রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমারকে চাপ দিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আহ্বান
প্রকাশ: ২০ মে ২০১৮, ২০:১৩ | আপডেট : ২০ মে ২০১৮, ২০:২৯
ঢাকা, ২০ মে, এবিনিউজ : স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে কমনওয়েলথ দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। তাদের স্বাস্থ্যসেবাসহ সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাদের তো আমরা বছরের পর বছর থাকতে দিতে পারি না। তাই কমনওয়েলথ দেশগুলোর প্রতি আমি আহ্বান জানাব, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে দ্রুত ফিরিয়ে নিতে সে দেশের সরকারের ওপর যেন চাপ সৃষ্টি করা হয়।’
আজ রবিবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভার একটি হোটেলে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর পক্ষে দেওয়া বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।
সভায় মোহাম্মদ নাসিম মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষের সুরক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের মানবিক সহায়তামূলক পদক্ষেপের বিভিন্ন বিষয়ে অবহিত করেন।
এসময় মোহাম্মদ নাসিম আশ্রিত রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক নির্দেশনা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ অন্যান্য দেশের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।
এ সভায় বিশ্বে অসংক্রমিত রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি, সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশের পক্ষে মোহাম্মদ নাসিম এসব বিষয়ে দেশের পরিস্থিতি ও অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন।
সভায় কমনওয়েলথের পক্ষ থেকে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মতো দক্ষিণ এশিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি উন্নয়নে নানা ধরনের দিকনির্দেশনা উপস্থাপনা করা হয়। বিশেষ করে কীভাবে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্যক্রমের তহবিল ব্যবস্থাপনা, আন্তঃদেশীয় সেবা পরিচালনা, অসংক্রমক রোগে মহামারি ঠেকানোর কৌশল নির্ধারণে কমনওয়েলথের সহযোগিতা গ্রহণ ও সমন্বয় সাধন, সাফল্য অর্জন, পারস্পরিক নেটওয়ার্ক তৈরি, উপকরণ ও স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রিক উদ্ভাবনী কার্যক্রম পরিসঞ্চালনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কর্মকৌশল নির্ধারণ করা হয়।
সভায় মোহাম্মদ নাসিম বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন ও অগ্রগতির নানা দিক তুলে ধরেন। একই সঙ্গে দেশে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে নেটওয়ার্ক জোরদার করা, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আরও পারস্পরিক সহযোগিতার তাগিদ দেন।
মন্ত্রী এ সময় সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে পরামর্শ দিয়ে বলেন, যেহেতু প্রতিটি নিম্ন ও নিম্নমধ্যম আয়ের দেশগুলোতে দরিদ্র জনগোষ্ঠির স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা খরচ চালানো বড় একটি সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে, অনেক মানুষই নিজের পকেটের টাকা দিয়ে প্রয়োজনীয় সব ধরনের চিকিৎসা করাতে সক্ষম নয়, তাই এমন দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে একীভূতভাবে কাজ করা দরকার।
তিনি বলেন, এক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে স্ব স্ব রাষ্ট্র স্বাস্থ্যবীমার পাশাপাশি বিভিন্ন উৎসে কর, তামাকজাত পণ্য থেকে আদায়কৃত করের মতো আয় বৃদ্ধি করে ওই টাকা স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্যক্রমের তহবিল গঠনে জোর দিলে দরিদ্র মানুষ এর সুফল পাবে। বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে এমন সব কর্মকৌশল নিয়ে কাজ শুরু করেছে। সেই সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুসারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী।
বিএন/জেডি