আজকের শিরোনাম :

ইভিএম নির্বাচনের পথে ইসি আপত্তি বিএনপির

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০১৮, ১৩:১৪

ঢাকা, ১৪ জুন, এবিনিউজ : দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপি ও তাদের শরিকরা বিরোধিতা করলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক্স ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনা হচ্ছে পরিবর্তন। ইভিএম সংক্রান্ত বিধিমালা এবং ইউজার ম্যানুয়াল প্রণয়নের কাজ চলছে। তবে এটি ব্যবহারের আগে সব দলের মতামত নেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। কিন্তু কতগুলো কেন্দ্রে বা আসনে ব্যবহার হবে সে বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা মেশিন ব্যবহারের আগে সব ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে চাই। এখন এর কাজ চলছে।

ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে । বর্তমানে ইসির সংগ্রহে ৩৮০ সেট ইভিএম রয়েছে। এ পর্যন্ত তারা ২ হাজার ৫৩৫টি ইভিএম কিনেছে।

পরীক্ষামূলকভাবে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ৬টি ওয়ার্ডের ১৪টি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। ২৬ জুন এই সিটিতে ভোট গ্রহণ করা হবে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌরসভার সব কটি ওয়ার্ডে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। এই পৌরসভায় ভোট গ্রহণ হবে ২৫ জুলাই। এর আগে খুলনা সিটি নির্বাচনে দুইটি ভোট কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করে ইসি। সেখানকার সোনা পোতা সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয় এবং পিটিআই এর জসিমউদ্দীন হোস্টেল ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৬টি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। কী পরিমাণ ইভিএম ব্যবহার করা হবে এটি কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। এছাড়া আসন্ন বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও ইভিএম ব্যবহার করা হবে।

জানা গেছে, গাজীপুর সিটির নির্বাচন শেষ হলে ইভিএম ব্যবহারের সুবিধার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে প্রচারণার জন্য আঞ্চলিক পর্যায়ে ওয়ার্কশপ করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। এরই অংশ হিসেবে ৬ জুন বরিশাল ও ফরিদপুর অঞ্চলের জন্য প্রথম কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ইভিএম ব্যবহার করে ভোটগ্রহণের জন্য জনগণকেও প্রশিক্ষণ দিবে ইসি।

তবে এর বিরোধিতা করছে বিএনপি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, এই কমিশন ক্ষমতাসীনদের তাঁবেদারি করছে। এজন্য আমরা বিরোধিতা করা সত্ত্বেও ইভিএম ব্যবহার করছে। এটি কেনাকাটা বিরাট বাণিজ্য হবে। এজন্য তাদের আগ্রহ বেশি।

সূত্র জানায়, এর আগে ইভিএম ব্যবহার করা হলেও সেসব ব্যবহারে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য এই কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর ইভিএম ব্যবহার করবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের সময় আওয়ামী লীগ ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে সুপারিশ করে। তবে বর্তমানে কেনা ইভিএমগুলোতে নতুন সুবিধা যুক্ত করা হচ্ছে। ইসি এসব ইভিএম কিনেছে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) কাছ থেকে।

ইসির সূত্র জানায়, পুরনো ইভিএম মেশিনগুলো ত্রুটিযুক্ত থাকায় ভোটে ৬ ধরনের সমস্যা হতো। ভোট নিলেও ভোটের ফলাফল পাওয়া যেত না। ভোটারের পরিচয়পত্র ও আঙ্গুলের ছাপ সনাক্ত করা যেত না। মেশিনের ব্যাটারি তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যেত।

ইভিএমের এবারের কারিগরি কমিটির দাবি-নতুন ইভিএমে এইসব অসুবিধা দুর করা হবে। আর ১০ রকমের সুবিধা সংযোজন করা হবে। সেগুলো হল- ভোটগ্রহণের আগে মেশিন চালু না হওয়া ও মেশিন ছিনতাই হলেও অবৈধ ভোটদান বন্ধ; পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত থাকায় অনুমোদিত ব্যক্তির বাইরে মেশিন চালু করা সম্ভব হবে না। ভোট শুরুর আগে-পরে শূন্য ভোটিং ও প্রিন্টিং করার সুবিধা। স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফলাফল প্রিন্ট, ঘোষণা ও বিতরণ করা হবে নতুন ইভিএমে।

এছাড়া ভোটারদের বোঝার জন্য ব্যালট ইউনিটের ভোট দেয়ার বোতামগুলো বড় আকারের ও ভিন্ন রঙের করা হবে। ভোট শেষ হওয়ার পর ভোটারের সন্তুষ্টির জন্য ধন্যবাদ শব্দ যুক্ত হবে। ইভিএমের কাঠামো, টাচস্ক্রিন, কি-বোর্ড এবং ভোটদান বোতামগুলোর মান উন্নত করাসহ নানা পরিবর্তন আনা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন বলেন, ইভিএমের এম একটি যন্ত্র ব্যবহার করার আগে সবার মতামত নেয়া উচিত।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ