আজকের শিরোনাম :

ওয়েলস অ্যাসেম্বলিতে বাংলাদেশের উন্নয়ন শীর্ষক আলোচনা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০১৯, ১১:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান স্টাডি সার্কেলের আয়োজনে কার্ডিফের ওয়েলস অ্যাসেম্বলিতে ‘বাংলাদেশ : এ গোল্ডেন জার্নি টু ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

শুক্রবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক বার্তায় এ কথা বলা হয়।

গত মঙ্গলবার ওয়েলস এসেম্বলির হেলথ এন্ড সোশ্যাল সার্ভিসের ডেপুটি মিনিস্টার জুলি মরগানের সহযোগিতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ওয়েলস এসেম্বলির ১০ জন মেম্বারসহ ব্রিটিশ-বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, উন্নয়নকর্মী ও কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই তরুণ রাজনীতিবিদ মাসুদা আলী উপস্থিত অ্যাসেম্বলি মেম্বারদের পরিচয় করিয়ে মঞ্চে ডেকে নেন।

হেলথ অ্যান্ড সোশ্যাল সার্ভিসের ডেপুটি মিনিস্টার জুলি মরগানের স্বাগত বক্তব্যর পরেই স্টাডি সার্কেলের চেয়ারপার্সন সৈয়দ মোজাম্মেল আলীর সভাপতিত্বে পরিচালিত হয় আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব।

আলোচনায় বক্তব্য রাখেন- ওয়েলস এসেম্বলির ডেপুটি মিনিস্টার ও চিফ হুইফ জেন হাট, এসেম্বলি মেম্বার ফর কার্ডিফ সেন্ট্রাল ডেপুটি মিনিস্টার জেনি রাথবন, এসেম্বলি মেম্বার ফর সাউথ ওয়েলস ইস্ট মোহাম্মদ আসগার, যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম, বিচারপতি সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, কাউন্সিলর কেভিন, স্টাডি সার্কেলের গবেষক সাজিয়া স্নিগ্ধা, আনসার আহমেদ উল্লাহ প্রমুখ।

ওয়েলস অ্যাসেম্বলির ডেপুটি মিনিস্টার ও চিফ হুইফ জেন হাট বাংলাদেশের তিনটি বিষয়ে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ বিস্তারিতভাবে জানতে চান এনং জলবায়ু পরিবর্তন, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার ও স্যানিটেসন এবং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারি ব্যবস্থার ওপর আলোকপাত করেন।

ডেপুটি মিনিস্টার জেনি রাথবন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা উল্লেখ করে সেখানকার পরিবেশ দূষণ রোধে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে আরও কার্যকর হওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন তিনি।

অ্যাসেম্বলি মেম্বার ফর সাউথ ওয়েলস ইস্ট মোহাম্মদ আসগার বলেন, ‘বাংলাদেশ শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়নি ব্রিটেনেও বিপুল পরিমাণ খাদ্য রফতানি করছে।’

যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য নজির স্থাপন করেছে।’

সম্প্রতি বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের উন্নয়নকে ‘গোল্ডেন ডেভেলপমেন্ট’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রচুর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

কাউন্সিলর কেভিন বলেন, ‘উন্নয়ন বিশেষ করে দ্রুত ও অব্যাহত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং অবকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই অনেক দেশের রোল মডেল হয়ে উঠেছে।’

শিক্ষাবিদ স্তেফেনি মিয়া বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং নারী পুরুষের সমতায় বাংলাদেশ নিঃসন্দেহে ঈর্ষণীয় পর্যায়ে রয়েছে।

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বাংলাদেশে গত ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং জনসাধারণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের চিত্র উপস্থাপন করেন।

সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ মোজাম্মেল আলী বলেন, ‘গত ১০ বছরে বাংলাদেশে ব্যপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এমন কোনো বিভাগ, এলাকা, অঞ্চল ও শহর নেই যেখানে উন্নয়নে ছোঁয়া পৌঁছায়নি। মানুষের জীবনযাত্রার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু বিদেশী এবং প্রবাসীদের কাছে সে উন্নয়ন বার্তা সঠিকভাবে পৌঁছায়নি। আর সে কাজটিই স্টাডি সার্কেল শুরু করেছে। প্রবাসীদের এবং আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রের কাছে তুলে ধরছে স্টাডি সার্কেল।’

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপিসহ ওয়েলস অ্যাসেম্বলির সদস্যদের কাছে বাংলাদেশের প্রতিটি খাতের উন্নয়ন চিত্র নিয়ে স্টাডি সার্কেলের প্রকাশনা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ওয়েলস এসেম্বলিতে আয়োজনের মাধম্যে ওয়েলস পার্লামেন্টের সদস্যদের কাছে বাংলাদেশ নিয়ে তাদের ভাবনা এবং প্রশ্ন জানার জন্য এ আয়োজন করা হয়েছে।

সাংবাদিক আনসার আহমেদ উল্লাহ স্টাডি সার্কেলের কার্যক্রম তুলে ধরার পাশাপাশি প্রবাসে থাকা উচ্চশিক্ষিত সকল বাংলাদেশীদের দেশের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

স্টাডি সার্কেলের গবেষক সাজিয়া স্নিগ্ধা রাষ্ট্র পরিচালনায় সুশাসনের গুরুত্ব এবং বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন।

এ অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, হেলথ মিনিস্টার ভঘান গেথিং, ডেপুটি মিনিস্টার ডইফর ম্যারিওনড, শিক্ষাবিদ গ্লেন ব্রেনাম, শিক্ষাবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব-জালাল উদ্দিন, আব্দুল আহাদ চৌধুরী, নাজিম করিম, শামিম আহমেদ, ইয়াদিয়া জামান, মিসবা সাদাত, ওয়াসিমুজ্জামান, মাসুম, আনোয়ার আলী, শেখ মোহাম্মদ তাহির উল্লাহ ও সাংবাদিক মকিস মনসুর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খবর বাসস

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ