিনে অতিথি হিসেবে অংশ নেবেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। এর আগে চার দিনব্যাপী কনফারেন্সের প্রথম দিন রোববার (২২ ডিসেম্বর) আগত বিদেশি অতিথিদের স্বাগতম জানানো হয়।

প্রায় ৬০ জনের মতো বিদেশি অতিথি এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানা যায়। এছাড়া সোভিয়েত ও রাশিয়ান চারশতাধিক গ্রাজুয়েট এ সম্মেলনে অংশ নেবেন। আগের চারটি সম্মেলন নেপাল, চীন, ভিয়েতনাম ও মঙ্গোলিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ