আজকের শিরোনাম :

১ লাখ টাকার মূল্য ১০ হাজার টাকা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০১৮, ১৯:৩৬

ঢাকা, ০৮ জুন, এবিনিউজ : রাজধানীতে জাল টাকা তৈরির বেশ কয়েকটি চক্রের মধ্যে ঈদকে সামনে রেখে এখন সক্রিয় রয়েছে অন্তত ১০টি চক্র। এই ১০ চক্রের একটিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এই চক্রটি ঈদকে সামনে রেখে অন্তত ৪ থেকে পাঁচ কোটি টাকা বাজারে ছেড়েছে। আরও চার থেকে পাঁচ কোটি টাকা বাজারে ছাড়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু তার আগেই চক্রের সব সদস্য গোয়েন্দাদের জালে আটকে যায়।

আজ শুক্রবার বেলা ৩টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ১ কোটি জাল টাকা ও টাকা তৈরীতে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামসহ এই জাল টাকা প্রস্তুতকারী একটি ১০ জনের দলকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- রফিক, জাকির, হানিফ, রাজন শিকদার ওরফে রাজা ওরফে রাজু, খোকন ওরফে শাওন, রিপন, মনির, সোহরাব, জসিম ও লাবনী। এসময় তাদের হেফাজত হতে প্রায় এক কোটি জাল টাকার নোট ও জাল টাকা তৈরীর সরঞ্জাম একটি কালো রংয়ের এসার ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ, এপসন ব্র্যান্ডের কালো রংয়ের দুটি কালার প্রিন্টার, এ ফোর সাইজের এক পৃষ্ঠায় জাল টাকার প্রিন্টকৃত ১৬টি পাতা, স্ক্রীন বোর্ড ১০টি যার সাহায্যে জালনোটে জলছাপ হলগ্রাম লেখার প্রিন্ট দেওয়া হয়, স্ক্রীন বোর্ডের একটি পিড়া, জালটাকা তৈরী করার আইপিআই কালির সাদা প্লাষ্টিকের কৌটা ২৭টি, ওচও কালির লাল টিনের কৌটা আটটি, পিভিসি মিডিয়াম প্রিন্টিং ইংকের একটি ব্যবহৃত খালি কৌটা, গোল্ড মিডিয়াম কালির সাদা প্লাষ্টিকের কৌটা দুটি, কালার কার্টিজ ৩০০টি ও জালটাকা তৈরীর জন্য ব্যবহৃত সূতা তৈরীর তিনটি রোল উদ্ধার করা হয়।

অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, ‘মাত্র ১০ হাজার টাকার বিনিময়র এক লাখ জাল টাকা পাওয়া যেত। ঈদকে সামনে রেখে জাল টাকার নোট ছাপিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করতে এমনই অপকর্ম করার উদ্দেশ্য ছিল জাল টাকার উৎপাদক ও কারবারিদের।’

তিনি বলেন, ‘জাল টাকার তৈরীর মূলহোতা গ্রেফতারকৃত রফিক প্রথম জীবনে নোয়াখালী ছগির মাস্টার নামক এক ব্যক্তির সহযোগী হিসেবে জাল টাকা তৈরী করত। এক পর্যায়ে সে নিজেই সরঞ্জামাদি ক্রয় করে রাজধানীর কদমতলী থানাধীন পূর্ব জুরাইন বৌ-বাজার এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে জাল টাকা তৈরীর কার্যক্রম শুরু করে। সে তার অন্যতম সহযোগী রাজন, লাবনী ও অন্যদেরকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কদমতলীসহ ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে জাল টাকার ব্যবসা করে আসছিল। গ্রেফতারকৃত জাকির জাল টাকার তৈরীর উদ্দেশ্যে বিশেষ ধরনের কাগজে বিভিন্ন রকমের জলছাপ এবং নকল নিরাপত্তা সূতা স্থাপন করত।’

ডিবি প্রধান বলেন, ‘উৎপাদকের এক লাখ টাকা তৈরি করতে খরচ হয় প্রায় ১০ হাজার টাকা, পরবর্তীত সময়ে সে পাইকারী বিক্রেতার নিকট এক লাখ টাকা ১৪-১৫ হাজার টাকায় বিক্রয় করে। পাইকারী বিক্রেতা ১ম খুচরা বিক্রেতার নিকট বিক্রয় করে ২০-২৫ হাজার টাকা, ১ম খুচরা বিক্রেতা ২য় খুচরা বিক্রেতার নিকট বিক্রয় করে ৪০-৫০ হাজার টাকায় এবং ২য় খুচরা বিক্রেতা মাঠ পর্যায়ে সেই টাকা সমমূল্যে অর্থাৎ আসল এক লাখ টাকায় বিক্রয় করে।’

গ্রেফতার হওয়া জাল টাকা তৈরির কারিগর জাকির হোসেন বলেন, প্রতি ১০ লাখ টাকা বানাতে খরচ হয় মাত্র সাত হাজার টাকা। আর প্রতি ১ লাখ টাকা বিক্রি হয় মাত্র ১০ হাজার টাকায়। সেটি দ্বিতীয় ধাপে গিয়ে বিক্রি হয় ২২ হাজার টাকায়।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ