করোনাভাইরাস : গণপরিবহন ব্যবহারে আপনার করণীয়
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ জুন ২০২০, ১১:৫৬
সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক, হাত ধোয়ার কথা মানুষ শুনছে প্রতিদিন। কিন্তু বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রবণতা সম্পর্কে যে পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে তাতে এখনি স্বাস্থ্য সুরক্ষার এই পন্থাগুলো ছাড়া জীবনযাপনের কোনো বিকল্প নেই।
বিশেষ করে যেখানে দুই মাসেরও বেশি সময় বিরতির পর সব কিছু চালু হয়েছে, সোমবার থেকে সীমিত আকারে চলতে শুরু করেছে বাসের চাকা। রেল ও নৌযান চালু হয়েছে রবিবার। তবে করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে গণপরিবহন মালিকদের বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
যেমন বাসে অর্ধেক আসন খালি রাখতে হবে, সকল গণপরিবহনে অন্তত তিন ফিট দূরত্বে যাত্রী বসানোর ব্যবস্থা থাকতে হবে, বাহনগুলোকে জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে ইত্যাদি। কিন্তু যাত্রীদেরও অনেক করণীয় রয়েছে। জেনে নিন স্বাস্থ্যবিধি পালন করছেন ভেবে আপনি কি কোনো ভুল করছেন?
সঠিকভাবে মাস্ক পরছেন তো?
সবাইকে মাস্ক পরে অবশ্যই গণপরিবহনে উঠতে হবে সরকার এমন নির্দেশনা দিয়েছে, কিন্তু সত্যিই সুরক্ষা দেয় এমন মাস্ক পরছেন কিনা আর সঠিকভাবে সেটি পরছেন কিনা তা অনেকেই খেয়াল করছেন না। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলছেন, ‘বাসা থেকে মাস্ক পরে যখন বের হবেন আর বাসে বসে ইচ্ছামতো সেটা খুলবেন, বারবার গলায় ঝুলিয়ে রাখবেন, কথা বলবেন, আবার পরবেন সেটি কিন্তু ঠিক নয়। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে। বাস থেকে নেমে অফিস বা বাসায় পৌঁছেই সব কিছুর আগে মাস্ক খুলে ফেলে দিতে হবে। খুলে রেখে দেয়া মাস্ক বারবার ব্যবহার করা যাবে না।’ কিন্তু অনেকেই এসব ভুলই করছেন। একই সাথে সত্যিই সুরক্ষা দেয় এমন মাস্ক পরছেন না অনেকে। হেলথ সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডেমিওলজি বিভাগের শিক্ষক মোসাম্মাৎ নাদিরা পারভিন বলছেন, ‘বাজারে যে মাস্কগুলো পাওয়া যায় তা করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য যথেষ্ট নয়। মাস্ক পরে মুখের সামনে হাত দিয়ে জোরে ফু দিলে যদি বাতাস লাগে তাহলে সেটি নিরাপদ নয়। সে ক্ষেত্রে আমরা নিজেরাই মাস্ক বানিয়ে নিতে পারি। নিজেরাই সুতি কাপড় দিয়ে তিন স্তর বিশিষ্ট মাস্ক তৈরি করে নিলে সেটি অনেক নিরাপদ হবে।’ গ্লাভস যেভাবে ফেলবেন
করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পন্থা হলো হাত পরিষ্কার রাখা। মোসাম্মাৎ নাদিরা পারভিন বলছেন গণপরিবহনে ওঠার সময় হ্যান্ডেল ধরতে হয়, অনেক সময় বাসের সিটের ওপর হাত দিতে হয়, টাকা ধরতে হয় যাতে করোনাভাইরাস থাকতে পারে। তিনি বলছেন, গণপরিবহনে বারবার হাতে স্যানিটাইজার দেয়া মুশকিল। তার চেয়ে হাতে গ্লাভস পরাই ভালো। এতে জীবাণু হাতে লাগার বদলে গ্লাভসে লাগবে। তবে ব্যবহার করা গ্লাভস কিভাবে ফেলবেন সেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। নাদিরা পারভিন বলছেন, ‘এক জোড়া গ্লাভস একবারই ব্যবহার করতে হবে। অফিসে বা বাসায় ঢোকার আগেই সেটি ফেলে দিতে হবে। গ্লাভস খোলার সঠিক নিয়ম হচ্ছে উপরের দিক থেকে ধরে টান দিয়ে উল্টো করে খোলা এবং উল্টো করেই সেটি ফেলতে হবে।’ ব্যাগ বহন না করা
অফিসে বা অন্য কাজে যাওয়ার সময় অনেকেই সাথে ব্যাগ বহন করেন। অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলছেন, সেটি না করাই ভালো। কারণ ব্যাগ ধুয়ে পরিষ্কার করা মুশকিল। যেমন- নারীরা অনেক সময় চামড়ার তৈরি হ্যান্ডব্যাগ ব্যবহার করেন। সেটি পরিষ্কার করা আরও সমস্যা। অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন পরামর্শ দিচ্ছেন যতটা সম্ভব কম জিনিসপত্র নিয়ে বের হওয়া যা পকেটে ঢোকানো যায়। তিনি বলছেন, নারীদেরও উচিত সালোয়ারে চেইন যুক্ত পকেট তৈরি করে নেয়া। পুরো শরীর ঢাকা পোশাক পরুন
বাংলাদেশ গরমের দেশ। এখানে অনেকেই আরামের জন্য ছোট হাতার জামা পরেন। মোসাম্মাৎ নাদিরা পারভিন বলছেন, ‘চলাচলের সময় এমন পোশাক পরা উচিৎ যাতে শরীরের বেশির ভাগ অংশ ঢাকা থাকে। যেমন ফুলহাতার শার্ট বা কামিজ পরা, টি-শার্ট না পরা, জুতো-মোজা পরা উচিত।’ তিনি বলছেন সাথে যদি মাস্ক, গ্লাভস ও চোখে চশমা থাকে তা হলে অনেক সুরক্ষা পাওয়া যাবে। বাড়ি গিয়ে পোশাক খুলে সরিয়ে রাখা বা ধুয়ে ফেলার কথা বলছেন তিনি। যদি সামর্থ্য থাকে তবে ‘ফেস-শিল্ড’ ব্যবহার করা যেতে পারে। যা বারবার চোখ, মুখ, নাকে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকতে সহায়তা করবে এবং অন্য কারো হাঁচি কাশি থেকেও রক্ষা করবে। পথে কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকা
গণপরিবহনে উঠে অনেকেই বাদাম, চানাচুর, কাটা শসা ইত্যাদি খেয়ে থাকেন। সাধারণত হকারদের কাছ থেকে এসব কেনা হয়। অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলছেন এটি একেবারেই করা উচিত নয় কারণ হকাররা দিনভর রাস্তায় ও গাড়িতে বহু মানুষের সংস্পর্শে আসেন। তিনি বলছেন, ‘এখন বাইরের খাবার একদমই খাওয়া উচিত না। কারণ খাবার যিনি প্রস্তুত করছেন, যিনি বিক্রি করছেন তাদের কার মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রয়েছে, কার হাতে কী লেগে আছে তা কিন্তু আমরা জানি না।’ তিনি আরও বলছেন, কিছু খেতে হলে মাস্ক খুলতে হবে, যা একেবারেই ঠিক হবে না। থুথু ও কফ না ফেলা
বাংলাদেশে অনেকেই প্রকাশ্যে রাস্তায় থুথু ও কফ ফেলে থাকেন। গণপরিবহনের জানালা দিয়েও অনেকে সেটি করছেন। থুথু ও কফে করোনাভাইরাস থাকতে পারে। মোসাম্মাৎ নাদিরা পারভিনের পরামর্শ গণপরিবহনে চলার সময় সাথে টিস্যু রাখা। মুখে টিস্যু চেপে ধরে হাঁচি, কাশি দেয়া ও কফ ফেলার কথা বলছেন তিনি। সেই টিস্যু ইচ্ছামতো যানবাহনের জানালা দিয়ে ফেলে দেয়াও মারাত্মক ভুল। তিনি বলছেন, ‘গণপরিবহনে ওঠার আগে সাথে একটা পলিথিন নিতে পারেন। ব্যবহৃত টিস্যু পলিথিনে রেখে দিয়ে বাস থেকে নামার পরে সেটি সঠিক জায়গায় ফেলা উচিত।’ তবে হাঁচি বা কাশির মতো করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকলে গণপরিবহনে না উঠে বাড়িতে অবস্থান করা উচিত। জুতোর নিচেও মনোযোগ দিন
রাস্তায় কফ ও থুথু ফেলা হলে সেটি শেষ পর্যন্ত জুতোর নিচে করে আপনার বাড়িতে অথবা গাড়িতে পৌঁছে যায়। গণপরিবহন ব্যবহার মানে বহু মানুষের পায়ের জুতো তাতে উঠেছে ও নেমেছে। সেই সাথে কফ, থুথু এবং করোনাভাইরাস। তাই জুতোর নিচের অংশ পরিষ্কার করার জন্য যানবাহনের প্রবেশদ্বারে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে রাখা দরকার। যানবাহন থেকে নেমে অফিস বা বাড়ির বাইরেই একই ভাবে জুতো পরিষ্কার করে নেয়ার কথা বলছেন মোসাম্মাৎ নাদিরা পারভিন। সামর্থ্য থাকলে দোকান কিনতে পাওয়া যায় এমন ‘ডিসইনফেকট্যান্ট স্প্রে’ দিয়ে জুতোর নিচে স্প্রে করা যেতে পারে। দূরত্ব বজায় রাখুন
বিশ্বের অনেক দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে একে অপরের থেকে ছয়ফুট দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হচ্ছে। বাংলাদেশের সেটি তিন ফুট। কিন্তু বাংলাদেশের মতো দেশে সেটিও মেনে চলা কঠিন ব্যাপার। লঞ্চ ও বাস টার্মিনালে মানুষজনের ভিড়ের যে ছবি প্রকাশিত হচ্ছে তা রীতিমতো ভীতিকর। কিন্তু করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকার জন্য যত পদ্ধতির কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পন্থা বলা হচ্ছে মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। আর সেজন্যেই দূরত্ব বজায় রাখা দরকার। সব বিশেষজ্ঞের পরামর্শ এটি। আর আশপাশে যদি কেউ হাঁচি ও কাশি দিতে থাকে তাহলে তার থেকে আরও দূরে সরে যাওয়ার কথা বলছেন তারা। গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী বহন করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সেই দূরত্ব নিশ্চিত না হলে তাতে না ওঠাই ভালো।
তথ্যসূত্র : বিবিসি এবিএন/সাদিক/জসিম
সবাইকে মাস্ক পরে অবশ্যই গণপরিবহনে উঠতে হবে সরকার এমন নির্দেশনা দিয়েছে, কিন্তু সত্যিই সুরক্ষা দেয় এমন মাস্ক পরছেন কিনা আর সঠিকভাবে সেটি পরছেন কিনা তা অনেকেই খেয়াল করছেন না। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলছেন, ‘বাসা থেকে মাস্ক পরে যখন বের হবেন আর বাসে বসে ইচ্ছামতো সেটা খুলবেন, বারবার গলায় ঝুলিয়ে রাখবেন, কথা বলবেন, আবার পরবেন সেটি কিন্তু ঠিক নয়। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে। বাস থেকে নেমে অফিস বা বাসায় পৌঁছেই সব কিছুর আগে মাস্ক খুলে ফেলে দিতে হবে। খুলে রেখে দেয়া মাস্ক বারবার ব্যবহার করা যাবে না।’ কিন্তু অনেকেই এসব ভুলই করছেন। একই সাথে সত্যিই সুরক্ষা দেয় এমন মাস্ক পরছেন না অনেকে। হেলথ সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডেমিওলজি বিভাগের শিক্ষক মোসাম্মাৎ নাদিরা পারভিন বলছেন, ‘বাজারে যে মাস্কগুলো পাওয়া যায় তা করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য যথেষ্ট নয়। মাস্ক পরে মুখের সামনে হাত দিয়ে জোরে ফু দিলে যদি বাতাস লাগে তাহলে সেটি নিরাপদ নয়। সে ক্ষেত্রে আমরা নিজেরাই মাস্ক বানিয়ে নিতে পারি। নিজেরাই সুতি কাপড় দিয়ে তিন স্তর বিশিষ্ট মাস্ক তৈরি করে নিলে সেটি অনেক নিরাপদ হবে।’ গ্লাভস যেভাবে ফেলবেন
করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পন্থা হলো হাত পরিষ্কার রাখা। মোসাম্মাৎ নাদিরা পারভিন বলছেন গণপরিবহনে ওঠার সময় হ্যান্ডেল ধরতে হয়, অনেক সময় বাসের সিটের ওপর হাত দিতে হয়, টাকা ধরতে হয় যাতে করোনাভাইরাস থাকতে পারে। তিনি বলছেন, গণপরিবহনে বারবার হাতে স্যানিটাইজার দেয়া মুশকিল। তার চেয়ে হাতে গ্লাভস পরাই ভালো। এতে জীবাণু হাতে লাগার বদলে গ্লাভসে লাগবে। তবে ব্যবহার করা গ্লাভস কিভাবে ফেলবেন সেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। নাদিরা পারভিন বলছেন, ‘এক জোড়া গ্লাভস একবারই ব্যবহার করতে হবে। অফিসে বা বাসায় ঢোকার আগেই সেটি ফেলে দিতে হবে। গ্লাভস খোলার সঠিক নিয়ম হচ্ছে উপরের দিক থেকে ধরে টান দিয়ে উল্টো করে খোলা এবং উল্টো করেই সেটি ফেলতে হবে।’ ব্যাগ বহন না করা
অফিসে বা অন্য কাজে যাওয়ার সময় অনেকেই সাথে ব্যাগ বহন করেন। অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলছেন, সেটি না করাই ভালো। কারণ ব্যাগ ধুয়ে পরিষ্কার করা মুশকিল। যেমন- নারীরা অনেক সময় চামড়ার তৈরি হ্যান্ডব্যাগ ব্যবহার করেন। সেটি পরিষ্কার করা আরও সমস্যা। অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন পরামর্শ দিচ্ছেন যতটা সম্ভব কম জিনিসপত্র নিয়ে বের হওয়া যা পকেটে ঢোকানো যায়। তিনি বলছেন, নারীদেরও উচিত সালোয়ারে চেইন যুক্ত পকেট তৈরি করে নেয়া। পুরো শরীর ঢাকা পোশাক পরুন
বাংলাদেশ গরমের দেশ। এখানে অনেকেই আরামের জন্য ছোট হাতার জামা পরেন। মোসাম্মাৎ নাদিরা পারভিন বলছেন, ‘চলাচলের সময় এমন পোশাক পরা উচিৎ যাতে শরীরের বেশির ভাগ অংশ ঢাকা থাকে। যেমন ফুলহাতার শার্ট বা কামিজ পরা, টি-শার্ট না পরা, জুতো-মোজা পরা উচিত।’ তিনি বলছেন সাথে যদি মাস্ক, গ্লাভস ও চোখে চশমা থাকে তা হলে অনেক সুরক্ষা পাওয়া যাবে। বাড়ি গিয়ে পোশাক খুলে সরিয়ে রাখা বা ধুয়ে ফেলার কথা বলছেন তিনি। যদি সামর্থ্য থাকে তবে ‘ফেস-শিল্ড’ ব্যবহার করা যেতে পারে। যা বারবার চোখ, মুখ, নাকে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকতে সহায়তা করবে এবং অন্য কারো হাঁচি কাশি থেকেও রক্ষা করবে। পথে কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকা
গণপরিবহনে উঠে অনেকেই বাদাম, চানাচুর, কাটা শসা ইত্যাদি খেয়ে থাকেন। সাধারণত হকারদের কাছ থেকে এসব কেনা হয়। অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলছেন এটি একেবারেই করা উচিত নয় কারণ হকাররা দিনভর রাস্তায় ও গাড়িতে বহু মানুষের সংস্পর্শে আসেন। তিনি বলছেন, ‘এখন বাইরের খাবার একদমই খাওয়া উচিত না। কারণ খাবার যিনি প্রস্তুত করছেন, যিনি বিক্রি করছেন তাদের কার মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রয়েছে, কার হাতে কী লেগে আছে তা কিন্তু আমরা জানি না।’ তিনি আরও বলছেন, কিছু খেতে হলে মাস্ক খুলতে হবে, যা একেবারেই ঠিক হবে না। থুথু ও কফ না ফেলা
বাংলাদেশে অনেকেই প্রকাশ্যে রাস্তায় থুথু ও কফ ফেলে থাকেন। গণপরিবহনের জানালা দিয়েও অনেকে সেটি করছেন। থুথু ও কফে করোনাভাইরাস থাকতে পারে। মোসাম্মাৎ নাদিরা পারভিনের পরামর্শ গণপরিবহনে চলার সময় সাথে টিস্যু রাখা। মুখে টিস্যু চেপে ধরে হাঁচি, কাশি দেয়া ও কফ ফেলার কথা বলছেন তিনি। সেই টিস্যু ইচ্ছামতো যানবাহনের জানালা দিয়ে ফেলে দেয়াও মারাত্মক ভুল। তিনি বলছেন, ‘গণপরিবহনে ওঠার আগে সাথে একটা পলিথিন নিতে পারেন। ব্যবহৃত টিস্যু পলিথিনে রেখে দিয়ে বাস থেকে নামার পরে সেটি সঠিক জায়গায় ফেলা উচিত।’ তবে হাঁচি বা কাশির মতো করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকলে গণপরিবহনে না উঠে বাড়িতে অবস্থান করা উচিত। জুতোর নিচেও মনোযোগ দিন
রাস্তায় কফ ও থুথু ফেলা হলে সেটি শেষ পর্যন্ত জুতোর নিচে করে আপনার বাড়িতে অথবা গাড়িতে পৌঁছে যায়। গণপরিবহন ব্যবহার মানে বহু মানুষের পায়ের জুতো তাতে উঠেছে ও নেমেছে। সেই সাথে কফ, থুথু এবং করোনাভাইরাস। তাই জুতোর নিচের অংশ পরিষ্কার করার জন্য যানবাহনের প্রবেশদ্বারে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে রাখা দরকার। যানবাহন থেকে নেমে অফিস বা বাড়ির বাইরেই একই ভাবে জুতো পরিষ্কার করে নেয়ার কথা বলছেন মোসাম্মাৎ নাদিরা পারভিন। সামর্থ্য থাকলে দোকান কিনতে পাওয়া যায় এমন ‘ডিসইনফেকট্যান্ট স্প্রে’ দিয়ে জুতোর নিচে স্প্রে করা যেতে পারে। দূরত্ব বজায় রাখুন
বিশ্বের অনেক দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে একে অপরের থেকে ছয়ফুট দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হচ্ছে। বাংলাদেশের সেটি তিন ফুট। কিন্তু বাংলাদেশের মতো দেশে সেটিও মেনে চলা কঠিন ব্যাপার। লঞ্চ ও বাস টার্মিনালে মানুষজনের ভিড়ের যে ছবি প্রকাশিত হচ্ছে তা রীতিমতো ভীতিকর। কিন্তু করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকার জন্য যত পদ্ধতির কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পন্থা বলা হচ্ছে মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। আর সেজন্যেই দূরত্ব বজায় রাখা দরকার। সব বিশেষজ্ঞের পরামর্শ এটি। আর আশপাশে যদি কেউ হাঁচি ও কাশি দিতে থাকে তাহলে তার থেকে আরও দূরে সরে যাওয়ার কথা বলছেন তারা। গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী বহন করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সেই দূরত্ব নিশ্চিত না হলে তাতে না ওঠাই ভালো।
তথ্যসূত্র : বিবিসি এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ