তরুণদের কাছে ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০১৮, ১০:৩৯ | আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০১৮, ১০:৪৮
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণ প্রজন্মকে দেশের সব থেকে বড় শক্তি আখ্যায়িত করে এবং তাদের কর্মসংস্থানে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় আগামীর নির্বাচনে তাদের ভোট চেয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের শাসনে গত দশ বছরে দেশের জনগণ অভূতপূর্ব উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছে। কাজেই আমাদের সব থেকে বড় শক্তি তরুণ প্রজন্মের কাছে আগামীর নির্বাচনের জন্য ভোট চাইব যাতে করে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতাটা বজায় থাকে।’
রবিবার অপরাহ্নে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়াধীন বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন।
তিনি চারটি জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত থেকে উপজেলা পর্যায়ের ৬৬টি শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম, ৬টি জেলার যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)-র সিনথেটিক টার্ফ সমৃদ্ধ মাল্টি স্পোর্টস কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন এবং স্থানীয় জনসাধারণ এবং উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আগামীর নির্বাচনে যদি বাংলাদেশের জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দেয় এবং আমরা যদি আবারো সরকার গঠন করে দেশের সেবা করতে পারি তাহলে আমি এটা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি-২০২০ সালের মধ্যে দেশে কোনো ক্ষুধা-দারিদ্র থাকবে না এবং দেশকে আমরা আরও উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাব।
প্রধানমন্ত্রী যুব সমাজের কাছে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন, আমাদের যুব সমাজ দেশের উন্নয়নে তাদের মেধা এবং মননকে কাজে লাগাবে এবং নতুন নতুন চিন্তা-ভাবনা করবে যেন এই দেশকে আরও দ্রুত কিভাবে উন্নত করে গড়ে তোলা যায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে দেশের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। সেই সঙ্গে আমরা ক্রীড়া এবং যুব উন্নয়কে সবসময় গুরুত্ব দেই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই জনগণের ভোট পেয়ে সরকার গঠন করেছে তখনই খেলাধূলাসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করেছে।
তিনি বলেন, তার সরকার একেবারে তৃণমূলের স্কুলপর্যায় থেকে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতার আয়োজন করে খেলোয়াড়দের বের করে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করে।
সেই সঙ্গে স্থানীয় এবং একেবারে দেশজ খেলাগুলো যেন হারিয়ে না যায় তারও উদ্যোগ গ্রহণ করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খেলাধুলা এবং শরীরচর্চায় আমাদের ছেলেমেয়েদের আমরা উৎসাহিত করছি।
তিনি বলেন, যতবেশি খেলাধূলা এবং সাংস্কৃতি চর্চায় আমাদের ছেলেমেয়েদের আমরা সম্পৃক্ত করতে পারবো ততবেশি তাদের চরিত্র অনমনীয়, দৃঢ় হবে। তাঁরা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে এবং মাদক, জঙ্গি- এ ধরনের কোনো বিপথে যাবে না।
তার সরকারের সময় ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, দাবাসহ বিভিন্ন খেলায় বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সার্ক অনূর্ধ্ব-১৫ এবং ১৮ ফুটবলে বাংলাদেশের নারীরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০১১ সালে বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দল ওয়ান ডে স্ট্যাটাস অর্জন করে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে। ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে, ইসলামিক সলিডারিটি গেম-২০১৭-তে শুটিং এর মিশ্র দ্বৈতে স্বর্ণ পদক এবং ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে রৌপ্য পদক লাভ করে, আর্চারিতে ২০১৭-তে ৬টি স্বর্ণ পদক এবং প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্রীড়ায় বাংলাদেশের প্রতিবন্ধীরাও সাফল্য লাভ করে।
তার সরকারের সময়ে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ, ওয়ার্ল্ড টি টোয়েন্টি ক্রিকেট, বঙ্গবন্ধু সার্ক ফুটবল, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল, সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন শীপ, পুরুষ এশিয়া কাপ হকি ২০১৭সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানেও বাংলাদেশের সাফল্যের উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ছেলেমেয়ে এবং প্রতিবন্ধীদের ক্রীড়া প্রতিভা বিকাশে সবরকমের সুযোগ সৃষ্টিতে সর্বদা চেষ্টা করে যাচ্ছে। সরকার চায় তরুণ প্রজন্ম যেন এই খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারে।
জাতীয় ক্রীড়ানীতির খসড়া ইতোমধ্যে প্রস্তুত হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকার ৬ এপ্রিলকে জাতীয় ক্রীড়া দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে।
বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)-কে সরকার বিভাগীয় পর্যায়েও সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, বলেন তিনি।
তিনি বলেন, খেলাধুলা মানোন্নয়নে প্রাকৃতিক বৈচিত্র তুলে ধরে এবং পরিবেশকে রক্ষা করে আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট ভেন্যু এবং বিভিন্ন স্টেডিয়াম তৈরি করায় তার সরকার সচেষ্ট রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশের ৬৪ জেলায় ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি চালু করায় সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তরুণ-যুব সমাজ নিজেদের কর্মসংস্থান নিজেরাই করে নিতে পারবে।
ভিডিও কনফারেন্সে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন সিকদার, ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় এবং বিকেএসপি’র মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আনিসুর রহমান বক্তৃতা করেন। মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল এ সময় গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন।
খবর বাসস এবিএন/সাদিক/জসিম
খবর বাসস এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ