আইএসের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই পুলিশের ওপর হামলা : সিটিটিসি
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ১৪:৫০
ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, নব্য জেএমবির প্রধান টার্গেট পুলিশ। আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর (বিশেষ করে আইএস) দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই জঙ্গিরা পুলিশের ওপর হামলার টার্গেট করেছিল।
আজ সোমবার (১৪ অক্টোবর) বেলা ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আটক নব্য জেএমবির দুই সদস্য মো. মেহেদী হাসান তামিম ও মো. আব্দুল্লাহ আজমিরকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে এ তথ্য জানান তিনি।
মনিরুল ইসলাম বলেন, সিটিটিসির একটি দল বিশেষ অভিযানে নব্য জেএমবির এই দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে জঙ্গিকার্যক্রম পরিচালনায় ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ ও তিনটি মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা নব্য জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য। তাদের প্রধান লক্ষ্য পুলিশ। তাই বিভিন্ন সময় হামলার জন্য তারা পুলিশবক্সকে লক্ষ্য করে হামলা করেছে। প্রতিটি হামলার আগে টার্গেটকৃত স্থানে বারবার রেকি করে তারা।
মনিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশের ওপর তাদের হামলার কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক জঙ্গিসংগঠনগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করা। যার মধ্যে তাদের প্রথম পছন্দ ছিল আইএস। তারা তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছিল। তবে এখন আইএসের সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই।
সিটিটিসিপ্রধান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নব্য জেএমবির সামরিক শাখার এ দুই সদস্য জানিয়েছে, তারা প্রত্যেকেই খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই তারা নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভোলার একটি দুর্গমচরে সামরিক প্রশিক্ষণ নেয় তারা।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা শিয়াচর এলাকায় তক্কার মাঠ সংলগ্ন একতলা একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ল্যাবরেটরির মতো সাজানো কক্ষের সন্ধান পায় কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। সেখানে বিপুল পরিমাণ ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) পাওয়া যায়। ওই অভিযানে বাড়ির মালিক বাংলাদেশ ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত একজন ডিজিএম জয়নাল আবেদীনের ছেলে ফরিদউদ্দিন রুমি ও তার স্ত্রী জান্নাতুল ফোয়ারা অনুকে গ্রেফতার করা হয়। রুমি ঢাকার আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ও প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক আর তার ভাই জামালউদ্দিন রফিক খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থী।
রবিবার রাতে গ্রেফতার দুই জঙ্গি এই জামালউদ্দিন রফিকের নেতৃত্বেই নব্য জেএমবির একটি সামরিক শাখা প্রতিষ্ঠা করেন বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল।
তিনি বলেন, ‘তারা ফতুল্লায় রফিকের বাসায় বোমা তৈরির একটি কারখানা তৈরি করে। গ্রেপ্তাররা পরস্পর যোগসাজশে তৈরি করা বোমা দিয়ে গুলিস্তান এবং সাইন্সল্যাবে হামলায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। এ ছাড়া মালিবাগের হামলায় এবং পল্টন ও খামারবাড়ি যে বোমা পাওয়া গেছে, সেসব তৈরিতে রফিককে সহায়তা করার কথাও তারা স্বীকার করেছে।’
মনিরুল বলেন, ‘তারা স্বীকার করেছে, তাদের পরিকল্পনা এবং নেতৃত্বেই সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পুলিশের ওপর হামলা করা হয়েছে।’
মনিরুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃতদের অন্য সহযোগীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ