আজকের শিরোনাম :

রাজধানীতে ডিবির হাতে ৪২ জন ছিনতাইকারী গ্রেফতার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:৩১

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) রাজধানীতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত ৪২ জনকে গ্রেফতার করেছে। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত ছিনতাইকারীদের হেফাজত হতে ৭৪ টি বিভিন্ন কোম্পানীর মোবাইল ফোন, ১টি ট্যাব ও ১টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত ১৩টি ছুরি ও ২টি চাপাতি উদ্ধার করা হয়। 

আজ শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১.৩০টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোঃ আবদুল বাতেন।

ছিনতাইকারীরা সুযোগ পেলে ছিনতাই করে উল্লেখ করে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ডিবি বলেন, ধৃত আসামীরা ছিনতাইকারী ও সালাম পার্টি দলের সক্রিয় সদস্য। এ চক্রের সদস্যরা রাজধানীর সাতরাস্তা, নাবিস্কো, মহাখালী বাস টার্মিনাল, মহাখালী রেলক্রসিং, বনানী, গুলশান-১, গুলশান লিংক রোড, রামপুরা ব্রীজ, ধানমন্ডি, বংশাল, চকবাজার, কলাবাগান, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় গলিপথগুলোতে যাতায়াতকারী রিক্সা বা পায়ে হাঁটা যাত্রীদের ছুরি দেখিয়ে সর্বস্ব ছিনতাই করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি জানান, ছিনতাইকারীরা তাদের সুবিধামত কোন স্থানে রিক্সার যাত্রী অথবা পথচারীদের ‘সালাম’ দেয় যেন তারা পরস্পর পরস্পরের পূর্ব পরিচিত। সালাম পেয়ে রিক্সার যাত্রী/পথচারী থামলে তারা কাছে এসে চাকু দিয়ে আঘাত করার ভয় দেখিয়ে যাত্রী/পথচারীদের সর্বস্ব কেড়ে নেয়।

বসুন্ধরা, মোতালেব প্লাজায় বিক্রি হয় ছিনতাই করা মোবাইলের পার্টস

আব্দুল বাতেন বলেন, ছিনতাই মোবাইল কোথায় যায় এটা নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে আমরা দেখেছি ছোটখাটো যে মোবাইল পার্সের দোকান আছে তারা এসব চোরাই মোবাইল কিনে থাকে। বসুন্ধরা, মোতালেব প্লাজার অনেক দোকানদার আছে যারা এসব চোরাই মোবাইল কিনে থাকে। এসব মোবাইল সরাসরি মানুষের কাছে বিক্রি করে না। বিশেষ করে কারও মোবাইল নষ্ট হয়ে গেলে চোরাই মোবাইলের পার্স খুলে বিক্রি করা হয়। এসব পার্স বিক্রি করলে যে লাভ হয় তা মোবাইল বিক্রি করলেও হয় না। চোরাই মোবাইলের বিক্রি ও কেনার সঙ্গে কারা জড়িত তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করেছি। অচিরেই সেসব জায়গায় অভিযান চালানো হবে।’

ঢাকা মহানগরের গোয়েন্দা দল এ ধরণের কয়েকটি ঘটনার তদন্তে নেমে এ চক্রগুলির সন্ধান পায়। এর সাথে জড়িত আরো যারা রয়েছে তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

‘বড় বড় মার্কেটের যেসব ব্যবসায়ীরা এসব মোবাইল বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে বলতে চাই এটা অপরাধ। এসব কাজে অবশ্যই আপনারা (ব্যবসায়ী) সতর্ক হন। কারণ আমাদের এই অভিযান চলবে। ফলে ছিনতাইকারী বা টানা পাটি আছে তাদের আধিপত্য হ্রাস পাবে।’

মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত ছিনতাই বেশি হয়, এজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে কি ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে আব্দুল বাতেন বলেন, ‘যেসময় গুলোতে এ ধরণের কর্মকাণ্ড ঘটে তা বন্ধ করতে আমরা বাস-লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে টহল জোরদার করব সঙ্গে গোয়েন্দানজরদারিও বাড়ানো হবে। বিশেষ করে ওই সব এলাকায় চিহ্নিত ছিনতাইকারী যারা তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।’

শনিবার ভোরে কমলাপুরে রেলওয়ে স্টেশনের কাছে ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার সময় রিকশা থেকে পরে তারিনা বেগমের মৃত্যু বিষয়ে সাংবাদিকরা করা এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল বাতেন বলেন, ‘আমরা বিষয়টি অনুসন্ধান করছি। এই ব্যাপারে মামলা হবে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে।’

ছিনতাই হলেই থানায় অভিযোগ করুন

ছিনতাইয়ের ঘটনায় নগরবাসী মামলা করতে নিরুসাহিত হয় এর কারণ কী পুলিশের কোন দায়? এমন প্রশ্নে বাতেন বলেন, ‘দায় বললে হবে না, এটা দায়িত্বশীলতা।

নাগরিক হিসেবে আপনার দায়িত্ব- কোথাও কোন অপরাধ হলে তা থানায় গিয়ে অভিযোগ দেওয়া। তাছাড়া পুলিশের পক্ষে সম্ভব হয় না অপরাধ সম্পর্কে জানা কিংবা অপরাধীকে সনাক্ত করা। নগরবাসীকে বলতে চাই, আপনারা থানায় যাবেন অভিযোগ দেবেন। থানা যদি মামলা বা অভিযোগ নিতে অপরাগতা প্রকাশ করে তাহলে তা আমাদের উর্ধ্বতনদের জানাবেন। তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’

বহিষ্কৃত যুবলীগ নেত্রী পাপিয়াকে রিমান্ডে এনে কী জানতে চাওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে আমরা তা তদন্ত করছি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা এবং ক্রিমিনাল অপরাধ সেগুলো চিহ্নিত করছি।’ আমরা জানাবো বিষয়টি আপনাদের।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

এই বিভাগের আরো সংবাদ