আজকের শিরোনাম :

করোনায় কেনাকাটা : কী কিনবেন, কী কিনবেন না?

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২০, ০১:১১

আপনার শরীরে কোভিড-১৯ এর লক্ষণ দেখা দিক বা না দিক, এ সময় নিজের ও সবার নিরাপত্তায় প্রয়োজন সচেতনতা এবং সঠিক উদ্যোগ। তাই এই ক্রান্তিকাল এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। কিন্তু বাসায় অনেকটা সময় থাকার প্রস্তুতি মানেই তো যথেষ্ট পরিমাণে খাবার মজুদ করা, তাই না?

অথচ, অনেক বেশি খাবার মজুদ করলে আপনি এবং আপনার চারপাশের মানুষরা সংকটে পড়বেন। খাবারের দাম বেড়ে যাবে, দেখা দেবে বাজারে কৃত্রিম খাদ্যসংকট। তাই অনেক বেশি পরিমাণে খাবার মজুদ না করে বুদ্ধির সাথে ব্যবস্থা নিন। নির্দিষ্ট কিছু খাবার যথাযথ পরিমাণে কিনুন। তো, চলুন করোনার সময় কোন খাবারগুলো কেনা দরকার, কোনটি নয়- তা জেনে নেওয়া যাক।

শুকনো এবং ক্যানের খাবার

ক্যানড খাবার সাধারণত ম্যাগনেসিয়ামে পরিপূর্ণ হয়। এমন নয় যে, ক্যানে রাখা সব খাবারই স্বাস্থ্যকর হয়। তবে প্রয়োজন মাফিক কিছু শুকনো খাবার, এই যেমন- মুড়ি, চিড়া, গুড় ইত্যাদি এবং ক্যানজাত খাবার কিনে রাখার চেষ্টা করুন। এতে করে সাধারণ খাবারের দামটাও বাড়বে না। আর প্রাত্যহিক খাবার একেবারেই কমে আসলে এই খাবারগুলোর ওপরে নির্ভরশীল হতে পারবেন আপনি।

উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার

সবসময় যে তাজা মাংস বা প্রোটিনের উৎস হাতের কাছে পাওয়া যাবে এমন নয়। তাই বলে থরে থরে কাঁচা মাংসও তো আর আপনি ফ্রিজে জমিয়ে রাখতে পারেন না। অন্যদিকে, আমাদের শরীরের নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রোটিনের দরকার হয়। তাই দরকারের সময় প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে ডাল ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও, রাখতে পারেন প্রোটিন সেক ও প্রোটিন বারগুলো। এতে করে দৈনন্দিন খাবারের ওপরে চাপ পড়বে না। তবে একই সাথে বিপদের সময় প্রোটিনের চাহিদা মেটানোর জন্য যথাযথ উৎসটাও নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

ফ্রোজেন খাবার

অন্যান্য খাবারের সাথে সাথে কিছু ফ্রোজেন খাবারও রেখে দিন ফ্রিজে। এর মধ্যে যেমন চিকেন নাগেটস থাকতে পারে, তেমনি মাছও থাকতে পারে। তবে যেমনটাই বাজার করুন না কেন, সেটা যেন হয় হিসাব অনুসারে। বেহিসাবীভাবে না কিনে নির্দিষ্ট ১৫-২০ দিনের জন্য ঠিক যতটুকু তাজা প্রোটিন দরকার, সেটাই কিনুন।

হয়তো দিনে একবেলা আমিষ খাওয়া হয় আপনার পরিবারে। সপ্তাহে একবার মাংস রান্নার প্রস্তুতি রাখুন। এই সময়টা উৎসবের আর খাবার-দাবারের নয়। তাই, খুব সাধারণ খাবারে অভ্যস্ত হোন এবং যেটুকু না হলেই নয় সেটিই মজুদ করুন।

অসুস্থতাকালীন খাবার

দুর্ভাগ্যবশত যদি এই সময়ের ভেতরেই আপনি জ্বর বা অন্য কোন সাধারণ অসুখে ভুগে থাকেন, কিংবা কোভিড-১৯এর চিহ্ন আপনার শরীরে দেখা যায়, সেটার প্রতিরোধে অসুস্থতাকালীন কিছু খাবার রাখুন। এর মধ্যে রয়েছে- স্যুপ, আদা, লেবু ইত্যাদি। এই খাবারগুলো আপনাকে কিছুটা হলেও খাবার খেতে সাহায্য করবে। আর যথাযথ খাবার গ্রহণ করা হলে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইটাও শরীর তুলনামূলকভাবে ভালোভাবে করতে পারবে।

তাজা খাবার

এবার সবশেষে বলা যাক তাজা খাবারের কথা। প্রতিদিন যেহেতু বাজারে যাওয়া সম্ভব নয়, তাই কিছুটা তাজা খাবার আপনি রেখে দিতেই পারেন এই দুর্দিনের জন্য। তবে অবশ্যই সেটা যেন পরিমাণে অনেক বেশি না হয়। খাবার কিনুন, যেন অন্যান্য খাবারের সাথে মুখের স্বাদ বদলাতে মাঝেমধ্যে তাজা খাবারের স্বাদটাও আপনি পেতে পারেন। অন্যথায়, বিপদকালীন সময়ে শুকনো খাবার এবং জমানো খাবারেই অভ্যস্ত হয়ে উঠুন।

দুর্যোগকালীন খাবারে বিলাসিতা কি করা উচিত?

অবশ্যই না। তবে বিলাসিতা না করা মানে এই নয় যে, নিজেকে ছোট্ট কিছু উপহার একেবারেই দেওয়া যাবে না। তাই, এক বাক্স চকোলেট আপনি কিন্তু কিনে রাখতেই পারেন। এটি যেমন আপনাকে মানসিকভাবে স্বস্তি দেবে, তেমনি আনন্দেও রাখবে।

শিশু ও পোষা প্রাণীর খাবার

আপনার বাসায় যদি শিশু থাকে তাহলে তার জন্য দরকারি খাবারগুলো কিনে ফেলুন, যেগুলো ছাড়া তার চলে না। অন্যদিকে, পোষা প্রাণীর ক্ষেত্রেও মাসখানিকের খাবার প্যাকেট কিনে নিন।  

দুর্যোগের এই সময়টা হয়তো কেটে যাবে। তবে যেন দুর্যোগ শেষেও সবাই সুস্থ থাকে সেই ব্যাপারটি নিশ্চিত রাখতে ওষুধ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সঙ্গে সঙ্গে খাবারের দিকেও মনোযোগ দিন। আর এই মনোযোগ দেওয়া মানে এই নয় যে, অতিরিক্ত খাবার বা দ্রব্য কিনে জমিয়ে রাখা। ততটুকুই কিনুন যতটা না হলেই নয়। এতে করে যেমন নিরাপদে থাকবেন আপনি, তেমনি নিরাপদে থাকতে পারবে আপনার চারপাশের মানুষগুলোও।

এবিএন/শংকর রায়/জসিম/পিংকি

এই বিভাগের আরো সংবাদ