আজকের শিরোনাম :

‘বিদেশী পর্যবেক্ষক নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে’

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ২০:৪১

নির্বাচনের সময় বিদেশী নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা যেন অবাধে এবং নিরাপদে যেন তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রস্তাব রেখেছিল বিরোধী জোট ঐক্যফ্রন্ট।

ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের বক্তব্য, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বিচারে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেন ঐক্যফ্রন্টের একজন কেন্দ্রীয় নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না।

মি. রহমান বলেন, "নির্বাচনের সময় আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা কাজ করলে নির্বাচন বিষয়ে নিরপেক্ষ প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।"

নির্বাচনের খবর প্রচার করা সংক্রান্ত নীতিমালার সমালোচনা করে মি. রহমান বলেন, "দেশে নির্বাচনের খবর সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে; তাদের কেন্দ্রের ভিতরে ছবি তুলতে নিষেধ করা হয়েছে।"

এছাড়া তথ্য ও প্রযুক্তি আইন বাস্তবায়ন করে দেশে একধরণের ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করা হয়েছে বলেও মনে করেন মি. মান্না।

মি. রহমান মন্তব্য করেন, এরকম পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরাই নির্ভয়ে নিরপেক্ষ খবর ও প্রতিবেদন প্রকাশ করতে সক্ষম হবেন; যা নির্বাচনকে নিরপেক্ষতা দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মি. রহমান বলেন, "শুধু ভোট গ্রহণের সময় কয়েকদিনের জন্য নয়, আমরা চেয়েছি পর্যবেক্ষকরা যেন নির্বাচনের কিছুদিন আগে আসেন এবং সার্বিক পরিস্থিতি ও পরিবেশের বিচারে পর্যবেক্ষণ কাজ পরিচালনা করেন।"

সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজও মনে করেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা নির্বাচনের সময়ে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করলে মানুষের মধ্যে অনিয়ম ও দূর্নীতির প্রবণতা হ্রাস পায়।

'বিদেশী পর্যবেক্ষকদের মতামত বেশি গুরুত্ব দেয় বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ'
তবে বিদেশী পর্যবেক্ষক থাকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক সাধারণ মানুষের কাছে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে যাওয়া - এমনটি মনে করেন বাংলাদেশি একটি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্স, ফেমা'র সভাপতি মুনিরা খান।

মিজ. খানের মতে নির্বাচন বিষয়ে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতামত সাধারণ মানুষের কাছে যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা পায়; স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের ক্ষেত্রে তেমনটা ঘটে না।

"স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা যেহেতু বাংলাদেশের নাগরিক, যতই নিরপেক্ষভাবে তাদের বাছাই করা হোক, কিছু না কিছু পক্ষপাত তাদের মধ্যে থাকতেই পারে", বলেন মিজ. খান।

কিন্তু আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের ক্ষেত্রে এই পক্ষপাতিত্বের সুযোগ থাকে না বলে তাদের মতামতের গ্রহণযোগ্যতাও বেশি হয় বলে মনে করেন মিজ. খান।

"আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের নির্বাচনকালীন এবং নির্বাচন পরবর্তী মতামত জানতে জনগণের আগ্রহ যেমন বেশি থাকে, তেমনভাবে তাদের পর্যবেক্ষণের ওপর নির্ভরতাও বেশি হয়ে থাকে।"

মিজ খান মনে করেন, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে ভোট গ্রহণের দিনের কিছুদিন আগে থেকেই তাদের পর্যবেক্ষণ কাজ চালাতে দেয়া উচিত।

"আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা যদি নির্বাচনের বেশ কিছুদিন আগে আসেন এবং নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কথা বলার সুযোগ পান, তখন তাদের পক্ষপাতী আচরণ করার সুযোগ থাকে না।"

২০০৮ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক উপস্থিত থাকলেও ২০১৪'র নির্বাচনে বিদেশী পর্যবেক্ষকের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা।

সুত্র : বিবিসি

এবিএন/রাজ্জাক/জসিম/এআর

এই বিভাগের আরো সংবাদ