আজকের শিরোনাম :

আয়মান সাদিককে হত্যার হুমকির তদন্তে পুলিশ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২০, ২১:৪৩

ইউটিউবার এবং অনলাইনে শিক্ষাদান কর্মসূচি পরিচালনা বিষয়ক পেইজ টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী আয়মান সাদিককে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। একই সাথে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে টেন মিনিট স্কুলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সাকিব বিন রশীদকেও।

এ বিষয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে এক ভিডিওতে আয়মান সাদিক বলেন, "ফেসবুক, ইউটিউবসহ অনেক জায়গায় আমাকে মেরে ফেলার জন্য বলা হচ্ছে। টেন মিনিট স্কুলের অনেক মানুষকে মেরে ফেলার জন্য বলা হচ্ছে। টেন মিনিটস স্কুলকে বয়কট করার জন্য বলা হচ্ছে।"

"ইনডিরেক্টলি না ডিরেক্টলি বলা হচ্ছে এই মুরতাদকে যেখানেই আপনারা পাবেন, তাকে জাহান্নামে পাঠিয়ে দিবেন এবং শত শত না হাজার হাজার মানুষ সেটা শেয়ার করছে।"

গত জুন মাসে টেন মিনিটস স্কুলের দুটি ভিডিও যেগুলো ঋতুস্রাব ও সম্মতির মতো বিষয়গুলো নিয়ে করা হয়েছিল সেই ভিডিও দুটি নিয়ে সমালোচনা করেন এক শ্রেণীর মানুষ। এই ভিডিও দুটি ইসলাম পরিপন্থী বলেও অভিযোগ তোলা হয়। সাথে বলা হয় যে, তারা সমকামিতাকে সমর্থন করেন।

"আমাকে বলা হচ্ছে আমি নব্য মিশনারি, আমি কাফিরদের এজেন্ট, আমি পশ্চিমা অপসংস্কৃতি প্রচার করার এজেন্ট," এক ভিডিও বার্তায় জানান মি. সাদিক।

এর জের ধরে চলতি মাসের শুরুতে অর্থাৎ দোসরা জুলাই টেন মিনিট স্কুলের ভেরিফায়েড পেইজ থেকে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আয়মান সাদিক এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেন।

সেখানে তিনি জানান, "ঋতুস্রাব ও সম্মতি নিয়ে করা ওই দুইটি ভিডিও অনেকের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার কারণে তারা দুঃখিত এবং ক্ষমা-প্রার্থী।"

সাথে ভিডিও দুটি তাদের সব প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলেও জানান।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, "ওই দুটি ভিডিওর উদ্দেশ্য কখনোই ইসলাম বিরোধী কোনও মতবাদকে প্রচার করা ছিল না। কিন্তু আমাদের ভিডিও দুইটির মেসেজ অনেকের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করায় আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমরা যেভাবে সবাইকে এই সম্পর্কে অবগত করার চেষ্টা করেছিলাম সেই মেসেজটা আমরা পুরোপুরি দিতে পারিনি। এর দায়ভার আমার প্রতিষ্ঠান এবং আমার উপর বর্তায় এবং এর জন্য আমি ক্ষমা-প্রার্থী।"

এদিকে মৃত্যুর হুমকি দেয়ার পর এ বিষয়ে কোন ধরণের আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে টেন মিনিট স্কুলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সাকিব বিন রশিদ বলেন, "ব্যক্তিগতভাবে আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করছি। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোন ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করতেছি না। অফিসিয়াল কোন জিডি এখনো করা হয়নি।"

আয়মান সাদিক ও সাকিব বিন রশীদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননাসহ আরো যেসব অভিযোগ উঠেছে এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে সাকিব বিন রশীদ বলেন যে, এ বিষয়ে এরইমধ্যে বিবৃতিতে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন তারা।

টেন মিনিটস স্কুল অনলাইনে শিক্ষামূলক ভিডিও দিয়ে থাকে। প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষা, সফটওয়্যার ও পেশাদার দক্ষতা বিষয় নানা ধরণের ভিডিও বিনামূল্যে পাওয়া যায়। একই নামে একটি অ্যাপও রয়েছে। যা মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়।

এদিকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ফেসবুক এবং ইউটিউবে হত্যার হুমকির ভিডিও নজরে আসার পর এ বিষয়ে আয়মান সাদিকের সাথে যোগাযোগ করেছেন তারা। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে এর আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশ স্ব-উদ্যোগে গ্রেফতার করার ঘটনা রয়েছে উল্লেখ করে এ ঘটনায় এমন কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে মি. ইসলাম বলেন, যারা হত্যার পোস্ট দিয়েছে তাদের আগে খুঁজে বের করতে হবে, তারপর গ্রেফতার।

"যারা পোস্ট করছে তারা অনেকেই দেশের বাইরে থেকে করছে, অনেকেই ছদ্মনামে করছে। আমরা তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। তারপর ব্যবস্থা।"

পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, যে কাউকে অন্য কেউ যদি প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং তার জীবন সংকটের মুখে পড়ে সে বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে এবিষয়টি তদন্ত করে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

"এ বিষয়টিও দৃষ্টিতে এসেছে এবং অবগতিতে আছে এবং এটি নিয়ে আমরা কাজ করছি," বলেন মি. রানা।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ