আজকের শিরোনাম :

‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হবে’

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:১৩ | আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৯:৩৯

রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। প্রধানমন্ত্রীর ইতোমধ্যে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার, কানাডার হাইকমিশনার বিনোয়েত প্রিফন্টেইন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং কয়েকটি ইইউয়ের এনজিও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় কাঁটাতারের বেড়া কেন দেওয়া হচ্ছে, তার কারণ তারা জানতে চেয়েছেন। আমরা ব্যাখ্যা দিয়েছি। তাদের জানিয়েছি—প্রথমে আমরা মনে করেছিলাম, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি দুই-চার মাসের মধ্যেই সামাধান হয়ে যাবে। কিন্তু এখন দেখছি, খুব শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে হচ্ছে না। এ কারণে ক্যাম্পের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় এনে প্রধানমন্ত্রী ক্যাম্পগুলোতে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা ক্যাম্পগুলোয় বসবাসের পাশাপাশি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। ইতোমধ্যে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন সদস্য এবং আওয়ামী লীগের একজন নেতাকে হত্যা করেছে। একই সঙ্গে তারা ইয়াবার বাহক হিসেবেও কাজ করছে। এ ছাড়া মিয়ানমার সরকার অভিযোগ করেছে, সে দেশের কিছু সন্ত্রাসী পালিয়ে এসে এই ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছে। এসব বিষয় রোধ করতে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে আমরা তাদের জানিয়েছি। আমাদের ব্যাখ্যায় তিন দেশের রাষ্ট্রদূত সন্তুষ্ট হয়েছেন।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রদূতরা জানতে চেয়েছেন, ক্যাম্পগুলোয় কাঁটাতারের বেড়া দিলে এনজিওগুলো রোহিঙ্গাদের সেবায় কাজ করবে কীভাবে? জবাবে তাদের জানিয়েছি, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শরণার্থী শিবিরে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া থাকে। বাংলাদেশও একইভাবে কাঁটাতারের বেড়া দেবে।’

বেড়ার দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে কিনা জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। অচিরেই কাজ শুরুর প্রক্রিয়া চলছে।’

আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘তিন দেশের রাষ্ট্রদূত আরও জানতে চেয়েছেন- রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশপাশে ইন্টারনেট ও মোবাইল সংযোগ কেন বিচ্ছিন্ন করেছি। আমরা জানিয়েছি, ইন্টারন্যাশনাল টেরোরিস্টরা যেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারে সে জন্য ইন্টারনেট ও মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর ভেতরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টহল দিতে যেতে পারে না। তারা মূল সড়কে টহল দেয়। ক্যাম্পগুলোর ভেতরে কে কী করছে, তা রাতের বেলা পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয় না বলে, আমরা ক্যাম্পগুলোর আশপাশে ওয়াচটাওয়ার বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এনজিওকর্মীদের বাংলাদেশের ভিসা দেওয়ার বিষয়টি রাষ্ট্রদূতরা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের জানান, যেসব এনজিওকর্মী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেবা দিতে আসবেন, তাদের ভিসা পেতে কোনো সমস্যা হবে না।

এনজিওকর্মীদের কেউ কেউ রোহিঙ্গাদের উসকানি দিচ্ছে কিনা জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘কেউ রোহিঙ্গাদের উসকানি দিচ্ছেন না। সবাই সহযোগিতা করছেন।’

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের আবাসনের সব কিছু প্রস্তুত করা আছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা-ইউএসএইচসিআরসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে পরামর্শ করে তাদের সেখানে পাঠানো হবে।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ