আজকের শিরোনাম :

প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম ৩৫ থেকে ৫০ টাকা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০১৮, ২৩:৪১

ঢাকা, ২১ আগস্ট, এবিনিউজ : কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীরা ধারণা করছেন নির্বাচনী বছর হওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ২০ থেকে ২৫ লাখ পশু বেশি কোরবানি হবে। তারা বলছেন, গত বছর প্রায় এক কোটি পশু কোরবানি হলেও এবার তা এক কোটি ২৫ লাখ বা আরও বেশি হতে পারে। মঙ্গলবার রাজধানীর পশুর কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

তারা বলছেন, পশুর চামড়া কেনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী আড়ৎদাররা প্রস্তুত রয়েছেন। তবে কিছুটা আর্থিক সংকট রয়েছে তাদের।

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) সভাপতি হাজী মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আর কয় মাস পরই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তাই ভোটারদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অন্যবারের চেয়ে এবার ঈদে বেশি করে পশু কোরবানি দেবেন। অনেকে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি মাংস বিলি করবেন। সেই হিসাবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ২০ থেকে ২৫ লাখ পশু বেশি কোরবানি হবে আশা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, গরু-ছাগল ও অন্যান্য পশু মিলে গত বছর প্রায় এক কোটি পশু কোরবানি হয়েছিল। এবার হয়ত সোয়া কোটির বেশি পশু কোরবানি হবে। তাই এবার চামড়া বেশি সংগ্রহ করার প্রস্তুতি রয়েছে।

এবার কোরবানি ঈদে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে জানিয়ে মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের লক্ষ্য এবার কমপক্ষে ৭০ শতাংশ চামড়া সংগ্রহ করা। ট্যানারী মালিকেরা সাধারণত আমাদের কাছ থেকে চামড়া নেয়। তবে এর বাইরে তারাও প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ চামড়া সংগ্রহ করে থাকে।

সারাবছরের প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ চামড়াই সংগ্রহ করা হয় কোরবানির ঈদে। এ বছর আড়াই থেকে তিন হাজার কোটি টাকার কাঁচা চামড়া কেনাবেচা হতে পারে বলে ব্যবসায়ীদের ধারণা।

অর্থ সঙ্কটে তারা কিছুটা চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছেন উল্লেখ করে কাঁচা চামড়ার এ আড়তদার বলেন, ট্যানারি মালিকরা ব্যাংক ঋণের সুবিধা পায়। অথচ আমরা পাই না। তারপরও এখন পর্যন্ত ট্যানারির মালিকরা আমাদের বকেয়া টাকা পরিশোধ করেনি। কিন্তু এ সময়ে যদি অর্থের অভাবে চামড়া সংগ্রহ না করতে পারি, তাহলে চামড়া পাচার হয়ে যাবে।

এবার ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ৪৫ থেকে ৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা হবে। গত বছর প্রতি বর্গফুটের দাম ছিল ঢাকায় ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।

এছাড়া সারা দেশে খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৩ থেকে ১৫ টাকায় সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে ব্যবসায়ীদের। গতবার খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ২০ থেকে ২২ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৫ থেকে ১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

ট্যানারী মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে বছরে প্রায় ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ গরুর, ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ছাগলের, ২ দশমিক ২৫ শতাংশ মহিষের এবং ১ দশমিক ২ শতাংশ ভেড়ার চামড়া। তবে মোট চামড়ার অর্ধেকের বেশি আসে কোরবানির ঈদের সময়।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ১৬ লাখ। এর মধ্যে গরু ও মহিষ ৪৪ লাখ ৫৭ হাজার এবং ছাগল ও ভেড়ার সংখ্যা ৭১ লাখ। গত বছর গবাদিপশুর সংখ্যা ছিল প্রায় ১ কোটি ৪ লাখ ২২ হাজার। তবে এর বাইরেও প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক পশু অবৈধ পথে বাংলাদেশের প্রবেশ করে।

এবিএন/মাইকেল/জসিম/এমসি

এই বিভাগের আরো সংবাদ