আজকের শিরোনাম :

তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০১৮, ২১:৪২

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ সংকল্প ব্যক্ত করে বলেছেন, বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি’র পলাতক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এসে বিচারের সম্মুখীন করা হবে। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ যদি দিন দেয় ঐ সাজাপ্রাপ্ত আসামী ধরে নিয়ে এসে বাংলাদেশে তার বিচারের রায় কার্যকর করবো।’

তিনি তারেক রহমানকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এবং দুর্নীতির মূল হোতা আখ্যায়িত করে বলেন, ‘এটা রাজনীতি নয়, লন্ডনে বসে বসে লাটাই ঘোরায়, যে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে তাকে আর খেলতে দেব না।’

শেখ হাসিনা আজ বিকেলে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন।

এরআগে শেখ হাসিনা সকালে ওলি-আউলিয়াদের পুণ্যভূমি সিলেটে এসেই হযরত শাহজালাল (র:), হযরত শাহ পরাণ (র:) এবং হযরত গাজী বোরহান উদ্দিন (র:) এর মাজার জিয়ারত করেন এবং সেখানে কোরআন তেলাওয়াত, ফাতেহা পাঠ করেন এবং মোনাজাতে অংশ গ্রহণ করেন।

আদালত এ বছর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে আইভী রহমানসহ ২৪ জনকে হত্যা এবং ৫শ’ মানুষকে আহত করার ঘটনার মূলহোতা হিসেবে তাকে রহমানকে অভিযুক্ত করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করে। এছাড়া হাইকোর্ট তাকে অপর একটি দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেছে।
২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে তারেক জিয়া। মানুষ খুন করার অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত, মানি লন্ডারিংয়ের জন্য সাজাপ্রাপ্ত, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারের অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত আসামী আজকে ফেরারি হয়ে বিদেশের মাটিতে বসে দেশের ভেতরে ষড়যন্ত্র করছে।’

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফর রহমান সভাপতিত্বে সমাবেশে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, তথ্য এবং গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও কল্যাণ সম্পাদক সুজীত রায় নন্দী, আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফরুক চৌধুরী, সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ড. একে আব্দুল মোমেন অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন।

নির্বাচনে বিএনপি’র বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারা এক একটি আসনে ৪ থেকে ৫ জন করে মনোনয়ন দিয়েছে। একেকটা সীট অকশনে দিয়েছে। যে যত টাকা দেবে সে মনোনয়ন পাবে। আর এই অকশনে দিতে গিয়ে আজকে তাদের ছেড়াবেড়া অবস্থা। আর কেউ তাদের বিশ্বাস করে না। ‘বিএনপি’র মনোনয়ন নিয়ে ছেড়াবেড়া অবস্থার প্রেক্ষিতে এনাম সাহেব (সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এনাম আহমেদ চৌধুরী) আজকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন, আমি তাঁকে স্বাগত জানাই’, -বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী এনাম আহমেদ চৌধুরীর ভাষ্য উদ্ধৃত করে মনোনয়ন বাণিজ্যের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘তিনি বলেছেন- এক একজনের কাছে টাকা চায়, দিতে না পারলে নমিনেশন নাই। দিতে পারলে নমিনেশন আছে। একজন যদি ১ কোটি দেয় তবে, আরেক জন ২ কোটি দেয়, একজন ২ কোটি দেয় তবে, আর একজন দেয় ৫ কোটি টাকা। কেউ যদি ৫ কোটির জায়গায় সাড়ে ৫ কোটি দেয় তাহলে পাঁচ কোটি বাদ, সাড়ে ৫ কোটি এস। এইভাবে তারা অকশন দিয়েছে।’ এটা কি ধরনের রাজনীতি- জনগণের কাছে প্রশ্ন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

তিনি বলেন, বিএনপি- জামাত জোট বাঙালি জাতির মান সম্মান ভূলুন্ঠিত করেছিল। হত্যা, খুন, অগ্নি সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি- এটাই ছিল তাদের নীতি। রাতারাতি তারা আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে।
তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশকে বিশ্বে জঙ্গিবাদের দেশ, সন্ত্রাসের দেশ, দুর্নীতির দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচয় করিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের মান সম্মান, ইজ্জত সব শেষ করে দিয়েছিল। আর তাদের অপকর্ম জন্যই ২০০৬ সালে দেশে জরুরি অবস্থা আসে। বাংলাদেশের মানুষের সব অধিকার হারিয়ে যায়।

এরপর জনগণ বহু সংগ্রাম করে সেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে এবং ২০০৮ সালে নৌকা মার্কায় জনগণ ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে বর্তমান ২০১৮ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে সরকারে রয়েছে কিন্তু ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে অগ্নিসন্ত্রাস করে জীবন্ত মানুষগুলোকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল বিএনপি-জামাত জোট।
‘তারা মানুষ পোড়ানো, খুন করা, মানি লন্ডারিং, অস্ত্র চোরকারবারি, দুর্নীতি-এছাড়া আর কিছু জানে না। তার ওপর এতিমের অর্থ আত্মস্যাৎ করে তাদের নেত্রী খালেদা জিয়া এখন জেলে,’ -অভিযোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা আওয়ামী লীগ সরকার নয় বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তার আস্থাভাজন এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব যাদেরকে তিনি (খালেদা জিয়া) নিয়ম-নীতি ভঙ্গ করে চাকরিতে পদোন্নতি দিয়েছিলেন, নিয়োগ দিয়েছিলেন, পদের দায়িত্বের জন্য নির্বাচিত করেছিলেন- (রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ফখরুদ্দিন এবং সেনাপ্রধান মঈনউদ্দিন) তারাই দায়ের করেছে। সেই মামলা ১০টি বছর আদালতে চলার পর আজকে খালেদা জিয়া জেলে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পদ্মা সেতু নিজেদের অর্থে নির্মাণের এই একটা সিদ্ধান্তই বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে অনেক উচ্চ আসনে নিয়ে গেছে। সেই উচ্চ আসনটা ধরে রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, এই বাংলাদেশ সারাবিশ্বে যে সম্মান অর্জন করেছে এই সম্মান নিয়ে এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশের মানুষ আজকে বিদেশে গেলে সম্মান পায়। সেই সম্মান নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। সে জন্য আগামী নির্বাচনে তিনি নৌকা ভোট প্রদানের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সিলেটবাসীর বাছে আমি আজকে আবার এসেছি। আমি নৌকা মার্কায় ভোট চাই, নৌকায় ভোট দিয়ে আমাদের প্রার্থীকে জয়যুক্ত করবেন।’

তিনি এসময় দেশের আর্থসমাজিক উন্নয়নের চিত্র তথা দারিদ্র্যের হার ৪০ থেকে ২১ ভাগে নামিয়ে আনা এবং প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮৬ ভাগে উন্নীত করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ আজকে বিশ্বে অর্থনৈতিকভাবে একটা মর্যাদা পেয়েছে। বিএনপি আমলের ৬১ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে আমরা ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছি এবং বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়ন হচ্ছে, যে উন্নতির ছোঁয়া সিলেটেও লেগেছে।

তিনি সিলেটের উন্নয়র চিত্র তুলে ধরে বলেন, সিলেট বিভাগে আমরা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিয়েছি ‘শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল’ নামে। যেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হবে। অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

তিনি প্রবাসী বাংলাদেশীদের তাঁর সরকারের বাস্তবায়নাধীন সিলেটসহ সারাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে তাঁদের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য বিশেষ সুযোগ সৃষ্টির কথাও উল্লেখ করেন।
চা-শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, বিশেষ বরাদ্দ প্রদান ও ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি এবং চা’য়ের নিলাম চট্টগ্রাম থেকে সিলেট বিভাগে করে দেয়ায় তাঁর সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করেন।

সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য পুল, ব্রিজ, রাস্তা-ঘাট তাঁর সরকার ব্যাপকভাবে করে দিচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই সিলেটে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেয়া হয়েছে। সিলেট, মৌলভিবাজার, সুনাগগঞ্জ এবং হবিগঞ্জে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে তাঁর সরকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ঢাকা-সিলেট চারলেনের হাইওয়ে নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে এবং ৯৬’ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের করে যাওয়া সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে আরো উন্নত করায় এখান থেকে এখন সরাসরি লন্ডনের ফ্লাইন পরিচালিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, সিলেটকে আমরা বিভাগ করেছি এবং একটি বিভাগীয় শহরের যে অবকাঠামো দরকার তা আমরা নির্মাণ করছি। টাঙ্গুয়ার হাওড়ে পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণ করছি।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আধুনিকায়নে তাঁর সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, ২টি ড্রীম লাইনারসহ ৬টি নতুন বিমান এবং আরো ৫টি বিমান ক্রয়ের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সিলেটের জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, সকলের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা, উন্নত পয়ঃনিষ্কাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা, নতুন রেলস্টেশন নির্মাণ, আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণেও তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি সৌদি সরকারের অর্থায়নে দেশবাপী ৫৬০টি মডেল মসজিদ কাম ইসলামিক সেন্টার গড়ে তোলার কথাও উল্লেখ করেন।

২ কোটি শিক্ষার্খীকে বৃত্তি, উপবৃত্তি প্রদান, কর্মসংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে উদ্যোক্তা তৈরিতে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত বিনা জামানতে ঋণ প্রদান, সারাদেশে ইন্টারনেট সার্ভিস চালু, বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দেয়ায় সকলের হাতে হাতে মোবাইল ফোন এবং ডিজিটাল ডিভাইস, হাইটেক পার্ক এবং সারাদেশে ডিজিটাল সেন্টার চালু, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ, প্রায় ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ এবং জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় সামাজিক নিরাপত্তাবলয় সৃষ্টিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন।
আজকে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে প্রতিটি এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে তাঁর সরকার। আগামীতে প্রত্যেক ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বালানোই তাঁর সরকারের লক্ষ্য বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি এ সময় শুধু নৌকা নয় মহাজোটের প্রার্থীদেরকের ভোট দিয়ে বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী সিলেট বিভাগের আওয়ামী লীগ এবং মহাজোটের সকল প্রার্থীর সঙ্গে জনগণের পরিচয় করিয়ে দেন।

পার্থীরা হচ্ছেন, সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি এবং অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের ছোট ভাই নৌকার প্রার্থী একে আব্দুল মোমেন, সিলেট-২ আসনে মহাজোট প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীকে মো. ইয়াহিয়া চৌধুরী, সিলেট-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী, সিলেট-৪ আসনে ইমরান আহমেদ, সিলেট-৫ আসনে হাফিজ আহমেদ মজুমদার, সিলেট-৬ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
সুনামগঞ্জে- সুনামগঞ্জ-১ আসনে নৌকা মার্কায় ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ-২ আসনে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্ত, সুনামগঞ্জ-৩ আসনে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জ-৪ মহাজোটের লাঙ্গল প্রতীকে প্রার্থী পীর ফজলুর রহমান মিজবাহ এবং সুনামগঞ্জ-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী মহিবুর রহমান মানিক।
হবিগঞ্জে- হবিগঞ্জ-১ আসনে নৌকার প্রার্থী প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ গাজীর ছেলে শাহনেওয়াজ গাজী মিল্লাত, হবিগঞ্জ-২ আব্দুল মজিদ খান, হবিগঞ্জ-৩ অ্যাডভোকেট আবু জাহিদ এবং হবিগঞ্জ-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী মাহবুব আলী।

মৌলভীবাজারে, মৌলভীবাজার-১ আসনে নৌকার প্রার্থী বিএনপি আমলে নির্যাতনের শিকার শাহাবুদ্দিন, মৌলভীবাজার-২ আসনে মহাজোট প্রার্থী (বিকল্প ধারা) এস এম শাহিন নৌকার প্রার্থী, মৌলভীবাজার-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী নেসার আহমেদ এবং মৌলভীবাজার-৪ আসনে উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন।

প্রধানমন্ত্রী হবিগঞ্জ-১ আসনের প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার সময় বলেন, এখানে একটি কথা না বললেই নয়, অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই হবিগঞ্জ-১ আসনে ধানের শীষ মার্কা নিয়ে যিনি দাঁড়িয়েছেন (রেজা কিবরিয়া) তার পিতার হত্যাকারী ঐ ধানের শীষ। যেখানে বিএনপি সাবেক অর্থমন্ত্রী আসম কিবরিয়া সাহেবকে হত্যা করেছে সেখানে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় তার ছেলে বিএনপি’র ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করছে। এর থেকে লজ্জার আর কিছু নেই।
আওয়ামী লীগ সভাপতি তাঁর দলের এবং মহাজোটের প্রার্থীদের জনগণের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে যেসব এলাকায় তিনি যেতে পারেন নি সেসব অঞ্চলের জনগণের কাছেও এসব প্রার্থীদের জন্য তাঁর ভোট প্রত্যাশার আবেদনটি পৌঁছে দেয়ার জন্য সমাবেশে সমবেতদের আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। কারণ, নৌকা মানেই উন্নয়ন। আর ধানের শীষ মার্কার মানে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, অগ্নিসন্ত্রাস। কাজেই ওরা যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে।
তিনি বলেন, আর স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদেরকে যারা মনোনয়ন দিয়েছে, যে যুদ্ধাপরাধীদেরকে বিচার করে আমরা শান্তি দিয়েছি। তাদেরকে আজকে তারা কাছে টেনে নিয়ে নির্বাচনে অংশীদার হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘এরা (বিএনপি-জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসা মানে দেশকে ধ্বংস করা। এরা দেশের সকল অর্জন নস্যাৎ করে দেবে কারণ এরা স্বাধীনতাতেই বিশ্বাস করে না।
তিনি এ সময় নৌকায় ভোট প্রদানের প্রতিশ্রুতি প্রত্যাশা করলে উপস্থিত হাজার হাজার জনতা দু’হাত তুলে তীব্র কণ্ঠে সম্মতি জানায়।

তিনি সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘ইনশাল্লাহ নৌকার বিজয় হবে। এই নৌকা মার্কাই বাংলাাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলবে।’

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করবো, ‘২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী, ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। আর ২০৭১ সালে স্বাধীনতার শতবার্ষিকী উদযাপন করবো, ২১০০ সালে ডেল্টা প্লান বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ বিশ্বের সবথেকে উন্নত দেশ হবে।’

‘সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতেই নৌকা মার্কায় ভোট প্রদান করতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ