আজকের শিরোনাম :

পদ্মা সেতুতে বসল নবম স্প্যান

দৃশ্যমান হলো পদ্মা সেতুর ১৩৫০ মিটার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০১৯, ১০:২৫

পদ্মা সেতুতে বসানো হয়েছে নবম স্প্যান। শুক্রবার (২২ মার্চ) সকাল সোয়া ৮টার দিকে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যানটি বসানো হয়। এর মাধ্যমে বহুল কাঙ্ক্ষিত এই সেতুটির ১৩৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সকাল পৌনে ৯টার দিকে স্প্যানটি বসানোর কথা থাকলেও স্প্যান বহনকারী ক্রেনের তার (রোপ) ছিড়ে যাওয়ায় এবং নাব্যতা সমস্যার কারণে তা আর হয়ে উঠেনি।

বুধবার (২০ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় জাজিরা প্রান্তে পৌঁছায় স্প্যান বহনকারী ক্রেনটি। ওইদিন সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে যাত্রা শুরু করে স্প্যান বহনকারী ‘তিয়ান ই’ ক্রেনটি। ধুসর রংয়ের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটিকে নিয়ে তিন হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ক্রেন ‘তিয়ান ই’ আড়াই ঘণ্টায় জাজিরা প্রান্তে পৌঁছায়।

পদ্মা সেতুর প্রকৌশল সূত্র জানায়, সকাল ৫টা থেকেই স্প্যান বসানোর জন্য কার্যক্রম শুরু হয়।স্প্যান বহনকারী ভাসমান ক্রেনটিকে ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলারের পজিশন অনুযায়ী রাখা হয়। এরপর ক্রেনের সাহায্যে ধীরে ধীরে স্প্যানটিকে পিলারের বিয়াংয়ের ওপর বসানো হয়। স্প্যানটিকে সপ্তম স্প্যানের সঙ্গে জোড়া দেওয়ার কাজ শুরু করা হয়। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের চেষ্টায় সফলতার সঙ্গে এসব কাজ করা হয়। পুরোপুরি স্থায়ীভাবে বসতে আরও সময় লাগবে। জাজিরায় অষ্টম স্প্যান আর দৃশ্যমান এক হাজার ২০০ মিটার। মডিউল ৬ এর তৃতীয় স্প্যানটি বসানো হলো আজ (শুক্রবার)। পুরো পদ্মাসেতু এখন ১৩৫০ মিটার দৃশ্যমান।

সূত্র আরও জানায়, অ্যাংকরিং (নোঙর) সমস্যা ও নাব্যতা সংকটের কারণে একদিন পর স্প্যান বসানো যায়নি। এছাড়া দ্বিতীয় স্প্যানটিও বসাতে গিয়ে নাব্যতা সংকটের কারণে নির্ধারিত তারিখে বসানো যায়নি। স্প্যান বসানোর জন্য প্রস্তুত আছে ৩৩ নম্বর পিলারটিও। চলতি মাসের মধ্যে ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারের ওপর একটি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

জানা যায়, পদ্মা সেতুতে ৪২টি পিলারে স্প্যান বসানো হবে ৪১টি। নয়টি স্প্যান বসানো হয়েছে বাকি আছে ৩৩টি। ৪২টি পিলারের মধ্যে ২১টি পিলারের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন, বাকি ২১টি পিলারের কাজ চলছে। জাজিরায় সেতুর নয়টি (৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২) পিলারে আটটি স্প্যান ও মাওয়ায় দুটি (৪, ৫) পিলারে একটি স্প্যান অস্থায়ীভাবে বসানো হয়েছে।

২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে কাজ শুরু হয়েছিল পদ্মাসেতুর। সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ কোটি টাকা। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে চীনেরই আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতু। পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।

এর আগে জাজিরা প্রান্তে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর প্রথম স্প্যান, ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারের ওপর দ্বিতীয় স্প্যান, ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারের ওপর তৃতীয় স্প্যান, ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারের ওপর চতুর্থ স্প্যান, ২৯ জুন ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের ওপর পঞ্চম স্প্যান, ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি ৩৬ ও ৩৭ নম্বর পিলারের ওপর ষষ্ঠ স্প্যান ও সর্বশেষ গত ২০ ফেব্রুয়ারি ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারের ওপর সপ্তম স্প্যান বসানো হয়।

এছাড়া মাওয়া প্রান্তে ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর একমাত্র স্প্যানটি বসানো হয়। আর শুক্রবার জাজিরার নাওডোবায় বসানো হলো আরেকটি স্প্যান। এ নিয়ে পদ্মা সেতুতে মোট স্প্যান বসলো নয়টি।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ