শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমী আজ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০১৯, ১২:১৫ | আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০১৯, ১২:২০

শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমী শনিবার (৫ অক্টোবর)। মহাসপ্তমীতে হবে নবপত্রিকা প্রবেশ ও স্থাপন, ষোড়শ উপাচারে অর্থাৎ ষোলটি উপাদানে দেবীর পূজা। সকালেই ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদান করা হবে।

দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে পূজা করেন ভক্তরা। সপ্তমী পূজা উপলক্ষে সন্ধ্যায় বিভিন্ন মণ্ডপে ভক্তিমূলক সঙ্গীতানুষ্ঠান, রামায়ণ পালা, আরতিসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সকাল থেকেই চণ্ডিপাঠে মুখরিত রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব পূজামণ্ডপ। ঢাকের বাদ্য আর শঙ্খের ধ্বনিতে ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে মণ্ডপগুলোতে।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) মহাষষ্ঠীতে দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে উৎসব শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। । সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে এখন পূজার ধুম। রং-বেরঙের পোশাক পরে বিভিন্ন বয়সী মানুষ ভিড় জমিয়েছে মন্ডপগুলোতে। সন্ধ্যায় ঢাকের তালে আরতির জন্যও রয়েছে তাদের আলাদা প্রস্তুতি।

জগতের মঙ্গল কামনায় এবার দেবীর আগমন ঘটছে ঘোড়ায় চড়ে। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে দেবী দুর্গা বিদায়ও নেবেন ঘোড়ায় চড়ে। শ্বশুরবাড়ি কৈলাস থেকে কন্যারূপে তিনি বাপের বাড়ি বেড়াতে মর্ত্যলোকে আসছেন।

ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পুরোহিত ধীমান দাস বলেন, দেবীর ঘোটকে আগমন মানে সব কিছু ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়া। এর মানে দেবী আমাদের এক সতর্কবার্তা দিয়েই আসছেন। সুখ-দুঃখকে পাশাপাশি রেখে আমরা পথ চলব।

হিন্দু পুরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবীদুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তে তিনি এই পূজার আয়োজন করায় দেবীর এ পুজোকে বাসন্তী পূজাও বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে যাওয়ার আগে শ্রী রামচন্দ্র দুর্গাপূজার আয়োজন করেছিলেন। তাই শরৎকালের এই পূজাকে হিন্দু ধর্মমতে অকালবোধনও বলা হয়।

জানা গেছে, এবার সারা দেশে ৩১ হাজার ১০০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের তুলনায় এবার মণ্ডপ বেড়েছে এক হাজারটি। ঢাকা মহানগরে এবার ২৩৭টি মণ্ডপে পূজা হবে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ২৩৪টি।

শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে সারা দেশে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। সারা দেশের পূজামণ্ডপে পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও পূজামণ্ডপে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) পঞ্চমীর সন্ধ্যায় ছিল দেবীর বোধন। বোধন শব্দের অর্থ চৈতন্যপ্রাপ্ত বা জাগরণ। পূজা শুরুর আগে সন্ধ্যায় বেলশাখায় দেবীর বোধন দুর্গাপূজার একটি অন্যতম আচার। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) মহাষষ্ঠীতে দশভূজা দেবীদুর্গার আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল পূজার আনুষ্ঠানিকতা।

শনিবার ( ৫ অক্টোবর) সকালে নবপত্রিকা প্রবেশ ও স্থাপনের পর শুরু হবে মহাসপ্তমী পূজা। রোববার (৬ অক্টোবর) মহাঅষ্টমী পূজা, সেদিন হবে সন্ধিপূজা। রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠে অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা। সোমবার (৭ অক্টোবর) সকাল বিহিত পূজার মাধ্যমে হবে মহানবমী পূজা এবং মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বির্সজনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনের দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। পাঁচ দিনব্যাপী মণ্ডপে মণ্ডপে চলবে পূজা-অর্চনা, ভক্তিমূলক সঙ্গীতানুষ্ঠান, মহাপ্রসাদ বিতরণ, সন্ধ্যায় আরতি প্রতিযোগিতা।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ