আজকের শিরোনাম :

‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ বন্ধ চায় হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০১৮, ১৩:২৫

ঢাকা, ০৭ জুন, এবিনিউজ : বাংলাদেশে চলমান মাদক বিরোধী অভিযান বন্ধ ও ইতোমধ্যে এ অভিযানে যেসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর স্বাধীন তদন্ত চায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বা এইচআরডব্লিউ।

এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, ‘মাদকবিরোধী অভিযানের সময় সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো স্বাধীন তদন্তের নির্দেশ দেয়া উচিত বাংলাদেশ সরকারের।’

বাংলাদেশে গত মাসের মাঝামাঝিতে শুরু হওয়া এ অভিযানে কথিত বন্দুক যুদ্ধে এ পর্যন্ত ১৩০ জনেরও বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

সংস্থাটি তাই মনে করে জাতীয় আন্তর্জাতিক মানের আইনি প্রয়োগের জন্য বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথাযথ প্রশিক্ষণ না পাওয়া পর্যন্ত এ ধরনের অভিযান স্থগিত করা উচিত।

‘বাংলাদেশে মাদক একটি মারাত্মক সমস্যা। কিন্তু যে কোন পদক্ষেপ হওয়া উচিত আইনের মধ্যে থেকে এবং অপ্রয়োজনীয় শক্তি ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মে মাসের শুরুতে এ মাদকবিরোধী অভিযানের কথা বলেছিলেন এবং পরে ৩০ মে তিনি জানিয়েছেন যে প্রায় এ অভিযানে প্রায় ১০ হাজার ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

গণমাধ্যমে ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, অভিযানে বেশিরভাগ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে রাতের বেলায়।

এসব ঘটনার পর কথিত বন্দুক যুদ্ধের যে বক্তব্য এসেছে সরকারের তরফ থেকে সেগুলো প্রত্যাখ্যান করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।

যেমন গত ১৯ মে কর্তৃপক্ষ হাবিবুর রহমান নামে ৩৮ বছর বয়স্ক এক ব্যক্তির বন্দুক যুদ্ধে নিহত হৗয়ার তথ্য জানায়।

র‍্যাবের সাথে ওই বন্দুক যুদ্ধ আরও দুজনকে মৃত পাওয়া যাওয়ার কথা বলা হয়।

যদিও হাবিবুর রহমানের পরিবার জানিয়েছে, সে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তা হেফাজতেই ছিল।

আরেকটি ঘটনায় একটি ঢাকাভিত্তিক মানবাধিকার গ্রুপ বলছে ইসলাম রনি নামে একজনকে বাড়ি থেকেই আটক করা হয়। তার পরিবার জানায় গোয়েন্দা পুলিশ পরে তার নিরাপত্তা ও মুক্তির জন্য ‘ঘুষ’ দাবি করে।

পরিবার থেকে পুলিশকে টাকাও দেয়া হয় কিন্তু রনি কথিত বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়।

এর পর সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে টেকনাফের কাউন্সিলর একরামুল হকের নিহত হওয়ার ঘটনা। তার পরিবারের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা অডিওতে কথাবার্তায় বোঝা যাচ্ছে যে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

অডিওটি অবশ্য নিরপেক্ষ সূত্র থেকে যাচাই করা হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন অডিওর বিষয়ে তারা তদন্ত করবেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতিতে বাংলাদেশের এনজিও, মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার জেইদ রা’দ আল হুসেইন ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের উদ্বেগ উৎকণ্ঠাও তুলে ধরা হয়েছে।

সংস্থাটি একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করে বিচার বহির্ভূত হত্যার ঘটনার তদন্তের আহবান জানিয়েছে । তারা বলছে এটি এই কারণে গুরুত্বপূর্ণ যে প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও সরকার র‍্যাব ও অন্যান্য বাহিনীকে জবাবদিহিতার আওতায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।
খবর বিবিসি বাংলা

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ