শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০১৯, ০৯:১০
ঈদের কাঙ্ক্ষিত দিনটি যতই এগিয়ে আসছে রাজধানীর হাটগুলোতে ততই বাড়ছে কোরবানির পশুর আমদানি। সেই সঙ্গে বাড়ছে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ভিড়। ফলে কোরবানির পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) পর্যন্ত কোরবানির হাটে বেচাকেনা তেমন না জমলেও, শনিবার(১০ আগস্ট) সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন পশুর হাটে বেচাকেনা জমে উঠেছে। গত দু’দিন বিরূপ আবহাওয়া ও বাজারের গবাদিপশুর হাটের অবস্থা বোঝার জন্য অনেকে বাজার ঘুরে দেখেছেন। ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে গবাদিপশু বেচাকেনা নিয়ে তেমন দর কষাকষি হতে দেখা যায়নি।
এবার হাটগুলোতে দেশি গরুর যোগান সবচেয়ে বেশি। রাজধানীর হাটগুলোতে পর্যাপ্ত দেশিয় গরু-ছাগল রয়েছে। ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে বড় গরুর চেয়ে ছোট গরু। কোরবানির জন্য মানুষ ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার গরুই পছন্দ করছেন। রাজধানীর গাবতলী, উত্তর শাহজাহানপুর, ভাটারা সাঈদ নগর হাট, কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গায় স্থাপিত হাটসহ কয়েকটি হাট ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
রাজধানীর গাবতলী পশু হাটে গিয়ে দেখা যায়, এখানে গরু, মহিষ, খাসি, উট ও দুম্বা পাওয়া যাচ্ছে। গাবতলী হাটে গরুর দাম ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। হাটে ৮ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দামের খাসির সংখ্যা বেশি। তবে ৩০-৩৫ এবং ৪০ হাজার টাকাও কিছু খাসির দাম চাওয়া হচ্ছে। গাবতলী হাটে তিনটি উট চোখে পড়েছে। উঠের দাম চাওয়া হচ্ছে ১২ লাখ থেকে ১৮ লাখের মধ্যে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে মূল রাস্তায় এবার গরু-ছাগলের হাট বসতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত খুবই ইতিবাচক। এতে নগরবাসীর চলাচলে আগের মতো সমস্যা হচ্ছে না।
ভাটারা সাঈদ নগর হাট ইজারাদার ইকবাল হোসেন খন্দকার বলেন, অবিরামভাবে বেচা-বিক্রি চলবে চাঁদরাত পর্যন্ত। হাটে ঢোকার পথে ভেটেরিনারি চিকিৎসকরা গরু ছাগল ও মহিষের শারীরিক পরীক্ষা করছেন।
ইজারাদাররা জানান, বেশি দাম পাওয়ার আশায় ব্যবসায়ী ও খামারিরা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রাজধানীতে গরু নিয়ে আসেন। এরমধ্যে কুড়িগ্রাম, জামালপুর, জয়পুরহাট, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, সাতক্ষীরা, যশোর, সুনামগঞ্জ, নীলফামারী, রংপুর, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে গরু-ছাগল বাজারে এসেছে।
রহমতগঞ্জ ক্লাব মাঠ ও হাজারিবাগ পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, বেচাকেনা বেশ জমে উঠেছে। ছোট সাইজের গরু ৪০ হাজার থেকে ৫৫-৬০ হাজার, মাঝারি থেকে বড় ধরনের ক্রস গরু আকারভেদে ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা ও দেশি গরু ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রহমতগঞ্জ ক্লাব মাঠে এক ব্যবসায়ীকে ৫টি বড় সাইজের গরু ৮ লাখ টাকায় কিনতে দেখা যায়। গরু পছন্দ হওয়ায় দুই কথায় গরুগুলো কিনে নেন তিনি।
আজিমপুরের বাসিন্দা হাসিবুজ্জামান জানান, তিনি সব সময় দেশি গরু কোরবানি দেন। তাই বাজার ঘুরে ঘুরে বাছাই করে পছন্দসই গরু কেনেন। এবারও হাজারিবাগ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় গরু কিনেছেন বলে জানান।
বিক্রেতারা বলছেন, এবার ভারতীয় গরু না আসায় দেশিয় ক্রস প্রজাতির গরু বেশি উঠেছে। গতবারের চেয়ে দামও একটু বেশি। দাম একটু বেশি হলেও ক্রেতারা যেভাবে হাটে আসছেন তাতে শেষের দিকে গরু খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে ধারণা করছেন। তবে গরুর তুলনায় ছাগলের বিক্রি কম।
ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর হাটগুলোতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছেন আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। প্রত্যেক হাটে পুলিশের কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে। মানি এস্কর্ট ও জাল নোট শনাক্তকরণেও বসানো হয়েছে বুথ। এছাড়া যারা হাট ইজারা নিয়েছেন, তাদের পক্ষ থেকে গরু-ছাগলের মল-মূত্র ও ময়লা নিয়মিত পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে।
এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি
এই বিভাগের আরো সংবাদ