আজকের শিরোনাম :

যে ৫ অভ্যাস নারীকে কাজে ফেরাতে সাহায্য করে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ মে ২০১৯, ১০:৫০

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি হলেও লিঙ্গ বৈষম্য কাটিয়ে উঠতে আরও অন্তত ২০২ বছর সময় লাগবে। গত বছর বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে এমন তথ্য প্রকাশিত হয়েছিল।

কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গের বৈচিত্র্য থাকলে ব্যবসায় লাভ হয়- এ সংক্রান্ত অসংখ্য গবেষণা সত্ত্বেও বৈষম্য রয়েই গেছে।

তাই কর্মজীবনে উন্নতিতে নারীদের সহায়তা করার জন্য ৫টি সহায়ক টিপস দিয়েছেন লিডারশিপ কোচ স্যালি হেলজেসেন।

আপনার নিজের অর্জনগুলো দাবি করুন
হেলজেসেনের মতে, কর্মক্ষেত্রে আপনার অবদান অন্যেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে লক্ষ্য করবে এবং আপনাকে পুরস্কৃত করবে এমন আশা করাটা বোকামি।

তবুও হেলজেসেন বলেন, তিনি প্রায়শই এমন মানুষের মুখোমুখি হন যারা তাদের নিজেদের অর্জন সম্পর্কে কথা বলেন না। এবং তারা সাধারণত দুই ধরনের ব্যাখ্যা দেয়।

প্রথমটি হলো, আমি মনে করি যে, আমি যদি ভালো কাজ করি তবে মানুষের সেটা লক্ষ্য করা উচিত’। অপরটি হলো, ‘নিজেকে নজরে আনার জন্য যদি আমাকে সবার সামনে হাঁক দিতে হয়, বা উন্মাদের মতো আচরণ করতে হয় তা হলে কারও নজরে না পড়াটাই ভালো।’

হেলজেসেন বলেন, এ ধরনের চিন্তা-ভাবনা আপনাকে নো-উইন অপশনে ছেড়ে দেবে। অর্থাৎ যেখানে আপনার জয় হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

সুতরাং আপনি একে কীভাবে পরিবর্তন করবেন?

প্রথমত আপনি নিজের একটি শক্তিশালী দিক চিহ্নিত করুন। উদাহরণস্বরূপ, আমার মনে হয় আমার বস আসলে বুঝতে পারছেন না যে আমি এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কতটা ভালভাবে সংযুক্ত। সুতরাং সপ্তাহে একবার আমি বসকে এমন একটি ইমেইল পাঠাব যেখানে সংক্ষিপ্ত আকারে বলা থাকবে যে ওই সপ্তাহে আমি কাদের কাদের সঙ্গে কথা বলেছি।

হেলজেসেনের মতে, এটি নারীদের জন্য একটি অসাধারণ সফল কৌশল।

‘না’ বলতে শিখুন
আপনার কর্মজীবনের শুরুতে সবচেয়ে সহায়ক পদ্ধতি কী হতে পারে, যেটা আপনার উত্থানের পথেও সহায়ক হবে। এমন একটি প্রশ্ন আসে হেলজেসেনের মনে।

আপনি যদি সবসময় অন্যের অনুগ্রহ বা দয়া খোঁজেন, তাহলে প্রতিনিয়ত অন্যের কাছে কৈফিয়ত দিতে হবে এবং একটি কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে উপায় হতে পারে ‘না’ বলা। ওই বিষয়গুলোর ব্যাপারে ‘না’ বলা যেখানে আপনার সুবিধা নেয়ার সুযোগ থাকে, যেটা আপনার সীমা লঙ্ঘন করে এবং যেটা সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছু নয়।

এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার উপায় হিসেবে হেলজেসেন বলেছেন ছোট থেকে শুরু করুন, নিজেদের সীমানার ব্যাপারে সবাইকে সরাসরি জানিয়ে দিন। নিজেকে বলুন, এই মুহূর্তে আমি বেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তাই আগামী মাসে, যখন মানুষ আমাকে একটি নতুন টাস্কফোর্স বা অন্য কিছুতে যোগ দিতে বলবে। তখন আমি হুট করে হ্যাঁ বলার আগে এ ব্যাপারে গভীরভাবে চিন্তা করব।

এবং এই কাজ থেকে আমি কি পাব বা আমার কি সুবিধা হবে, বিশেষত এই কাজটি কি সত্যিই আমার স্বার্থ রক্ষা করবে কিনা সবকিছু ভেবে দেখব।

নিখুঁত হওয়া বনাম ঝুঁকি গ্রহণ
একজন পারফেকশনিস্ট বা নিখুঁত কাজ করা ব্যক্তির সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, অন্যদের সঙ্গে কাজ করতে গেলে তাদের সমস্যা হয়। এমনটা মনে করেন হেলগেসেন। আমি প্রায়ই মানুষকে বলতে শুনি বলি, ওহ, এই কাজটা আমি নিজে-নিজে করলে আরও সহজ হতো।

এবং এই বিষয়টি মোকাবেলা করার জন্য অপেক্ষাকৃত সহজ উপায় আছে।

আপনার সঙ্গে কাজ করতে যাচ্ছেন এমন একজন ব্যক্তিকে সনাক্ত করুন, তারপর তাকে একটি সুযোগ দিন। তার কাজের ব্যাপারে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান। কিন্তু কখনোই পরিপূর্ণ বা নিখুঁত কিছু আশা করবেন না- এই ঝুঁকিটা নিতে হবে।

যদি এতে আপনি অস্বস্তি বোধ করেন, তা হলে সেটা মেনে নিন।

গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নারীদের পুরস্কৃত করা হয় তাদের সঠিক ও সুনির্দিষ্টভাবে কাজ করার জন্য। এবং পুরুষদের পুরস্কৃত করা হয় ঝুঁকি নেয়া এবং সাহসিকতার জন্য।

এ অবস্থায় হেলজেসেন পরামর্শ দেন, ঝুঁকি নিতে শেখা এবং নিখুঁত হওয়া থেকে সরে দাঁড়ানো ক্যারিয়ারে অগ্রগতির মূল চাবিকাঠি।

ভুলগুলো ভুলে যান
হেলজেসেন বলছেন, পুরুষের তুলনায় নারীরা সাধারণত অনেক বেশি তাদের ভুলগুলো নিয়ে পড়ে থাকে। এবং এই প্রবণতা নারীদের আসলেও পেছনে আটকে রাখে। এটা হলো নিজেকে আঘাত করার একটি উপায়।

এর পরিবর্তে হেলগেসেন নিজেদের বিরতি দেয়ার দেয়ার কথা জানান, নিজেকে বলুন ‘আপনি মানুষ, অন্য সবার মতো। তাই ভুলকে ভুলে যান।

মিনিমাইজিং বন্ধ করুন
শারীরিক গড়ন বা শব্দের ব্যবহার- দুটো দিকেই নারীদের মধ্যে নিজেদের ছোট করে দেখানোর একটি প্রবণতা আছে, হেলজেসেন বলছেন।

‘ক্ষমাপ্রার্থী’, ‘আপনার এক মিনিট সময় হবে?’ এমন বাক্য ব্যবহার করা এবং কর্তৃত্বের সাথে কোথাও অবস্থান না নেয়া, অনেকটা এমন যে আপনি যেখানে আছেন সেখানে নিজেকে সপে দিয়েছেন- এই সমস্ত বৈশিষ্ট্য সাধারণত নারীদের মধ্যে দেখা যায়।

হেলজেসেন পরামর্শ দেন, যদি আপনি নিজেকে একজন নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন তা হলে আপনাকে আপনার স্থানটি ধরে রাখতে হবে। এমনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে যেখানে আপনি জানেন যে আপনি যোগ্য, সম্পূর্ণ এবং সর্বসম্পন্ন।
তথ্যসূত্র : বিবিসি

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ