আজকের শিরোনাম :

কালবৈশাখী: ঢাকা ও রাজশাহীতে ৪ জনের প্রাণহানি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ মে ২০১৯, ০৯:৩৮

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় কালবৈশাখীতে রাজধানী ঢাকা ও রাজশাহীতে চারজন প্রাণ হারিয়েছেন। ইফতারের পরপরই রাজধানীতে তীব্র কালবৈশাখী বয়ে যায়। ঝড়ের বেগ ছিল ঘণ্টায় ৬৫-৯৩ কিলোমিটার।

ঝড়ে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের প্যান্ডেল লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। খুঁটির আঘাতে প্রাণ হারান এক মুসল্লি। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন। বাড্ডায় দেয়াল ধসে মারা গেছেন দুই পথচারী। রাজশাহীর পুঠিয়ায় ভবন থেকে ইট পড়ে নিহত হয়েছেন বিএনপির এক নেতা।

গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জ্বলজ্বলে রোদ ছিল রাজধানী ঢাকার আকাশে। সন্ধ্যায় মেঘমালার আনাগোনা শুরু হয়। নেমে আসে অন্ধকার। হঠাৎ বয়ে যায় ঝড়। সেই সঙ্গে ছিল বৃষ্টিও। অনেক দিন পর তপ্ত ঢাকাবাসী স্বস্তির পরশ পায় এই বৃষ্টিতে। তবে ঝড়ে প্রাণহানি ঘটে একজনের।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ঝড়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে মুসল্লিদের নামাজ পড়ার জন্য তৈরি করা প্যান্ডেল লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। এ সময় খুঁটির আঘাতে নামাজরত অবস্থায় শফিকুল ইসলাম (৩৬) নামের এক মুসল্লি প্রাণ হারান। তাঁর মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ছাড়া পুলিশসহ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন। বাড্ডায় দেয়াল ধসে নিহত দুজন হলেন বুলবুল ও তপন। এ ছাড়া ঝড়ে গাছপালা ভেঙে পড়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।

আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ করে।

পুলিশ ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে আছেন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সহকারী উপপরিদর্শক শরিফুল ইসলাম (৩৬), মুসল্লি রফিউজ্জামান (২৪), মনিরুল ইসলাম (৩০), আব্দুল কুদ্দুস (৩৪), জানে আলম (২২), সাদিকুর রহমান (২৭), তারেক রহমান (৩৫), মাসুদ (২৬), জহিরুল ইসলাম (২৮), সজীব (২৫), আওয়াল (২৮), বিপ্লব (২৪) ও আমিন উল্লাহ (২৬)।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান গতকাল রাত ৯টায় বলেন, ইফতারের পর সোয়া ৭টার দিকে ঝড় বয়ে যায়। উত্তরায় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ৯৩ কিলোমিটার। আগারগাঁওয়ে তা ছিল ৬৫ কিলোমিটার। সেই সঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। অবশ্য বৃষ্টিপাত বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।

রাজশাহীতে বিকেল ৫টার দিকে কালবৈশাখী বয়ে যায়। পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর এলাকায় ঝড়ের সময় ভবন থেকে ইট পড়লে মাথায় আঘাত পেয়ে প্রাণ হারান স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সোবহান সরকার (৬৫)। তিনি বানেশ্বর ইউনিয়ন শাখা বিএনপির সভাপতি এবং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।

জানা গেছে, জেলা শহর ও ৯টি উপজেলায় ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। ঝড়ে আমসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বিশেষ করে ব্যাপক হারে আম ঝরে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।

পুঠিয়া থানার ওসি সাকিল আহমেদ জানান, সোবহান সরকার বানেশ্বর বাজারে তাঁর  আড়তে বসে ছিলেন। ঝড়ের সময় একটি ইট খসে তাঁর মাথায় পড়ে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঝড়ে ক্যাম্পাসের প্যারিস রোডের দুই পাশের বড় বড় বেশ কয়েকটি গাছ ভেঙে সড়ক ও বৈদ্যুতিক খুঁটির ওপর পড়ে। এতে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে যাওয়ায় ক্যাম্পাসের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া মাদার বখশ্ হল, শহীদ জিয়াউর রহমান হল, শহীদ হবিবুর রহমান হলসহ বিভিন্ন হলের আশপাশের গাছ ও গাছের ডালপালা ভেঙে পড়ে। একটি গগন শিরীষগাছ উপড়ে গিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের প্রাচীরের ওপর পড়ে। এতে প্রাচীরের একাংশ ভেঙে যায়।

প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘ঝড়ের পর আমরা ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো পরিদর্শন করেছি। ভেঙে পড়া গাছগুলো দ্রুত রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য সংশ্লিষ্ট শাখাকে বলা হয়েছে।’

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ