আজকের শিরোনাম :

রমনার বটমূলে বোমা হামলার দেড় যুগ, শুনানিতেই আটকা বিচার কার্য

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০১৯, ০১:৩৫

রাজধানীর রমনা বটমূলে ছায়ানটের নব বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার দেড় যুগেও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি এ ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলার। পাঁচ বছর আগে হত্যা মামলায় রায় হলেও হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যদণ্ড নিশ্চিতকরণ) ও আসামিদের আপিলের শুনানি এখনও শুরু হয়নি।

অন্যদিকে সাক্ষীর অভাবে ঝুলে আছে একই ঘটনায় দায়ের করা বিস্ফোরক আইনের মামলাটি। দফায় দফায় সমন পাঠানোর পর এ মামলার সাক্ষীদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলেও তাদের আদালতে উপস্থিত করছে না পুলিশ।

২০০১ সালে রমনার বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা হয়। এ ঘটনায় ১০ জন নিহত হন এবং অনেকে আহত হন। পরে এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার শুরু হয়। ঘটনার ১৩ বছর পর ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমিন মামলাটির রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে মুফতি আব্দুল হান্নান, মাওলানা আকবর হোসেন, মুফতি আব্দুল হাই, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মুফতি শফিকুর রহমান, মাওলানা আরিফ হাসান সুমন ও মাওলানা তাজউদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড সাজা দেওয়া হয়।

এছাড়াও মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির ওরফে আব্দুল হান্নান সাব্বির, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা আব্দুর রউফ ও শাহাদত উল্লাহ ওরফে জুয়েলকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়।

পরে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও অন্য সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল শুনানির জন্য আসে। তারপর এ মামলার বেঞ্চ পাল্টেছে কয়েকবার। এভাবেই গত পাঁচ বছর ধরে মামলাটি শুনানিতেই থেমে আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান রুবেল পূর্বপশ্চিমকে বলেন, ‘মামলাটি এখন বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ,এস,এম আব্দুল মোবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় রয়েছে। মামলাটি কার্যতালিকার ৩০ নম্বরে রয়েছে।’

হাইকোর্টের চলতি সেশনে এর শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা কম জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পরবর্তী সেশনে মামলাটি কার্যতালিকার শুরুর দিকে থাকবে।’

বিস্ফোরক আইনের মামলা প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু পূর্বপশ্চিমকে বলেন, ‘মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ দ্রুত করতে রাষ্ট্রপক্ষের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা আছে। আদালত দফায় দফায় সাক্ষীদের প্রতি সমন ও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে চলেছেন। কিন্তু সাক্ষীদের আদালতে হাজির করতে পারছে না পুলিশ।’ এ মামলায় গত পাঁচ বছরে ৮৪ জনের মধ্যে ২৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল বাংলা নব বর্ষবরণের দিন ভোরে রমনা বটমূলে ছায়ানটের অনুষ্ঠানস্থলে দুটি বোমা পুঁতে রাখা হয় এবং পরে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে তা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সকাল ৮টা ৫ মিনিটে একটি এবং ১০-১৫ মিনিট পর আরেকটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই নিরীহ সাত ব্যক্তি প্রাণ হারান এবং ২০-২৫ জন আহত হন। পরে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আরও তিনজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ ঘটনার দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন। এতে ১৪ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ