আজকের শিরোনাম :

আমরা পুলিশে পরিবর্তন আনতে চাই : আইজিপি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২০, ২২:০১

পুলিশের আই‌জি‌পি ড. বেনজীর আহ‌মেদ বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশ পুলিশে একটি মৌলিক পরিবর্তন আনতে চাই। আর এ পরিবর্তন হতে হবে অর্থবহ। আমরা পুলিশে পরিবর্তন আনতে চাই। কল্যাণকর পরিবর্তন আন‌তে হ‌লে পরিবর্তন গ্রহণের মান‌সিকতা তৈরি হ‌তে হ‌বে সবার আগে। সম‌ন্বিত প্রয়াস এবং ঐকমত্য ব্যতীত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়।’

আইজিপির শততম দিনে জনগণের পুলিশ বিনির্মাণের পথে অগ্রগতি সম্পর্কে আজ শনিবার দুপুরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কৃষ্ণচূড়া সম্মেলন কক্ষে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন তিনি। 

আইজিপি বলেন, ‘প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের এক বা একাধিক লক্ষ্য থাকে। লক্ষ্যবিহীন কোনো প্রতিষ্ঠান সম্মুখের পানে এগিয়ে যেতে পারে না। আমরা বর্তমানে ২০২০ সালে আছি। আগামী ৫, ১০, ৫০ ও ১০০ বছর পরে পু‌লি‌শিং কেমন হ‌তে পা‌রে তা বি‌বেচনায় রে‌খে বর্তমা‌নের পু‌লিশিংকে ঢে‌লে সাজা‌তে হ‌বে। এ সব বিষয়া‌দি মাথায় নি‌য়েই ‌বিগত ১০০ দি‌নে বি‌ভিন্ন স্বল্প এবং দীর্ঘ‌মেয়াদী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ক‌রে তা অর্জ‌নের জন্য নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হ‌য়ে‌ছে। তিনি ব‌লেন, মাদক, দুর্নী‌তি  ও নিপীড়‌নের বিরু‌দ্ধে ক‌ঠোর অবস্থান গ্রহ‌ণ, পু‌লিশ সদস্যদের কল্যাণ ও শৃঙ্খলার বিষ‌য়ে অধিকতর ম‌নো‌যোগ প্রদান এবং জনগ‌ণের দোর‌গোঁড়ায় পু‌লিশ‌কে নি‌য়ে যে‌তে বিট পু‌লি‌শিং সেবা বেগবান করার মাধ্যমে রূপকল্প ২০৪১ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জ‌নে গুরুত্বপূর্ণ ভূ‌মিকা রাখ‌বে বাংলা‌দেশ পু‌লিশ।’

ড. বেনজীর আহ‌মেদ বলেন, ‘পরিবর্তন করতে হলে আমাদের সবাইকে মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এ পরিবর্তন হতে হবে অর্থবহ পরিবর্তন। এর ফলে দেশ উপকৃত হবে, জনগণ উপকৃত হবে।’
পুলিশ প্রধান বলেন, ‘গত ১০০ দিনে আমরা অনেক টার্গেট ফিক্স করেছি। এ টার্গেট অর্জন করতে হলে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’

বিগত ১০০ দিনে গৃহীত উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে, পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন হয়রানি ও দুর্নীতিমুক্তকরণ, গোয়েন্দা তথ্যনির্ভর শিল্প পুলিশ গড়ে তোলা, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ভবন নির্মাণ,  এপিবিএন এবং এসপিবিএনের জন্য আলাদাভাবে জনবল নিয়োগ, সিআইডিতে ডিএনএ ডাটাবেজ ব্যাংক স্থাপন, যৌক্তিক দূরত্বে হাইওয়ে পুলিশ স্টেশন এবং আউটপোস্ট স্থাপন, নৌ পুলিশের আউটপোস্ট স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, সুন্দরবনে নৌ পুলিশের চারটি ক্যাম্প স্থাপন, পিবিআই কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ ত্বরান্বিতকরণ, পুলিশ মেডিকেল সার্ভিসেস গঠনের প্রস্তাবকরণ, ঢাকা ডিভিশনাল পুলিশ হাসপাতাল স্থাপন, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে বিশেষায়িত হাসপাতালে পরিণতকরণ, ট্যুরিস্ট পুলিশের জন্য আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, পুলিশ অফিসারদের জন্য মাসিক পারফরমেন্স রিপোর্ট চালুকরণ,পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে আধুনিক ডিজিটালাইজড কন্ট্রোল রুম স্থাপন, সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, পুলিশের পূর্ত কাজের পলিসি গাইডলাইন প্রণয়ন, দায়িত্ব পালনকালে স্মল আর্মস  ব্যবহার প্রবর্তন, সব পর্যায়ের অফিসার এবং ফোর্সের জন্য রিফ্রেশমেন্ট ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাকরণ, বরিশাল, জামালপুর ও গোপালগঞ্জে তিনটি নতুন ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন, এর মধ্যে গোপালগঞ্জে হবে নারীদের ট্রেনিং সেন্টার, আটটি বিভাগীয় শহরে পুলিশের সন্তানদের জন্য আটটি রেসিডেন্সিয়াল স্কুল স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাইকরণ ইত্যাদি।

সময়কে বহতা নদী আখ্যায়িত করে আইজিপি বলেন, ‘সময় কারো জন্য অপেক্ষা করবে না। আমরা সময়ের যথাযথ ব্যবহার করতে পারি, আবার অপব্যবহারও করতে পারি। সময়কে যেভাবেই ব্যবহার করি না কেন, সময় কিন্তু বসে থাকবে না। তাই সঠিক সময় আমাদেরকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমরা যা করছি, দেশের জন্য, জনগণের জন্য, পুলিশের জন্য করছি।’

আইজিপি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আসুন, আমরা আমাদের কাজ দিয়ে দেশের মানুষের কাছে পরিচিত হই, আমাদের দক্ষতা দিয়ে পরিচিত হই, মানুষকে ভালোবেসে পরিচিত হই। আমরা দেশের কল্যাণে জনগণের জন্য নিজেদের উৎসর্গ করি।’

অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজিগণ, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ