আজকের শিরোনাম :

চট্টগ্রামে অনিক হত্যাকান্ডে আরো ২ আসামি গ্রেফতার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ জুন ২০১৮, ১৬:৩০

চট্টগ্রাম, ২৬ জুন, এবিনিউজ : ঈদের ২য় দিনে চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর অনিক হত্যাকান্ডের মূল নির্দেশদাতা ও মূল খুনিসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  এদের মধ্যে ভারতীয় পুলিশের সহায়তায় দুজনকে এবং কুমিল্লা পুলিশের সহযোগিতায় গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে জেলার দাউদকান্দির চক্রশালা এলাকা থেকে অপর দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় একটি চায়না পিস্তল ও গুলি।


অনিক হত্যাকান্ডে গ্রেফতার ও চলমান প্রক্রিয়া নিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় সিএমপির পু্লশি লাইন্সের মাল্টিপারপাস শেডে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন সিএমপি কমিশনার মাহবুবুর রহমান।

পুলিশ কমিশনার উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, সাংবাদিকদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে কোন হত্যাকান্ডে খুনিরা যে দলেরই বা পদেরই হোক আমরা তাদের গ্রেফতার করে আইনের কাছে সোপর্দ করব।  সে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ি সম্প্রতি তিনটি খুনের ঘটনায় শতভাগ আসামি গ্রেফতার করার কথা নিশ্চিত করে বলেন তিনি।  তিনি বলেন এসব হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছোড়াও উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ কমিশনার বলেন, অনিক হত্যায় জড়িত মূল আসামিদের মধ্যেও ইতিমধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ভিসা ব্যবহার করে ভারতে পালিয়ে যাওয়া এ হত্যাকান্ডের ১ নং আসামি তুষার ও ১০ নং আসামি এখলাসকে ভারতের স্পেশাল ট্রাসফোস ব্রাঞ্চের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তুষারের কাছে মালেশিয়ার ভিসাও ছিলো।

সুযোগ পেলে তারা মালেশিয়া চলে যেত।  গ্রেফতারের পর তুষারের সেলফোনের সূত্র ধরে কুমিল্লা পুলিশের সহযোগীতায় জেলার দাউদকান্দি থেকে গ্রেফতার হয় এ হত্যাকান্ডের আরো দুই আসামি।

বিস্তারিত জানাতে গিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, অনিক মার্ডারের দুজন আসামি ভারতে অবস্থান করছে তথ্যটি সরকারিভাবে জানার পর ভারতের স্পেশাল ট্রাসফোস ব্রাঞ্চের সাথে ব্যাক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে চকবাজার থানা পুলিশ এবং ডিসি দক্ষিণের একটি দল।

পরে ভারতীয় পুলিশ তাদের অফিসিয়াল নিয়ম কানুন শেষ করে যশোরের বেনাপোলে আমাদের ইমিগ্রেশনের কাছে হস্তান্তর করে গ্রেফতার দুজনকে।  পরে তাদের সেলফোনের তথ্য থেকে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে এ হত্যাকান্ডের অন্যতম দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।

এদের মধ্যে হত্যাকান্ডের দায়ের করা মামলার ৫ নং আসামি জোনায়েদ আহম্মেদ শোভন সরাসরি ছুরিকাঘাত করে অনিককে খুন করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ কমিশনার।  এছাড়াও গ্রেফতারের পর তুষারের দেয়া তথ্য মতে নগরীর কোতোয়ালি থানা ব্যাটারি গলির মাছ বাজার এলাকার আশা মঞ্জিলে তুষারের বাসা থেকে একটি চায়না পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
স্বল্পতম সময়ে আসামী অন্যদেশ থেকে আনা এ মামলার অন্যতম সফলতা বলে দাবি করেন পুলিশ কমিশনার।

এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত বাকি আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।  অনিক হত্যাকান্ডে এ পর্যন্ত গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ভারত থেকে গ্রেফতার হয়, হত্যাকান্ডের ১ নং আসামি ও নগরীর কোতোয়ালি থানা ব্যাটারি গলির মাছ বাজার এলাকার আশা মঞ্জিলের মৃত কলিম উদ্দিন খসরুর ছেলে মোহাম্মদ মহিউদ্দিন তুষার (৩০) এবং অনিক হত্যা মামলার ১০ নং আসামি ও কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানা ঢেমুশিয়া গান্দিপাড়া গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে এখলাসুর রহমান প্রকাশ এখলাছ (২২)।

এখলাছ নগরীর কোতোয়ালি থানা ব্যাটারি গলি ধোপা পাড়া ক্লিপটন গার্মেন্টেসের মালিক প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধরী বিল্ডিংয়ের নিচ তলায় বসবাস করতেন। কুমিল্লা পুলিশের সহায়তায় গ্রেফতার হয় এ মামলার ৪ নং আসামি ও চকবাজার থানা ২৭ নং দামপাড়া ১ নং গলির মো. ছগির আহম্মেদের ছেলে জোনায়েদ আহম্মেদ ঈমন (১৯) ও তার সহোদর ভাই এবং এ মামলার ৫ নং আসামি জোবায়েদ আহম্মেদ শোভন (২২)। শোভন অনিককে সরাসরি ছুরিকাঘাত করে।  

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার মাহবুবুর রহমান ছাড়াও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মোস্তাইন হোসাইন। অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) কুসুম দেওয়ান, উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) শ্যামল কুমার নাথ, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মুহাম্মদ আবদুর রউফসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৭ জুন রাতে চট্টেশ্বরী পল্টন রোডে গাড়ির হর্ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে খুন হন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নাছির উদ্দিনের ছেলে আবু জাফর অনিক। এ ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন অনিকের বাবা।


এবিএন/রাজীব সেন প্রিন্স/জসিম/তোহা

এই বিভাগের আরো সংবাদ