আজকের শিরোনাম :

জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:২৯ | আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৭:২৯

নিরপরাধ পাটকল শ্রমিক জাহালমকে আসামি করে ঋণ জালিয়াতির ২৬ মামলায় জড়ানোয় তাকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক মাসের মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে এ টাকা দিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে আজ বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে শুনানিতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।  ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান ও সোনালী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শেখ মো. জাকির হোসেন।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি রুলের ওপর শেষ মামলাটি অপেক্ষমাণ রেখেছিলেন।অর্থাৎ যেকোনো দিন রায় ঘোষণার জন্য রাখা হয়।

ব্র্যাক ব্যাংককে বলা হয়েছে, রায়ের কপি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে জাহালমকে ওই ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে। আর টাকা দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের দপ্তরে তা লিখিতভাবে জানাতে হবে।

সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১২ সালের এপ্রিলে ৩৩টি মামলা করে দুদক। দুদক তদন্ত করে বলে, জালিয়াত চক্র সোনালী ব্যাংকের ক্যান্টনমেন্ট শাখায় আবু সালেকসহ তিনজনের হিসাব থেকে ১০৬টি চেক ইস্যু করে। চেকগুলো ১৮টি ব্যাংকের ১৩টি হিসাবে ক্লিয়ারিংয়ের মাধ্যমে জমা করে ১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। ওই ১৮টি ব্যাংকের মধ্যে একটি হল ব্র্যাক ব্যাংক।

কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তাদের ভুলে সালেকের বদলে গ্রেপ্তার করা হয় টাঙ্গাইলের জাহালমকে। তাকে ‘আবু সালেক’ হিসেবে শনাক্ত করেছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা। সে কারণে ব্র্যাক ব্যাংককে এই জরিমানা দিতে বলা হয়েছে।

আদালত বলেছে, এ ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের কোনো ভুল না পাওয়ায় তাদের জরিমানা করা হয়নি।

তবে দুদককে হাই কোর্ট সতর্ক করে দিয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।

আর যে ৩৩ মামলায় জাহালমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল, সেগুলোর পুনঃতদন্ত করে দ্রুত সময়ে বিচার শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। 

গত বছরের জানুয়ারিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না...’, শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত।

এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা, মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। এছাড়া রুলও জারি করেন আদালত।

পরে একই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্টরা হাজিরের পর হাইকোর্ট জাহালমকে মুক্তির নির্দেশ দেন এবং দুদকের কাছে ঘটনার বিষয়ে হলফনামা আকারে জানতে চন। সে আদেশ অনুসারে দুদক হলফনামা আকারে তা উপস্থাপন করেন।

পরে জাহালম প্রশ্নে ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ৩৩ মামলার এফআইআর, চার্জশিট, সম্পূরক চার্জশিট এবং সব ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নথিপত্র দাখিল করতে দুদককে নির্দেশ দেন।

এরই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্ট গত ১৭ এপ্রিল জাহালম কাণ্ডে কে বা কারা দায়ী তা দেখার জন্য এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতিবেদন চেয়েছিলেন। পরে এসব মামলায় দুদক, ব্র্যাক ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ