আজকের শিরোনাম :

আলঝেইমার্স রোগ শনাক্ত করার পাঁচটি উপায়

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ মে ২০১৮, ০৯:২৬

ঢাকা, ১২ মে, এবিনিউজ : আলঝেইমার্স (মস্তিস্কের এক ধরনের রোগ যার ফলে কিছু মনে রাখতে না পারে না রোগী) অনেকসময় কয়েকবছর ধরে ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, শুরুর দিকে অনেক সময়ই তা ধরা পড়ে না। কারণ এই রোগের লক্ষণ অন্যান্য অসুস্থতার ক্ষেত্রেও দেখা যেতে পারে।

যুক্তরাজ্যে আনুমানিক সাড়ে ৮ লাখ মানুষ ধরনের সাধারণ ধরনের ডিমেনশিয়ার দ্বারা আক্রান্ত।

তাহলে কিভাবে শনাক্ত করা সম্ভব?
এটি কেবল মাঝে মাঝে বিভিন্ন বিষয় ভুলে যাওয়া নয়, আলঝেইমার্স তার চেয়েও বেশি কিছু। কখনো কখনো কারও নাম ভুলে যাওয়া কিংবা জিনিসপত্র কোথাও রেখে সেটি ভুলে যাওযার ঘটনা প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে।

ভুলে যাওয়া বার্ধক্যের সাধারণ একটি অংশ। কিন্তু সেগুলো নিশ্চিতভাবে আলঝেইমার্স বা ডিমেনশিয়ার কোনও ফর্ম-এর লক্ষণ নয়।

এটি কেবল ছোট ছোট জিনিস হারানোর মামুলি বিষয় নয়।

স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া এই রোগের প্রথম লক্ষণ। শর্ট-টার্ম মেমোরি বা স্বল্পমেয়াদে স্মৃতি-বিভ্রাট ঘটায়। ১০ মিনিট আগের ঘটনাও লোকে ভুলে যায় কিংবা কিছুক্ষণ আগের কথা-বার্তাও ভুলে যায়।

স্মৃতিশক্তি সমস্যা মানুষকে পুনরাবৃত্তির কিংবা সম্প্রতি ঘটা কোনও ঘটনার সম্পর্কে মনে করতে দেয় না। অথবা নিত্য-দিনকার কোনও কাজ যেমন কোনও রান্নার রেসিপি বা ব্যাংক কার্ডের তথ্য ভুলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে।

এক কাপ চা তৈরি!
সাধারণ প্রতিদিনকার কাজ কর্মও আলঝেইমার্স এর প্রাথমিক সময়টিতে চ্যালেজ হয়ে উঠতে পারে। এক কাপ চা বানানো খুব জটিল কিছু নয় এবং সেটার জন্য বিশেষ কিছু শিখতেও হয়না। কিন্তু আলঝেইমার্স এটিকে খুবই কঠিন বিষয়ে পরিণত করতে পারে, কেননা পরবর্তীতে কি করতে হবে সেটি ভুলে গেলে তা বিভ্রান্ত করতে পারে অনেককে।

এই অবস্থায় পরিবর্তনগুলো খুব ছোট ছোট হতে পারে কিন্তু তা দৈনন্দিন জীবনকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি কিংবা তার পরিবার হয়তো অনুধাবন করতে পারে যে, ফোন ব্যবহারে সমস্যা কিংবা ওষুধ খেতে ভুলে যাওয়া। তাদের কথা এবং ভাষায় সমস্যা তৈরি হতে পারে। সঠিক শব্দ খুঁজে পেতেও তাদের অসুবিধায় পড়তে হয়।

আমি এখানে কেন?
আপনি কোথায়? কিংবা সেখানে আপনি কেন?- ভুলে গিয়ে এমন প্রশ্নে কনফিউজড হওয়া আরেকটি সাধারণ ধরনের সংকেত। একজন একেবারে ভুলে যেতে পারে কোথাও যাওয়ার কারণ, বিশেষ করে অপরিচিত এলাকায় এবং বাড়িতেও-সেটি ঘটতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ তারা সিঁড়ি দিয়ে উঠে যেতে পারে কিংবা অন্য কোন রুমে চলে যেতে পারে কিন্তু হয়তো জায়গাটি চিনতে পারেনা। কোন দিন বা কোন মাস সে নিয়েও কনফিউশন তৈরি হতে পারে।

মন-মেজাজ পরিবর্তন
উপরে উল্লেখিত উপসর্গগুলো কারও মধ্যে দেখা গেলে তার মধ্যে মুড বা আচরণ পরিবর্তনের উপসর্গও থাকার সম্ভাবনা।

তারা সহজেই আপসেট কিংবা বিরক্ত হয়, প্রায়ই হতাশা দেখা দেয় এবং আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। এর ফলে দৈনন্দিন কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে এবং নতুন কোনও কাজের ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে উঠতে পারে।

উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তাকে অনুসরণ করে।


অনেক মানুষই বুঝতে পারে কিছু একটা গোলমেলে
আলঝেইমার্স সোসাইটির ক্যাথরিন স্মিথ বলেন, "ডিমেনশিয়া বার্ধক্যের কোনও স্বাভাবিক দিক নয় এটি মস্তিষ্কের একধরনের রোগ। এবং এটি কেবল বয়স্ক মানুষদের আক্রান্ত করে তেমনটি নয়।"

ব্রিটেনে ৬৫ বছরের কম বয়সী ৪০ হাজারের বেশি মানুষ ডিমেনশিয়াতে ভূগছে। তিনি জানান, প্রত্যেকের অভিজ্ঞতা ভিন্ন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বুঝতে পারে যখন কিছু একটা গোলমেলে ঠেকে।

ডিমেনশিয়া নিয়ে বহুবছর ভালভাবে বাঁচা সম্ভব এবং এই রোগ নির্ণয়ের ফলে আপনার জীবন রাতারাতি পাল্টে যাবেনা।

তারপরও আলঝেইমার্স রোগের বিষয়ে সামাজিক কুসংস্কার রয়েছে যার ফলে আনেকেই এই রোগ প্রকাশ পেলে সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কায় থাকে।  সূত্র: বিবিসি বাংলা

এবিএন/ফরিদুজ্জামান/জসিম/এফডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ