আজকের শিরোনাম :

বহুমুখীকরণ ও লাভজনক করতে হবে কৃষি : কৃষিমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০১৯, ১৯:৩৪

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, শুধু ধানসহ প্রচলিত কৃষি পণ্যের উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে কৃষিকে বহুমুখীকরণ ও লাভজনক করতে হবে।

আজ শনিবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাজী বদরুদ্দোজা মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন কর্মশালা-২০১৯ এর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

গত অর্থ বছর যে সব গবেষণা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছিল সেগুলোর মূল্যায়ন এবং এসব অভিজ্ঞতার আলোকে আগামী বছরের গবেষণা কর্মসূচি প্রণয়নের উদ্দেশ্যে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালার কারিগরি অধিবেশন ১৩ থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।

এ সময় কৃষিমন্ত্রী বারি’র মৃত্তিকা বিজ্ঞান, কীটতত্ত্ব, উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব ল্যাব পরিদর্শন করেন এবং ইনস্টিটিউটের সেমিনার কক্ষের পাশে স্থাপিত বিভিন্ন বিভাগের স্টল পরিদর্শন করেন।

কর্মশালায় জানানো হয়, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এ পর্যন্ত ২১২টি ফসলের ৫৫৮ টি উচ্চ ফলনশীল (হাইব্রিডসহ), রোগ প্রতিরোধক্ষম ও বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশ প্রতিরোধী জাত এবং ৫২৪ টি অন্যান্য প্রযুক্তিসহ মোট ১,০৮২টি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। বর্তমানে ২০৭টি ফসলের উপর গবেষণা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ সব প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে দেশে তেলবীজ, ডালশস্য, আলু, গম, সবজি, মসলা এবং ফল ফসলের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব প্রযুক্তির উপযোগিতা যাচাই বাছাই ও দেশের বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কর্মসূিচ গ্রহণ করাই এ কর্মশালার প্রধান উদ্দেশ্য।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী, বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামী লীগ জাতির কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো বাংলাদেশকে অন্তত দানা জাতীয় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হবে। সাথে সাথে দারিদ্র্য কমিয়ে আনা হবে। ২০১৫ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ দানা জাতীয় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে।

তিনি বলেন, শুধু ধানের উপর নির্ভরশীল হলে হবে না। ফলমূল, সবজিসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে জোর দিতে হবে। দেশ এখন দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন পুষ্টিজাতীয় নিরাপদ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। এই বিবেচনায় শাক-সবজির উৎপাদন বৃদ্ধি করা হয়েছে। এসব কৃষি পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে এক্রিডেটেড ল্যাব না থাকায় এসব পণ্য রপ্তানি করা যাচ্ছে না। এ জন্য বারি’তে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা একটি মর্মান্তিক ঘটনা। ব্যক্তিগতভাবে আমার রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। দেশের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্ররা এই ধরণের ঘটনা ঘটাবে এটা কাম্য না। সারা জাতি এটা নিন্দা করেছে। যারাই এই ধরণের ঘটনা ঘটাবে সেই দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, কথা বলার স্বাধীনতা মানুষের মৌলিক অধিকার। তাই আইন করে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা উচিত হবে না। ছাত্রদের মূল্যবোধের যেন অবক্ষয় না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আযাদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য কৃষিবিদ জনাব আব্দুল মান্নান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সম্মানিত বিশিষ্ট বিজ্ঞানী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএআরআই-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক (অব.) ও এমেরিটাস সায়েন্টিস্ট, এনএআরএস, ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা কার্যক্রম, সাফল্য ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার উপর সংক্ষিপ্ত বক্ত্য দেন বারি’র পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. আব্দুল ওহাব এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পরিচালক (সেবা ও সরবরাহ) ড. বাবু লাল নাগ।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ