আজকের শিরোনাম :

ক্যাপ্টেন আবিদের ওপরই দায় চাপালো নেপাল

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০১৯, ২০:১০

গত বছরের ১২ মার্চ নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস বাংলার বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার দায় আবারও বাংলাদেশের পাইলট আবিদ সুলতানের ওপর চাপানোর চেষ্টা করা হয়েছে নেপালের তরফ থেকে।

ভারতের নয়াদিল্লিভিত্তিক সংবাদ সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালের (এএনআই) এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার তদন্তে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছিল। সেই তদন্ত কমিশন গত রোববার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করেছে। প্রতিবেদনে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চলন্ত বিমানের ককপিটে বসেই সিগারেট খাচ্ছিলেন পাইলট।

ইউএস-বাংলার যে প্লেন বিধ্বস্ত হয়েছে তা পাইলট আবিদ সুলতানের ‘মানসিক হতাশা’র কারণেই ঘটেছে। নেপাল কর্তৃপক্ষ ওই ঘটনায় যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে এমন দাবি করা হয়েছে। সেইসঙ্গে পাইলটদের কর্মে যোগদানের আগেই শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

গত বছরের ১২ মার্চ প্লেনটি বিধ্বস্ত হলে ৫১ আরোহী নিহত হয়।

কাঠমান্ডু পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তদন্ত কমিটি রোববার ৪৩ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দেশটির পর্যটন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগে নেপাল কর্তৃপক্ষ পাইলট আবিদ সুলতানের মানসিক হতাশার বিষয়ে যে তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করেছিল, চূড়ান্ত রিপোর্টে তাতে বেশি পরিবর্তন হয়নি। তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে পাইলট ককপিটে যে কথা বলেছিলেন তার কিছু ডায়ালগ বাদ দেওয়া হয়েছে।

তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব বুদ্ধি সাগর লামিচেন বলেন, আগের প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে তার তেমন কোনো পরিবর্তন চূড়ান্ত প্রতিবেদনে হয়নি। শুধু পাইলটের ‘ব্যক্তিগত কিছু বিষয়’ চূড়ান্ত প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। 

‘আসল কারণ থেকে আমরা বিচ্যুত হয়নি’ বলেন তিনি। 

প্রতিবেদনে তদন্ত কমিশন সুপারিশ করে বলেছে, সকল পাইলটের কর্মে যোগ দেওয়ার আগেই শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি মানসিক অবস্থার মূল্যায়ন করা দরকার। 

এর আগের প্রতিবেদনে নেপাল কর্তৃপক্ষ বলে, পাইলট আবিদ সুলতান দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক হতাশায় ভুগছিলেন। এমনকি কো-পাইলটদের সঙ্গেও ভালোভাবে কথাবার্তা হয়নি। 

এ ছাড়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে পাইলট আবিদ সুলতানের ধূমপানের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, হতাশা থেকেই পাইলট টাকা থেকে কাঠমান্ডুর এক ঘণ্টার যাত্রায় অনবরত ধূমপান করেছেন, যা বিধি অনুযায়ী নিষিদ্ধ। 

প্রতিবেদনে বিমানে ধূমপানের ব্যাপারে কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলা হয়েছে, এ জন্য এমন ব্যবস্থা থাকা দরকার যাতে বিষয়টি মনিটর করা যায় এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া যায়। 

প্রসঙ্গত, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের ড্যাশ-৮ কিউ৪০০ মডেলের প্লেনটি গত বছরের ১২ মার্চ ৭১ জন আরোহী নিয়ে নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয়। এতে পাইলটসহ মোট ৫১ জন নিহত হয়। এর মধ্যে ২৭ জনই বাংলাদেশের। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনা তদন্তে নেপাল সরকার ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। বাংলাদেশ থেকেও তদন্তে যুক্ত হয় ৬ সদস্যের একটি দল।

৩৩ বছর পর বাংলাদেশি কোনো প্লেনের এটাই সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা। 

এদিকে, ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনা নিয়ে নেপালি গণমাধ্যমে দেশটির তদন্ত প্রতিবেদনের ব্যাপারে খবর বেরিয়েছে সে সম্পর্কে ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

তবে জানানো হয়, প্রতিবেদনগুলো তাদের নজরে এসেছে এবং এ নিয়ে আজ (সোমবার) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত কথা হবে।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ