আজকের শিরোনাম :

মানবতাবিরোধী অপরাধ : রাজশাহীর টিপুর রায় যে কোনো দিন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ১৩:২২

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাজশাহীর বোয়ালিয়ার মো. আবদুস সাত্তার ওরফে টিপু সুলতানের রায় যে কোনো দিন ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন (সিএভি) ট্রাইব্যুনাল।

আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মো. মোখলেসুর রহমান বাদল, সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি, তাপস কান্তি বল। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম।

এর আগে ২০১৮ সালের ২৯ মে জামায়াতের সাবেক এই নেতার বিরুদ্ধে দুই অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। এর পর দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ মামলাটি বিচারিক কাজ সম্পন্ন করে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন আদালত। ওই বছরের ২৭ মার্চ মামলায় তদন্ত শেষ করে ৪২০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেন (আইও) তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হেলালউদ্দিন।

এ মামলায় ছয়জনের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, নির্যাতন, আটক, অপহরণ, লুণ্ঠনের অভিযোগ রয়েছে। রাজশাহীর বোয়ালিয়ায় ১০ জনকে হত্যা, দুজনকে দীর্ঘদিন আটকে রেখে নির্যাতন, ১২ থেকে ১৩টি বাড়ির মালামাল লুট করে আগুন দেওয়ার অভিযোগ তদন্তে পাওয়া যায়।

তবে ছয় আসামির মধ্যে রাজাকার মনো, মজিবর রহমান, আবদুর রশিদ সরকার, মুসা রাজাকার, আবুল হোসেন মারা গেছেন। বেঁচে আছেন কেবল টিপু সুলতান। তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।

মুক্তিযুদ্ধের প্রথমদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও স্থানীয় রাজাকাররা। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় টিপু সুলতান জামায়াতে ইসলামী ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘ পরবর্তীকালে ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে পড়াশোনা করেন। ১৯৮৪ সালে নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর ডিগ্রি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ২০১১ সালে অবসরে যান তিনি।

মামলার দুই অভিযোগ
এক নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুর দেড়টা থেকে পরদিন মধ্যরাত পর্যন্ত আসামি মো. আব্দুস সাত্তার ওরফে টিপু সুলতান ওরফে টিপু রাজাকার স্থানীয় অন্যান্য রাজাকার ও পাক সেনারা বোয়ালিয়া থানার সাহেব বাজারের এক নং গদিতে (বর্তমানে জিরো পয়েন্ট) হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বাবর মণ্ডলকে আটক করেন। পরে তাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুজ্জোহা হলে স্থাপিত সেনা ক্যাম্পে নিয়ে দিনভর নির্যাতনের পর গুলি করে হত্যা করে লাশ মাটিচাপা দেয়া হয়।

দুই নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২ নভেম্বর রাত আনুমানিক ২টায় এ আসামি, স্থানীয় রাজাকার ও ৪০ থেকে ৫০ পাক সেনা বোয়ালিয়া থানার তালাইমারী এলাকায় হামলা চালায়। এ হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা চাঁদ মিয়া, আজহার আলী শেখসহ ১১ জনকে আটক করে নির্যাতন চালায়। এ সময় তারা তালাইমারী এলাকার ১২ থেকে ১৩টি বাড়ি লুট করে।

পরে আটক ১১ জনকে রাবির শহীদ শামসুজ্জোহা হলে স্থাপিত অস্থায়ী ক্যাম্প ও টর্চার সেলে নিয়ে গিয়ে ৪ নভেম্বর মাঝরাতে ৯ জনকে গুলি করে হত্যা করে মাটিচাপা দেয়।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ