কার্গো বিমানে পেঁয়াজ আসছে, দাম কমে যাবে : প্রধানমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০১৯, ১৪:৪৮ | আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০১৯, ২০:৫১
পেঁয়াজের ঊর্ধ্বমুখী বাজারদরের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পেঁয়াজ বিমানে উঠে গেছে। কার্গো বিমান ভাড়া করে পেঁয়াজ আনা হচ্ছে। কাল-পরশু পেঁয়াজ এলে দাম কমে যাবে। তিনি বলেন, ‘যাদের কারণে পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়েছে বা দাম বেড়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আজ (শনিবার) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যখন ভালো থাকে তখন একটা শ্রেণি ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। তারা কোনো না কোনোভাবে একটি ইস্যু তৈরি করে। এদেশের মানুষ ভালো থাকুক সুখে-শান্তিতে থাকুক তা একটা শ্রেণি চায় না। মানুষ যখনই সুখের মুখ দেখতে চায় তখন এই শ্রেণির লোকেরা খুব মনঃকষ্টে ভোগে। যারা এ ধরনের অপকর্ম করে তাদের বিষয়টিও এদেশের জনগণ দেখবে।
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে চক্রান্তের সঙ্গে কেউ জড়িত আছে কি না সে প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা জানি এখন পেঁয়াজ নিয়ে একটা সমস্যা আছে। সব দেশেই পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এটা ঠিক। কিন্তু আমাদের দেশে কেন কি কারণে এত… একটা অস্বাভাবিকভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ছে কেন জানি না। আমরা দেখতে চাই এ ধরনের চক্রান্তের সঙ্গে কেউ জড়িত আছে কি না। … এর পেছনে মূল কারণটা কি সেটা খুঁজে বের করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাভাবিকভাবে আবহাওয়ার কারণে অনেক সময় অনেক পণ্যের উৎপাদন বাড়ে বা কমে। আর যেহেতু পেঁয়াজটা বেশিদিন রাখা যায় না। কিন্তু যদি এখন হোল্ডিং করে দাম বাড়িয়ে দুই পয়সা কামাতে চান তাদের এটাও চিন্তা করতে হবে, পেঁয়াজ তো পচে যাবে। এখন পচা পেঁয়াজও শুকানোর চেষ্টা হচ্ছে। তো মানুষকে এই কষ্ট দেওয়াটা কেন? এভাবে কারা এর পেছনে আছে সেটাও আমাদের দেখতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা যতই এগিয়ে যাই, মানুষ যখন ভালো থাকে একটা না একটা ইস্যু তৈরি করা হয় এবং মানুষের মাঝে একটা বিভ্রান্তি তৈরি করার চেষ্টা করা হয়। ’
পাশের রাষ্ট্র ভারতে ১০০ রুপি কিলো পেঁয়াজের দামের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এদেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আমরা নানাবিধ ও কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। শুধু শহর নয়, গ্রামের মানুষও যেন শহরের মতো সুবিধা পায় আমরা সে কর্মসূচি ঘোষণা করছি। আজ যখন একজন প্রত্যন্ত অঞ্চলে গৃহিণী বলে আমরা এখন আর চুলায় ফুক দিয়ে রান্না করি না। এখন আমরা রাইস কুকারে ভাত রান্না করি। আরেকজন প্রত্যন্ত গ্রামের বোন যখন বলে যে- সে গ্রামে বিউটি পার্লার দিয়ে দিয়েছে এবং প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই অর্থ দিয়ে সে সংসার পরিচালনা করছে, তখন বোঝা যায় যে গ্রামের মানুষের আর্থিক উন্নতি হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, একজন রাজনীতিকের জীবনে সে নিজে কতটুকু লাভবান হলো সেটা বড় কথা নয়। মানুষকে কতটুকু দিতে পারলো সেটাই হলো বড় কথা। আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছিলেন এই বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। স্বাধীনতার সুফল এদেশের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি নির্মল গুহ এর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
সম্মেলনে সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গাজী মেজবাউল হক সাচ্ছু।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মতিউর রহমান মতি, সম্মেলনে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের দফতর সম্পাদক সালেহ মো. টুটুল। এসময় মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এর আগে সম্মেলনের শুরুতেই জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। প্রধান অতিথিকে ফুলের শুভেচ্ছা জানান স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নির্মল রঞ্জন গুহ এবং গাজী মেজবাউল হক সাচ্ছু। এরপর পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের শুভ উদ্বোধন করা হয়। শেখ হাসিনাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয়। পরিবেশন করা হয় দলীয় সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠান। শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা এতে অংশ নেন।
সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগম এমপি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন।
এবিএন/জনি/জসিম/জেডি
এই বিভাগের আরো সংবাদ