আজকের শিরোনাম :

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আগামীকাল শুরু হওয়ার সম্ভাবনা কতোটুকু?

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০১৮, ১৮:৪৭

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোর আপত্তি সত্ত্বেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর কাজ চূড়ান্ত করে এনেছে বাংলাদেশ সরকার। গত বেশ কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে যে, বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কার্যক্রম শুরু করা হবে।

যদিও জাতিসংঘের তরফ থেকে বৃহস্পতিবার থেকে এই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর প্রক্রিয়া স্থগিতের আহ্বান জানানো হয়েছে। এজন্য ১৫০জন রোহিঙ্গা শরণার্থীর একটি প্রাথমিক তালিকা চূড়ান্ত করার কথাও জানায় তারা।

কিন্তু বৃহস্পতিবার আদৌ এই প্রত্যাবাসন কর্মসূচি শুরু হতে যাচ্ছে কিনা, অথবা কখন হচ্ছে এবং কোথা থেকে হচ্ছে এ বিষয়ে এখনও কিছুই নিশ্চিত করতে পারেনি তারা।

আজ দুপুরেও কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং পুনর্বাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালামের সাথে কথা হয় বিবিসি বাংলার। তিনি জানান যে, "এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না; সন্ধ্যা নাগাদ বলা যাবে এটা কাল থেকে শুরু হচ্ছে কিনা।"

এসময় কার্যালয়ে সরকারি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা এবং অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছিলেন কমিশনার মিস্টার কালাম।

উল্লেখ্য, এই বৈঠকগুলো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কর্মসূচি শুরু হওয়ার প্রস্তুতি হিসেবেই হচ্ছিল। কক্সবাজারের এই কার্যালয়টিতে ঢাকা থেকে আগত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তাকেও দেখা যায়।

মিস্টার কালাম বিবিসিকে জানান, তার দপ্তর ১৫০জন শরণার্থীর চূড়ান্ত তালিকা জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এর হাতে তুলে দিয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী, এই তালিকার প্রত্যেক সদস্যের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলে জানার কথা যে এরা সত্যি মিয়ানমারে ফিরে যেতে রাজী কিনা।

ইউএনএইচসিআর এর কক্সবাজারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, তারা গতকাল থেকে তালিকাভুক্ত শরণার্থীদের সাক্ষাতকার নিতে শুরু করেছে, যা আজও চলছে।

ইউএনএইচসিআর এর একজন মুখপাত্র জোসেফ ত্রিপুরা জানান, তারা এই সাক্ষাতকার গ্রহণ শেষে শরণার্থী পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসন কমিশনের কাছে একটি আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন হস্তান্তর করবে এবং নিয়মানুযায়ী এর পরেই প্রত্যাবাসন কর্মসূচি শুরু করা যাবে।

তবে আজই সেই প্রতিবেদন ইউএনএইচসিআর দিতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন মিস্টার ত্রিপুরা।

এদিকে সীমান্তের ঠিক কোন জায়গা দিয়ে শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন শুরু করা হবে সে বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তারা সুস্পষ্ট করে কিছু বলে নি।

তবে কক্সবাজারে নিযুক্ত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ- বিজিবির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, "প্রত্যাবাসন কর্মসূচিটি যদি কাল থেকে শুরু হয় তাহলে সেটা টেকনাফের ঘুমধুম সীমান্ত দিয়েই হবে।"

তিনি আরও জানান, সেখানে প্রত্যাবাসন কর্মসূচি শুরু হওয়ার সকল কর্মসূচি তারা শেষ করেছে। এরই মধ্যে সেখানে ট্রানজিট ক্যাম্প স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে।

এই ট্রানজিট ক্যাম্পেই তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করার জন্য প্রাথমিকভাবে নিয়ে যাওয়ার কথা কথা রয়েছে।

এই ট্রানজিট ক্যাম্পটি ঘুমধুম সীমান্তের শূন্য রেখা থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে রাবার বাগান নামক একটি স্থানে স্থাপন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

ট্রানজিট ক্যাম্পটিতে ৬০টি কামরা রয়েছে এবং কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন সেখানে ৩শ জন শরণার্থীর রাতে থাকার ব্যবস্থা আছে।

এদিকে এই প্রত্যাবাসন কর্মসূচি নিয়ে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে নানা ধরণের গুজব ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তালিকাভুক্ত যে ১৫০জন শরণার্থী রয়েছে, তাদের অনেকেই শরণার্থী শিবির থেকে প্রত্যাবাসন এড়াতে পালিয়ে যাচ্ছেন বলে তারা জানতে পেরেছে।

অবশ্য এই খবরটি বিবিসির পক্ষ থেকে নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। সূত্র: বিবিসি বাংলা। 

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ