আজকের শিরোনাম :

রমজানে গণপরিবহনে যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে: জরিপ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ মে ২০১৮, ১৮:২৮

ঢাকা, ২৬ মে, এবিনিউজ : পবিত্র রমজানের শুরু থেকে পরিবর্তিত অফিস সময় অনুযায়ী গণপরিবহনে নগরীর যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

সমিতির পক্ষ থেকে আরো বলা হয়েছে, এসব বাস সরকার নির্ধারিত ভাড়ার পরিবর্তে কোম্পানি কর্তৃক নির্ধারিত অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। এতে নিম্ন আয়ের লোকজনের চলাচল দূর্বিসহ হয়ে উঠেছে।

অন্যদিকে নগরীতে চলাচলকারী সিএনজি অটোরিক্সার ৯৪ শতাংশ চুক্তিতে চলাচল করছে। ৯৮ শতাংশ অটোরিক্সা মিটারের অতিরিক্ত ভাড়া বা বকশিস দাবী করছে। আগে ১০ টাকা বকশিস চাইলেও রমজানে ৩০/৫০ টাকা বকশিস দাবী করা হচ্ছে। যাত্রীদের পছন্দের গন্তব্যে যেতে রাজি হয়না ৯০ শতাংশ অটোরিক্সা। অনেকটা কাকতালিয় ভাবে ড্রাইভারের পছন্দের গন্তব্যে মিলে গেলে রাজি হয় যাত্রীর গন্তব্যে যেতে।

আজ শনিবার সমিতির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই অভিযোগ করা হয়।

এতে বলা হয়, রমজানে সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১১টা, দুপুর ২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নগরীতে চলাচলকারী বাস-মিনিবাসের প্রায় ৯৬ শতাংশ সিটিং সার্ভিসের নামে দরজা বন্ধ করে চলাচল করছে। এতে নগরীর মাঝপথের যাত্রী সাধারণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

এদিকে শনির আখড়া, গুলিস্তান, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ি, পোস্তগোলা, শাহবাগ, ফার্মগেইট, মিরপুর-১০, মহাখালী, আগারগাঁও, ধানমন্ডি, বনানী, বারিধারাসহ নগরীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকার রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও ট্যাক্সি ক্যাবের দেখা মেলেনা। এতে পাঠাও, উবারসহ অ্যাপস ভিক্তিক পরিবহনগুলো অসহায় যাত্রীদের কিছুটা স্বস্তি দিতে পাশে দাঁড়াচ্ছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক যাত্রী ছাউনি না থাকায় বা যাত্রী ছাউনিগুলো বেদখলে থাকায় বৃষ্টিতে নাজুক পরিস্থিতিতে পড়ছে নগরীর যাত্রী সাধারণ, বিশেষত নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ রোগীরা এহেন পরিস্থিতিতে ভয়াবহ অবস্থার মুখোমুখি হচ্ছে।

চলতি রমজানে নগরীতে যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি নিয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিচালিত এক জরিপে এই চিত্র উঠে এসেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

এতে আরো অভিযোগ করা হয়েছে, যাত্রী সাধারণের অফিস যাত্রা এবং অফিস ছুটি শেষে ইফতারকে কেন্দ্র করে ঘরমুখো যাত্রাকে টার্গেট করে নগরীতে চলাচলকারী বেসরকারি বাসের সবকটি এখন রাতারাতি সিটিং সার্ভিস বনে গেছে। এসব বাস বিশেষত ইফতারের সময় যাত্রীদের ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দ্রুত গন্তব্যে যাত্রা করছে। এক মাত্র বিআরটিসি বাস ও হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানির বাস মাঝপথের যাত্রীদের বাদুরঝোলা হয়ে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির গণপরিবহনের ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ উপ-কমিটির ৫টি টিম গত ৬ দিন যাবৎ নগরীতে উল্লেখিত স্পটগুলোতে রমজান মাসে যাত্রী ভোগান্তি ও ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ করে। পর্যবেক্ষণকালে ৩১০টি বাস ও ৫৫৭ জন বাসযাত্রী, ২১৪টি অটোরিক্সা ১৮৫ জন অটোরিক্সার যাত্রী, ৫৬ জন ট্যাক্সিক্যাব যাত্রীর সাথে কথা বলে এই জরিপ পরিচালনা করে।

পর্যবেক্ষণকালে ৮২ শতাংশ যাত্রী রমজানে গণপরিবহন ব্যবস্থার এহেন কর্মকান্ডের উপর তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ৯২ শতাংশ যাত্রী প্রতিদিন যাতায়াতে দূর্ভোগের শিকার হন। ৯৮ শতাংশ যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের শিকার হন। ৬২ শতাংশ যাত্রী চলন্ত বাসে উঠানামা করতে বাধ্য হন। সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও ২৮ শতাংশ যাত্রী দাঁড়িয়ে যেতে বাধ্য হন। হয়রানির শিকার হলেও অভিযোগ কোথায় করতে হয় জানেনা ৯৩ শতাংশ যাত্রী তবে ৮৮ শতাংশ যাত্রী মনে করেন অভিযোগ করে কোন প্রতিকার পাওয়া যায়না বলেই কেউ অভিযোগ করেন না।

যাত্রী ভোগান্তির এসব চিত্র জাতীয় দৈনিক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে বলে সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযোগ করা হয়েছে, ভোগান্তি নিরসনে মালিক সমিতি বা সংশ্লিষ্ট কোনো সরকারি ও বেসরকারি কর্তৃপক্ষের তৎপরতা এসময়ে লক্ষ্য করা যায়নি।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ