আজকের শিরোনাম :

না ফেরার দেশে প্রবীণ সাংবাদিক কবি মুশাররাফ করিম

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২০, ১৭:১৯

জাতীয় প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য ও প্রবীণ সাংবাদিক কবি মুশাররাফ করিম আর নেই। শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে তিনি ময়মনসিংহের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। 

বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত এ কবির বয়স ছিল ৭৫ বছর। তিনি স্ত্রী, এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। 

রোববার (১২ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তার মরদেহ প্রিয় প্রাঙ্গণ ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদে রাখা হলে কবি-সাহিত্যিকসহ সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

পরে বাদ জোহর ময়মনসিংহের চরপাড়া জামেয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে নামাজে জানাজা শেষে তাকে ভাটিকাশর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি সাইফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক অমিত রায়, ময়মনসিংহ রিপোর্টাস ইউনিটির সভপতি মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এক বিবৃতিতে কবি মুশাররাফ করিমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তারা শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

কবি মুশাররাফ করিম দৈনিক দিনকালের বার্তা সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়াও তিনি অধুনালুপ্ত দৈনিক দেশসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি নেত্রকোনার বিরিশিরি কালচারাল একাডেমির পরিচালকও ছিলেন। ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের প্রতিষ্ঠাতা কবি মুশাররাফ করিম ষাটের দশকে আইয়ূব বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন।  

মুশাররাফ করিমের জন্ম ময়মনসিংহের সেহরার বড়বাড়িতে। তার পিতার নাম এম. এ. করিম ও মাতার নাম আমিনা খাতুন। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার খৈরাটি গ্রামে। মুশাররাফ করিম ময়মনসিংহের এডওয়ার্ড ইন্সটিটিউশন থেকে ১৯৬৪ সালে ম্যাট্রিক, নাসিরাবাদ কলেজ থেকে ১৯৬৭ সনে মানবিকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং একই কলেজ থেকে ১৯৭২ সনে স্নাতক পাস করেন। ১৯৭৪ সনে আনন্দমোহন কলেজ ময়মনসিংহ থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর শেষ করেন।

শিশুসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০০৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও জিয়া স্মৃতি পুরস্কার, জিয়া স্মৃতি পদক, কালচক্র স্বাধীনতা পদক, পূরবী স্বাধীনতা পদক, ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাব পদক, জিয়া মেমোরিয়াল এওয়ার্ড (১৯৯৭), রূপালী তারার মেলা শিশু পুরস্কার, জিসাস সাহিত্য পুরস্কার, স্বদেশ-সমাজ সাহিত্য পুরস্কার, অগ্নিসেনা সাহিত্য পদক, ব্রহ্মপুত্র সাহিত্য পুরস্কার, সময় নৃত্যকলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।

মুশাররাফ করিমের কাব্যগ্রন্থ: পাথরের পথে (১৯৮২), অন্য এক আদিবাসে (১৯৮৪), সে নয় সুন্দরী শিরিন (১৯৮৭), কোথায় সেই দীর্ঘ দেবদারু (১৯৯০), নিবেদনের গন্ধঢালা (১৯৯২), অন্তরের ব্যাকুল ব্যাধি (১৯৯৭), কে আছে, কেউ কি আছে (২০০২), নির্বাচিত কবিতা (২০০২), ঘাসের ডগায় হলুদ ফড়িঙ (১৯৯৯)।

উপন্যাস: পূর্ব-পুরুষগণ (২০০২), প্রথম বৃষ্টি (২০০২), স্বপ্নকাব্য, উপন্যাসত্রয়ী (২০০২)।

শিশুসাহিত্য: কোকাকাকা (১৯৯৫), লেবেনডিশ (১৯৭৭), ছক্কা মামার গালগল্প (২০০২), বোগাস ভুত (২০০২), গু ফর নাতিন (২০০২), নীলগঞ্জের ভূত, টম সাহেবের অদ্ভুত বাড়ি, নিঝুমপুরের পোড়োবাড়ি, চোরাগুহার রহস্য, ভয়ংকর ছেলেধরা, কিশোর উপন্যাস সমগ্র (২০০২)।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ