আজকের শিরোনাম :

জিনের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে ইমাম গ্রেফতার

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০১৯, ১৫:৩৮

জিনের ভয় দেখিয়ে একাধিক নারীকে ধর্ষণ ও কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগে রাজধানীর দক্ষিণখানে মসজিদের ইমাম নাম ইদ্রিস আহম্মদকে (৪২) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১।

এ সময় তার মোবাইলফোন জব্দ করা হয়। ওই মোবাইল ফোনে ধর্ষণ ও বলাৎকারের অনেক ভিডিও ও ছবি পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে র‌্যাব।

আজ সোমবার (২২ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।

তিনি বলেন, দক্ষিণখানের স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি ও মাদরাসায় শিক্ষকতা এবং দীর্ঘদিন দক্ষিণখান এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিশেষ প্রভাব বলয় তৈরি করেন ইদ্রিস আহম্মেদ। প্রভাবকে পুঁজি করে দীর্ঘদিন ধরে কৌশলে ধর্ষণ ও বলাৎকারের মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করে আসছিলেন তিনি।

এসব ব্যাপারে সম্প্রতি ভুক্তভোগী এক নারীর অভিযোগ আমলে নিয়ে ছায়াতদন্ত এবং গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে র‌্যাব-১। অনুসন্ধানের পর র‌্যাব-১-এর কাছে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য।

র‌্যাব-১ সিও বলেন, অভিযুক্ত ইদ্রিস আহম্মেদের বাড়ি সিলেট জেলায়। তিনি সিলেটের একটি মাদরাসা থেকে ১৯৯৮ সালে টাইটেল পাস করেন। এর পর সিলেটের কোম্পানিগঞ্জের একটি মসজিদে ইমামতি এবং পাশাপশি একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন। ২০০২ সালে ঢাকায় এসে দক্ষিণখানের ওই মসজিদে ইমাম হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৮ বছরের বেশি সময় ধরে এলাকায় ঝাড়ফুঁক এবং তাবিজ-কবজ বিক্রি করেন। তার সঙ্গে জিন আছে মর্মে প্রচার ও কু-কর্মের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন। এই সুযোগ কাজ লাগিয়ে তিনি সুন্দরী নারীদের মিথ্যা ঝাড়ফুঁক ও জিনের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে অনেক নারীই আত্মসম্মান এবং কুসংস্কারের কারণে তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা কাউকে বলেননি।

তিনি বলেন, ইদ্রিস মসজিদে তার কক্ষে খেদমতের অজুহাতে কিশোরদের জোরপূর্বক বলাৎকার করেন। এ ছাড়া তিনি যে মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন সেখানকার ছাত্রদের মসজিদে ডেকে নিয়ে এসে কৌশলে বলাৎকার করে কৌশলে মোবাইলফোনে অপকর্মের ভিডিও ধারণ করেন। ১২ থেকে ১৯ বছর বয়সী কিশোরদের বলাৎকার করেন বলে জানা যায়। জিন ও তাবিজ করার ভয় দেখিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বলে পুনরায় ভিকটিমকে ধর্ষণে বাধ্য করেন। কোনো ভিকটিম অনৈতিক কাজে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে তাকে মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখানো হয়। এতে বাধ্য হয়ে ভিকটিম অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও বারংবার বলাৎকারের শিকার হয়েছে।

গ্রেফতার ইদ্রিস আহম্মেদ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, মসজিদের একটি বিশেষ কক্ষে তিনি ঘুমাতেন। তার সকল অপকর্ম ওই কক্ষেই সম্পন্ন হতো এবং তার এই অপকর্মের ভিডিওগুলো সে তার খাদেমদের দিয়ে ধারণ করাতে বাধ্য করতেন। এ পর্যন্ত ইদ্রিস একাধিক নারীর সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন বলে স্বীকার করেছেন। জিন নিয়ে তার প্রতারণা মিথ্যে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

এবিএন/সাদিক/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ