আজকের শিরোনাম :

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশ্ব সম্প্রীতিতে অনন্য নজির: শেখ হাসিনা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০১৯, ১৭:৪৮ | আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০১৯, ১৯:১৪

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক বিশ্ববাসীর কাছে সু-প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের দৃষ্টান্ত– এ কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দুই দেশের মধ্যকার এ সম্পর্ক ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশ্ব সম্প্রীতিতে অনন্য নজির।

শনিবার (৫ অক্টোবর) নয়াদিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে যৌথভাবে তিনটি প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিগত একদশকে আমাদের উভয় দেশের মধ্যে বিভিন্ন প্রথাগত খাত যেমন নিরাপত্তা, বাণিজ্য, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, জলবায়ু ও পরিবেশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, জনযোগাযোগ বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য প্রভৃতি খাতে সহযোগিতা প্রভূত পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন নতুন ও অপ্রচলিত খাত যেমন ব্লু-ইকোনমি এবং মেরিটাইম, পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, মহাকাশ গবেষণা, ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ রপ্তানি ও সাইবার সিকিউরিটি প্রভৃতি খাতে উভয় দেশের সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত হয়েছে।

তিনি বলেন, এ সকল বহুমুখী ও বহুমাত্রিক সহযোগিতার ফলে আমাদের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিশ্ববাসীর সম্মুখে সু-প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের দৃষ্টান্তরূপে পরিগণিত হচ্ছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতেও এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের শুরুর দিকের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের উভয় দেশের মধ্যকার এই সম্পর্কের শুভ সূচনা হয়েছিল ১৯৭১ সালে যখন বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এই মুক্তিযুদ্ধে ভারতের জনগণ ও সরকারের অপরিসীম অবদানের কথা আমরা চিরদিন কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করি। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ক্ষেত্রে তা এক মাইলফলক হিসেবে পরিগণিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে এলপিজি রপ্তানির সিদ্ধান্ত আমাদের উভয় দেশের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্যিক সম্পর্ককে অধিকতর বেগবান করবে বলে আমি মনে করি। এছাড়া এর ফলে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যসমূহের জ্বালানি চাহিদা পূরণ অনেকাংশে সহজ হবে বলে আমি আশা করছি। 

এর আগে দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে দু'দেশের সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয় এবং বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে চুক্তি ও সমঝোতাপত্র বিনিময় হয়। এছাড়া দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে দ্বিপাক্ষিক তিনটি প্রকল্পও উদ্বোধন করেন।  

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যৌথভাবে খুলনায় অবস্থিত ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইনজিনিয়ার্সে বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিআইপিএসডি); রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকায় বিবেকানন্দ ভবন উদ্বোধন ও বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় এলপিজি আমদানি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও পানিসম্পদ বিষয়ে ছয়টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে দুই দেশের মধ্যে।

দুপুরে নয়াদিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে বৈঠকে বসেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। এরপর তাদের উপস্থিতিতেই সাত চুক্তি সই হয়। এ সময় দুই দেশের সরকারপ্রধানরা তিনটি যৌথ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।

শেখ হাসিনা হায়দ্রাবাদ হাউসে পৌঁছালে প্রধান ফটকে গিয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান নরেন্দ্র মোদি। এরপর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরু হয়। ১০ দিনের মধ্যে দুই দেশের দুই শীর্ষ নেতার এটি দ্বিতীয় বৈঠক। জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদে শেখ হাসিনা ও মোদির বৈঠক হয়। বৈঠকের পর হায়দরাবাদ হাউসে শেখ হাসিনা তাঁর সম্মানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দেয়া মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেন।

সমঝোতা স্মারকগুলো হলো:

উপকূলীয় এলাকায় নজরদারিতে সহযোগিতা বিনিময়ে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে বাংলাদেশ ও ভারত। সই করা সমঝোতা স্মারকের আওতায় বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে পানি প্রত্যাহার করতে পারবে ভারত। এ পানি তারা ত্রিপুরা রাজ্যর সাবরুম শহরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্পে ব্যবহার করবে। চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য পরিবহনের বিষয়ে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) সই হয়েছে। বাংলাদেশকে দেয়া ভারতের ঋণের প্রকল্প বাস্তবায়নে একটি চুক্তি হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইউনিভার্সিটি অব হায়দ্রাবাদের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ