আজকের শিরোনাম :

তাপস নিশ্বাস বায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:০২

‘তাপস নিশ্বাস বায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে, বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক এসো এসো’ - রবীন্দ্রনাথের চিরায়ত বৈশাখী গান দিয়ে্ই প্রতিবারের মতো এবারও রাজধানীতে ছায়ানটের শিল্পীরা বরণ করে নিয়েছে বাংলা নতুন সাল ১৪২৬। শুভ নববর্ষ।

অসাম্প্রদায়িক বাঙালি সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক উৎসব আজ পালিত হচ্ছে দেশজুড়ে।নতুনের রঙে সব বিভেদ ভুলে নতুন বছরকে জাতি বরণ করে নিচ্ছে আজ। নগরে কিংবা গ্রামে সর্বত্রই রয়েছে নতুন বছরকে বরণ করে নিতে দিনব্যাপী নানা উৎসব-আয়োজ। সূর্যের হাসি ছড়িয়ে পুরনো বছরের সব গ্লানি, অপ্রাপ্তি, বেদনা ভুলে নব আনন্দে জেগেছে বাঙালি জাতি।

‘অনাচারের বিরুদ্ধে জাগ্রত হোক শুভবোধ’ এই আহ্বান নিয়ে রমনার বটমূলে সাজানো ছায়ানটের বর্ষবরণের প্রভাতী আয়োজন শুরু হয়েছে রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ ভোর সোয়া ছটায়। নতুন বছরের প্রথম সূর্যোদয়কে স্বাগত জানানো হয় রাগালাপ দিয়ে। এরপরই ছিল প্রকৃতির স্নিগ্ধতা ও সৃষ্টির মাহাত্ম্য নিয়ে ভোরের সুরে বাঁধা গানের গুচ্ছ। পরের ভাগে আছে অনাচারকে প্রতিহত করা এবং অশুভকে জয় করার জাগরণী সুরবাণী, গান, পাঠ, আবৃত্তিতে দেশ-মানুষ-মনুষ্যত্বকে ভালবাসবার প্রত্যয়।

যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আগুনে ঝলসে প্রাণ হারানো নুসরাতের জন্য যখন ক্ষোভে ফুঁসছে দেশ, সে সময় এই বর্ষবরণের কর্মসূচিতে রয়েছে সব সামাজিক অনাচারের বিরুদ্ধে শুভবোধের জাগরণের আহ্বান। আর্থ-সামাজিক নানা সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি হলেও সাম্প্রদায়িকত সহিংসতা, সামাজিক বৈষম্য-অনাচার এখনও বড় সমস্যা। গেল সপ্তাহেই মারা গেছেন ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি, নিজের প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদ করায় তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

ওই ঘটনাসহ দেশজুড়ে নারী-শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদ ওঠে এসেছে পহেলা বৈশাখে ছায়ানটের আয়োজনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠেয় মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্যেও রয়েছে অশুভকে বিনাশ করে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা।

সংস্কৃতি সংগঠন ছায়ানটের শিক্ষার্থী-প্রাক্তনী-শিক্ষক নিয়ে, ছোট বড় মিলিয়ে এবারের অনুষ্ঠানে সম্মেলক গান পরিবেশন করছে প্রায় শ’খানেক শিল্পী। অনুষ্ঠানে থাকছে ১৩টি একক, ১৩টি সম্মেলক গান এবং ২টি আবৃত্তি।

বাংলা বছরের প্রথম দিবস উদযাপনের সবচেয়ে বড় পরিচয়ই হলো অসাম্প্রদায়িকতা। বিশ্বজুড়ে এমন লোকায়ত এবং জনমানুষ সম্পৃক্ত ক্যালেন্ডার খুব কম আছে বলেই বাংলা নতুন বছর বাঙালিকে শেকড় চেনায়। দিনটি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাংলা নববর্ষ বিশেষ উৎসাহের সঙ্গে পালিত হয়। ত্রিপুরায় বসবাসরত বাঙালিরাও এ উৎসব পালন করছে।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ