আজকের শিরোনাম :

ইউএনওর ওপর হামলা: আদালতে রবিউলের দায় স্বীকার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৯:২৪ | আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৯:৩৮

দিনাজপুরে ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহেদা খানমকে হত্যাচেষ্টা মামলার অন্যতম আসামী, ইউএনও’র বাড়ির সাময়িক বরখাস্ত মালী রবিউল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। পরে তাকে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়।

রোববার দুই দফা রিমান্ড শেষে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দেন তিনি।

এর আগে কড়া নিরাপত্তা মধ্যে রবিউল ইসলামকে হেলমেট পরিয়ে রোববার সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে দিনাজপুর আদালতে নিয়ে আসে পুলিশ। পরে বিকেল সাড়ে ৩টায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রিট বিচারক ইসমাইল হোসেনের আদালতে রবিউলকে হাজির করা হয়। আসামী রবিউল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। স্বীকারোক্তি নেয়ার পর আদালত তাকে জেল-হাজতে প্রেরণের নির্দেশ তেন।

দিনাজপুর কোর্ট পরিদর্শক ইসরাইল হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দিনাজপুর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবির ওসি ইমাম আবু জাফরও রবিউল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দেয়ার সত্যতা স্বীকার করেন।

অন্যদিকে আদালতে উপস্থিত রবিউল ইসলামের ভাইয়েরা অভিযোগ করেন, পুলিশ জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেয়ার জন্য অমানুষিক নির্যাতন ও মারধর করায় রবিউল হাঁটতে পারছেন না।

তদন্ত কর্মকর্তা ইমাম জাফর বলেন, দুই দফায় নয় দিনের দিনের রিমান্ড শেষে রোববার আদালতে হাজির করলে রবিউল অপরাধের কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।  গত জানুয়ারিতে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ব্যাগ থেকে টাকা চুরির অভিযোগে ইউএনও সাময়িক বরখাস্ত করেন রবিউলকে। এ কারণে রবিউল ক্ষুব্ধ হন। ১ সেপ্টেম্বর তাকে চাকরি থেকে চূড়ান্ত বরখাস্ত করা হয়। আর এতেই রবিউল আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে হামলা করেন।

ইমাম জাফর আরো বলেন, রবিউল ২ সেপ্টেম্বর দুপুরে দিনাজপুর থেকে ঘোড়াঘাট চলে যান। সেখানে ওসমানপুরে রাত ১১টা পর্যন্ত অবস্থান করেন। তারপর সময় বুঝে গভীর রাতে উপজেলা পরিষদে যান। দেয়াল টপকে ইউএনওর বাসভবনে ঢুকে রবিউল একাই ইউএনও এবং তার বাবাকে হত্যার চেষ্টা করেন।  রবিউলের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করার পাশাপাশি ফিঙ্গার প্রিন্ট পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের পুকুর থেকে হামলায় ব্যবহৃত হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়। এর আগে রবিউলের ঘোড়াঘাট যাওয়া এবং সেখানে অবস্থানের সাক্ষী হিসাবে ১৬৪ ধারায় পাঁচজনের জবানবন্দি নিয়েছে আদালত।

সাক্ষীদের মধ্যে রয়েছেন দিনাজপুর শহরের সেলুন কর্মচারী মুরাদ, সাইকেল গ্যারেজ মালিক আইনুল, ঘোড়াঘাটের ওসমানপুরের মুদি দোকানি সিরাজ, খোকন আলী নামে এক ব্যক্তি ও ১০ বছরের ছেলে একটি শিশু রয়েছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা।

এর আগে বৃহস্পতিবার আসামী রবিউল ইসলামকে পুলিশ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিতে বললে রবিউল অসম্মতি জানায়। পরে ৬ ঘণ্টা পর পুলিশ ওদিন বিকেল সাড়ে ৫ টায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রিট আদালতের বিচারক আনজুমান আরার আদালতে রবিউলকে হাজির করে আরও ৭ দিনের রিমান্ড চায়। আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় ঘোড়াঘাট ইউএনওর বাস ভবনে ভেন্টিলেটর দিয়ে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা ইউএনও ওয়াহিদা খানম এবং তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা শেখ ওমর আলীর উপর হামলা চালায়।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ