আজকের শিরোনাম :

ফল চাষে গবেষণা বাড়ানোর আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ জুন ২০১৮, ১৭:২৪

ঢাকা, ২২ জুন, এবিনিউজ : ‘অপ্রতিরোধ্য দেশের অগ্রযাত্রা, ফলের পুষ্টি দেবে নতুন মাত্রা’ প্রতিপাদ্যে ২২ জুন থেকে ৬ জুলাই দেশব্যাপী শুরু হয়েছে ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ ও জাতীয় ফল প্রদর্শনী-২০১৮।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে ফলদ বৃক্ষরোপণ এবং জাতীয় ফল প্রদর্শনী-২০১৮-এর উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।

এ সময় দেশীয় ফলদ উদ্ভিদের জাত সুরক্ষার পাশাপাশি বিদেশি উন্নত ফল চাষের ক্ষেত্রে খাপ খাওয়ানোর উপায় খুঁজে বের করতে আরো গবেষণা বাড়ানোর জন্য কৃষিবিজ্ঞানীদের প্রতি আহ্বান জানান কৃষিমন্ত্রী।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশীয় ফলের জাতের সুরক্ষার পাশাপাশি আমাদের বিদেশি উন্নত ফলের উৎপাদন বা চাষের ক্ষেত্রে খাপ খাওয়ানোর উপায় খুঁজে বের করতে হবে। এ ছাড়া মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়কালে দেশে যে ৬০ ভাগ ফল পাওয়া যায়, তার সময়সীমা যাতে আরো বাড়ানো যায়, সে জন্য কৃষিবিজ্ঞানীদের গবেষণা বাড়াতে হবে।’

এ উপলক্ষে কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জাতীয় পর্যায়ে রাজধানীর ফার্মগেটে অবস্থিত আ কা মু গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটরিয়াম চত্বরে ২২ থেকে ২৪ জুন তিন দিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

শুক্রবার ফল মেলা উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে আ কা মু গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটরিয়াম চত্বর পর্যন্ত এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। সকাল ১০টায় প্রধান অতিথি হিসেবে ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ ও জাতীয় ফল প্রদর্শনী-২০১৮-এর উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

পরে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে ‘মানবসম্পদ উন্নয়ন পুষ্টিসমৃদ্ধ ফলের অবদান’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ। স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মহসীন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্নতা অর্জন করেছে। কৃষিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও অগ্রগতি বিশ্বের জন্য মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পুষ্টি নিশ্চিতে আমাদের নিয়মিত ফল খেতে হবে। আর এই ফলের চাহিদা নিশ্চিতে আমাদের বসতবাড়ির আঙিনায় দেশীয় ফলদ গাছ লাগাতে হবে এবং তাদের পরিচর্যা ও সংরক্ষণ করতে হবে।’

কৃষি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, ‘চাল উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন স্বয়ংসম্পন্নতা অর্জন করেছে। এখন আমাদের দরকার সুষম খাদ্য, আর এই সুষম খাদ্যের মূল অনুষঙ্গ ফল। একসময় দেশে ফল শুধু রোগীর পথ্য হিসেবে ব্যবহার বা খাওয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে সরকারের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা ও উদ্যোগের ফলে মানুষের নিয়মিত খাদ্যতালিকায় ফল যুক্ত হয়েছে। মানুষের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এসেছে।’

ফলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ছয়টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান এই জ্যেষ্ঠ সচিব।

সেমিনারে কৃষি তথ্য সার্ভিস কর্তৃক নির্মিত প্রতিপাদ্যভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া জনগণকে সচেতন করতে পোস্টার, প্রচারপত্র ও বুকলেট বিতরণ করা হয়েছে এবং স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের ফলদ বৃক্ষ রোপণে উদ্বুদ্ধ করতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

মেলায় নয়টি সরকারি ও ৫১টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মোট ৮১টি স্টল অংশ নিয়েছে। মেলায় আমের ৭০টির বেশি প্রজাতিসহ প্রায় ২০৩ প্রজাতির ফলের একাধিক জাত প্রদর্শিত হচ্ছে। এ ছাড়া মেলায় রয়েছে জাতীয় ফল কাঁঠালের একটি বিশেষ কর্নার।

মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এখানে আসা দর্শনার্থীরা ফল চাষের বিভিন্ন প্রযুক্তি সম্পর্কে এবং রাসায়নিকমুক্ত বিভিন্ন জাতের ফল কিনতে পারবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

 

এবিএন/জসিম/নির্ঝর

এই বিভাগের আরো সংবাদ