আজকের শিরোনাম :

রিফাত হত্যা : সেদিনের বর্ণনা দিলেন রিকশাচালক

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:১১

বরগুনায় দিনে-দুপুরে বহু মানুষের সামনে রিফাত শরীফ নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার বিষয়। নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে নতুন দিকে মোড় নিচ্ছে বহুল আলোচিত এ মামলা। রিফাতকে হাসপাতালে নেওয়ার নতুন ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার পর ভিন্নমাত্রা যোগ হয়েছে মামলাটিতে। ফলে বদলে যেতে পারে মামলার চার্জশিট।

রিফাতের ওপর হামলার পর সেদিন কী ঘটেছিল সেই চিত্র ফুটে ওঠে ভিডিওটিতে। এ নিয়ে কথা বলেছেন কলেজ গেট থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসা সেই রিকশাচালক দুলাল। 

দুলাল বলেন, ‘একটা ছেলে গায়ে রক্তমাখা, রক্ত ঝইর‌্যা পড়তেছিল। সে হাঁইটা আইসা আমার রিকশায় উঠেই কইল, চাচা আমারে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়া যান।’

ব্যাটারিচালিত রিকশার চালক দুলালের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফরাজীরপুল এলাকায়। দুলালের সঙ্গেই রিফাতের শেষ কথা হয়।

ঘটনার বিবরণে দুলাল বলেন, ‘ওইদিন কলেজ সড়কে খ্যাপ নিয়ে গিয়েছিলাম। মানুষের ভিড়ের কারণে আর সামনের দিক যাইতে পারি না। শুনলাম সামনে কারা যেন কারে মারতেছে। প্যাসেঞ্জারকে নামিয়ে দিয়ে আমি রিকশা ঘুরাইয়া কেবল দাঁড়াইছি, এ সময় একটা ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় হাঁইট্টা আইসা আমার রিকশায় উইঠাই কয়- চাচা আমারে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়া যান।’

দুলাল বলেন, ‘আমি দেখলাম গলা ও বুকের বামপাশ কোপে কাইট্টা রক্ত বাইর হইতেছে। হের জামাডা টাইন্না আমি গলা ও বুকে চাইপ্পা ধইরা হেরে কইলাম আপনে চাইপ্পা ধরেন, আমি চালাই। আমি হাসপাতালে যাওনের জন্য কেবল সিটে বসছি, চালামু, ঠিক সেই মুহূর্তে একটা মেয়ে দৌড়ে রিকশায় উইঠা ওই পোলাডারে ধইর‌্যা বসে। আমি তাড়াতাড়ি রিকশা চালাইয়া হাসপাতালের দিকে যাই।’

দুলাল বলেন, রিফাত এক মিনিটের মতো ঘাড় সোজা করে বসেছিলেন; কিন্ত এরপর সেই মেয়েটির কাঁধে ঢলে পড়ে যান। আর ঘাড় সোজা করতে পারেননি।

তাদের রিকশার পাশাপাশি একটা লাল পালসার মোটরসাইকেলে দুজন ছেলে যাচ্ছিল। মিন্নি চিৎকার করে তাদের কাছে রক্ত থামানোর সাহায্য চাইছিলেন, কিন্তু ওরা সাড়া দেয়নি বলে দুলাল জানান।

দুলাল বলেন, ‘আমার কাছে মিন্নি ফোন চায় তার বাড়িতে কল করে জানানোর জন্য, কিন্ত আমার ফোন নাই।’

দুলাল বলেন, পরে ওই মোটরসাইকেলের ছেলেদের কাছেও মিন্নি ফোন চান তার বাবার কাছে ফোন করার জন্য। কিন্তু তারা তাদের কাছে ফোন নেই বলে জানায়।

দুলাল বলেন, ‘ওই ছেলেগুলো বলে-আমাদের কাছে ফোন নাই, তুমি হাসাপাতালে যাইতেছ যাও।’

দুলাল বলেন, ‘হাসাপাতালের গেট থেকে ঢোকার সময় মিন্নি একজন লোককে ডাক দেন। রিকশা থামানের সাথে সাথে ওই লোক দৌড়ে এসে রিফাতের অবস্থা দেখেই আমায় নিয়ে স্ট্রেচার আনতে যায়। আমি আর সেই লোক স্ট্রেচার নিয়ে এসে রিফাতকে রিকশা থেকে নামিয়ে স্ট্রেচারে তুলে অপারেশন থিয়েটারে দিয়ে আসি।’

এর পর রিফাতকে অ্যাম্বুলেন্স করে বরিশাল নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ এসে তার রিকশার ছবি তুলে নেয় ও কাগজপত্র নিয়ে যায়। 

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ