আজকের শিরোনাম :

বাংলাদেশে বোয়িংয়ের ৭৩৭ ম্যাক্স-৮ ওঠা-নামায় নিষেধাজ্ঞা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০১৯, ১২:৪৫

ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনস ও লায়ন এয়ারের ম্যাক্স উড়োজাহাজের দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো এয়ারলাইনসকে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স-৮ মডেলের উড়োজাহাজ কেনা বা লিজের অনুমতি দেবে না বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এ সময় পর্যন্ত দেশের কোনো বিমানবন্দরে ম্যাক্স সিরিজের কোনো এয়ারক্রাফটকে অবতরণ ও উড্ডয়নে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বেবিচক।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বেবিচক পরিচালক (ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশন) উইং কমান্ডার চৌধুরী এম জিয়াউল কবির বলেন, বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজের সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার পর বিষয়টি নজরে রেখেই বেবিচক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে আকাশসীমায় ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজ নিষিদ্ধের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বেবিচক। বিধ্বস্ত এয়ারক্রাফট দুটির তদন্ত শেষে বেবিচক এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

জানা গেছে, বোয়িংয়ের সর্বাধুনিক ওই উড়োজাহাজ এ মুহূর্তে বাংলাদেশের কোনো বিমান পরিবহন সংস্থার বহরে না থাকলেও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সম্প্রতি ভাড়ায় একটি ৭৩৭ ম্যাক্স-৮ এনে ফ্লাইট পরিচালনা করার জন্য চুক্তি করেছে।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে দেশে প্রথমবারের মত বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ আনার ঘোষণা দেয় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ।

সেদিন জানানো হয়, লিজিং কোম্পানি এয়ারক্যাপের মাধ্যমে ১২ বছরের জন্য একটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ উড়োজাহাজ ভাড়া আনছে ইউএস-বাংলা। তবে সেজন্য কোনো সময়সীমা তারা তখন জানায়নি। 

ইউএস-বাংলার জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেছেন, এখনই তারা ওই চুক্তি বাতিলের কথা ভাবছেন না।

“এরই মধ্যে দুটো ঘটনা ঘটেছে। সেগুলো তদন্ত হচ্ছে। আমরা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ হলে সেটি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেব।”

কামরুল বলেন, তারা এয়ারক্যাপের সঙ্গে একটি এয়ারক্রাফট আনার জন্য চুক্তি সই করেছেন। বিভিন্ন দেশের অন্তত পাঁচ হাজার ম্যাক্সের অর্ডার রয়েছে বোয়িংয়ের হাতে। সেগুলো আপাতত স্থগিত করা হলেও বাতিল করা হয়নি।

বিশ্বের সর্বাধুনিক এয়ারক্রাফট হিসেবে আগামী বছর বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ যুক্ত হওয়ার কথা ছিল দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি একটি এয়ারলাইনসের বহরে। যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং ও নেদারল্যান্ডসভিত্তিক আন্তর্জাতিক এয়ারক্রাফট লিজিং কোম্পানি এয়ারক্যাপ মিলে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স সরবরাহ করার কথা থাকলেও এখন আর সেটি হচ্ছে না।

এয়ারক্যাপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও চিফ কমার্শিয়াল অফিসার ফিলিপ স্ক্রাগস, লিজিং কোম্পানির প্রতিনিধি সুতেশ সেলভারাতনাম, বোয়িং কোম্পানির ডিরেক্টর সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং আহসেন রাজপুতসহ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনন্সের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

রেগুলেটরি বডি বেবিচকের নিষেধাজ্ঞার ফলে ওই এয়ারলাইন্সের বহরে যুক্ত হচ্ছে না এয়ারক্রাফটি।

প্রসঙ্গত, খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে দুই দুর্ঘটনার পর ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ উড়োজাহাজের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ক’দিন ধরে একের পর এক বিভিন্ন এয়ারলাইনস বহরে থাকা ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ সিরিজের উড়োজাহাজ গ্রাউন্ডেড করেছে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুর, চীন, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, মঙ্গোলিয়া ও অস্ট্রেলিয়া রয়েছে। এ ছাড়া ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনস, ব্রিটিশ কেইম্যান এয়ারওয়েজ, সাউথ আফ্রিকার কোমএয়ার, ব্রাজিলের গোল এয়ারলাইনস, মেক্সিকোর অ্যারোমেক্সিকো ও আর্জেন্টিনার অ্যারোলিনেয়াস আর্জেন্টিনাস, নরওয়েজিয়ান এয়ার, টুই এয়ারওয়েজ, শেনজেন এয়ারলাইনস, এয়ার চায়না, চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইনস, চায়না সাউদার্ন, হাইনান এয়ারলাইনস, সাংহাই এয়ারলাইনস, জিংমেন এয়ারলাইনস, শ্যানডং এয়ারলাইনস, ওকে এয়ারওয়েজ, কুনমিং এয়ারলাইনস, গরুড় ইন্দোনেশিয়া, লায়ন এয়ার ও সিল্ক এয়ার তাদের বহরের বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজের সব ফ্লাইট স্থগিত করেছে। অসংখ্য এয়ারলাইনস বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স সিরিজের দেয়া অর্ডার বাতিল করতে শুরু করেছে।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ