আজকের শিরোনাম :

ফেসবুক মানুষকে হতাশাগ্রস্ত করে তুলছে

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০১৯, ১২:১৭

আপনার কি কখনো মনে হয়েছে ফেসবুকে মানুষজনকে বাস্তব জীবনের চেয়ে অনেক বেশি সুখী মনে হয়? প্রতিদিনের কার্যকলাপ ফেসবুকে জানান দেয়া এখন যেন অনেকের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কে কতটা আনন্দের সঙ্গে জীবন কাটায় তার যেন প্রতিযোগিতা চলছে।

বাস্তবটা কি আসলেই তাই? সাম্প্রতিক গবেষণা বরং বলছে, ফেসবুক মানুষকে হতাশাগ্রস্ত করে তুলছে। কিন্তু তার পরও কেন মানুষের নিজেকে সুখী দেখানোর নিরন্তর এত চেষ্টা?

ফেসবুকের সঙ্গে সুখের কি সম্পর্ক? বাস্তব জীবনের চেয়ে ফেসবুকের অবাস্তব জগতে মানুষকে অনেক বেশি সুখী কেন মনে হয়? মানুষের মধ্যে নিজেকে সুখী দেখানোর এই চেষ্টাই বা কেন?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা বলেন, ‘অন্যের কাছে নিজেকে আমরা সফল বা সুখী দেখাতে চাই। সেটা আমাদের ব্যক্তিত্ব ও পরিচয় তৈরিতে সাহায্য করে। এই দেখানোটা সামাজিক প্রক্রিয়ার মধ্যেই পরে। সোশাল মিডিয়া আমাদেরকে তার জন্য একটা প্ল্যাটফর্ম দিচ্ছে। যেমন চায়ের দোকানে চা খেতে গেলে আপনি কিন্তু ফেসবুকে ছবি দেবেন না। একটা ব্রান্ড কফি শপে গেলেন তখন কিন্তু ছবিটা দেবেন।’

তিনি বলেন, ‘অন্যের চোখের মাধ্যমে আমরা আসলে বোঝার চেষ্টা করি আমি সামাজিকভাবে ঠিক আছি কিনা, ঠিক যায়গায় আছি কিনা। আমি অন্যে চোখের দৃষ্টির মাধ্যমে নিজেকে দেখতে পাই। এসব জিনিস পোষ্ট করে আমি বুঝতে পারি অন্যরা আমাকে কিভাবে দেখছে।’

লাইক বাটনে কটা ক্লিক পড়ল, পোস্টে কটা কমেন্ট পড়ল এসব দিয়েই যেন অনেক কিছুর যাচাই হয়ে যাচ্ছে।

সামিনা লুৎফা বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলো জনপ্রিয় হওয়ার আগে প্রতিবেশী, আত্মীয় বা সহকর্মীর সাথেও একইরকম গল্প করার বিষয়টি ছিল। তখনও মানুষ নিজেদের সুখ ও সাফল্যের কথা শোনাতে চাইতো। এখন তার মাধ্যম ও মাত্রা বদলেছে।’

সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, ফেসবুক মানুষকে হতাশাগ্রস্ত করে তুলছে। সেটা কীভাবে হচ্ছে?

মনোবিজ্ঞানী ইশরাত শারমিন রহমান বলেন, ‘ধরুন এক দম্পতি ফেসবুকে দেখছে যে অন্য একটা কাপল দেশের বাইরে ঘুরতে যাচ্ছে, বাইরে নিয়মিত খেতে যাচ্ছে, দামি কাপড় পরছে। তখন তারা মনে করছে আমি পারছি না কেন? আমার তো নিত্যদিন চলাটাই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নিজের জীবনের সঙ্গে এই তুলনা তার মন খারাপ করে দিচ্ছে।’

সামিনা লুৎফা মনে করেন মানুষের বন্ধনগুলো ধীরে ধরে অনেক শিথিল হয়ে যাচ্ছে।

সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন জীবনে ভার মুক্ত হওয়ার জন্যে, ক্ষোভ ও দুঃখের কথা জানানোর জন্যেও, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো যেন এখন একটা জায়গা হয়ে উঠেছে।
তথ্যসূত্র : বিবিসি

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ