আজকের শিরোনাম :

নতুন সরকারের প্রতি ওআইসি দেশগুলোর পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯, ১২:১০

ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সব দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নবনির্বাচিত সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে এবং আগামী দিনগুলোয় প্রতিটি ক্ষেত্রে এ সরকারের সাফল্য কামনা করেছে।

বাংলাদেশে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতগণ প্রধানমন্ত্রীকে তার দলের নির্বাচনী বিজয় এবং টানা তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার নবগঠিত সরকারকে শুভেচ্ছো জানাতে ওআইসিভুক্ত দেশের রাষ্ট্রদূতদের ১৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রবিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আসেন।

প্রতিনিধিদ লের নেতৃত্ব দানকারী ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বলেন, ‘আমরা সকল মুসলিম দেশের রাষ্ট্রদূতগণ একত্রে গণভবনে এসে আপনার অবিস্মরণীয় বিজয়ে আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) শুভেচ্ছা জানাতে পারায় গভীর সম্মানিত বোধ করছি।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের শক্তি আসলে সমগ্র মুসলিম উম্মাহর শক্তিকেই চিহ্নিত করে। কাজেই আপনাকে সবরকমের সহযোগিতা প্রদান করা একটি মুসলিম দেশ হিসেবে এটা আমাদের প্রত্যেকের এবং সম্মিলিত দায়িত্ব-কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে।’

কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), মিশর, ইন্দোনেশিয়া, আফগানিস্তান, তুরষ্ক, কুয়েত, মরক্কো, মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত এবং ইরাক, ওমান, পাকিস্তান এবং সৌদি আরবের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সরা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

রাষ্ট্রদূতরা তাদের বক্তৃতায় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়কে শেখ হাসিনার প্রতি জনগণের বিশ্বাস এবং আস্থার প্রতিফলন বলেই উল্লেখ করেন।

তারা বলেন, ‘গত ১০ বছরে আপনি যে কঠোর পরিশ্রম করেছেন তারই ফলশ্রুতিতে এ বিজয়।’

তাদের মতে, বাংলাদেশের জনগণ উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছে এবং তারা আগামীতে আরও উন্নত নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রত্যাশী।

ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ তাদের দেশকে সেরা হিসেবে পেতে চায়, দেশের অগ্রগতি চায়। আপনার পিতা বঙ্গবন্ধু এ দেশকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেতেন তারা সেই লক্ষ্য অর্জন করতে চায়।’

রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ বুঝেছে যে, আমরা তাদের জন্যই কাজ করি। আর তাই তারা আমাদের ভোট দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের জনগণের জীবনমানের উন্নয়নই আমার লক্ষ্য, যাতে তারা খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসাসেবা এবং শিক্ষাসহ সকল মৌলিক সুবিধাগুলো পেতে পারে। এর জন্যই আমি অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি।’

রাষ্ট্রদূতদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা তার সরকারকে অব্যাহত সহযোগিতার জন্য ওআইসিভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি রাষ্ট্রদূতদের এবং ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর বিভিন্ন নেতাদের কাছ থেকে সবসময় সহযোপিতা পেয়ে এসেছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘আপনাদের সহযোগিতাই আমাকে আমার জনগণের জন্য বেশি বেশি কাজের শক্তি জোগায়, যাদের জন্য আমি আমার সমগ্র জীবনকে উৎসর্গ করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ অতীতে অনেক দুঃখ, কষ্ট সহ্য করেছে এবং তিনি তাদের উন্নত জীবন ব্যবস্থা প্রদানের মাধ্যমে এই দুর্দশা ঘোচাতে চান। দেশকে আগামী প্রজন্মের জন্য তৈরি করেও রেখে যেতে চান।

আর এ জন্যই দেশের জনগণ বিশেষ করে নারী এবং তরুণ প্রজন্ম আওয়ামী লীগকে ব্যাপকহারে ভোট প্রদান করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন স্বাগত বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. সাজ্জাদুল হাসান এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।

শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে তার সরকারের প্রতি ওআইসিভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি খুব গর্ব অনুভব করছি। কারণ ভাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশগুলোর প্রতিনিধিরা এখানে এসেছেন এবং আমাদের সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এ দেশকে স্বাধীন করে গেছেন। কিন্তু তার কাজ শেষ করে যেতে পারেননি। আমি সবসময়ই মনে করি এটা (ক্ষমতা) আমার পিতার স্বপ্ন পূরণের জন্য আমার কাছে একটা সুযোগ এবং সেটাই আমি সর্বান্তকরণে করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এটা জেনে খুব খুশী হবে যে, সকল মুসলিম দেশ আমাদের সরকারকে সমর্থন করছে এবং আমরা একযোগে কাজ করব সমগ্র বিশ্বের মুসলিম ভাইদের অগ্রগতির জন্য।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ এবং প্রত্যেকে শান্তিতে তাঁদের নিজ নিজ ধর্ম-কর্ম পালন করতে পারে। তিনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।
খবর বাসস

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ