আজকের শিরোনাম :

খালেদা জিয়ার জামিন নিষ্পত্তিতে অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব করা হয়েছে: হাইকোর্ট

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০১৮, ১৮:৩৪

ঢাকা, ০৬ জুন, এবিনিউজ : মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলায় জামিন আবেদন নিষ্পত্তিতে অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব করা হয়েছে বলে রায়ের পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হাইকোর্টের আদেশের সাত পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিতে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে।

একই সাথে পর্যবেক্ষণে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট (হাজিরা পরোয়ানা) জারিপূর্বক জামিন আবেদন নিষ্পত্তি না করাকে ম্যাজিস্ট্রেটের (বিচারিক আদালতে হাকিম) 'গুরুতর ভুল' উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ৩১ মে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন আবেদন নাকচ করে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে আবেদনটি দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন। 

গত ১৭ মে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারিপূর্বক জামিন চেয়ে খালেদা জিয়ার আবেদনটি নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন ঢাকার মহানগর হাকিম। একই সাথে গত ৭ জুলাই ওই মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়।

বিচারিক আদালতের আদেশে বলা হয়, অত্র মামলায় আসামি বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গত ২০১৬ সালের ১৭ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা (ডব্লিউ/এ) ইস্যু করা হয়। তৎপরিপ্রেক্ষিতে প্রসিকিউশন পক্ষ উক্ত গ্রেফতারি পরোয়ানা মূলে আসামির বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি, যা উক্ত পক্ষের ওপর আরোপিত দায়িত্ব। 

ফৌজদারী কার্যবিধি অনুযায়ী অন্য মামলায় জেল হাজতে থাকলে আসামি গ্রেপ্তার দেখানোর দায়িত্ব প্রসিকিউশনের বা বাদীপক্ষের। আসামী পক্ষের এ পর্যায়ে এ ধরনের দরখাস্ত দেওয়ার আইনগত কোন সুযোগ নাই। 

এ পর্যায়ে উক্ত পক্ষ কর্তৃক দাখিলী দরখাস্ত নথিজাত করা হইল। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের জন্য পরবর্তী তারিখ ৭ জুলাই।

ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এমন আদেশের বিষয়ে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, উপরোক্ত আদেশের প্রেক্ষিতে আমাদের এটা বলতে দ্বিধা নেই যে, বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট এই বিষয়ে প্রক্রিয়াগত দিক থেকে ভুল পথে অগ্রসর হয়েছেন।

নালিশী মামলায় অভিযুক্ত প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারিপূর্বক জামিন আবেদন করেন। তিনি আদালতকে অবহিত করেন যে, অন্য মামলায় তিনি কারাগারে আছেন। এ অবস্থায় গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল হয়েছে কিনা, সেই প্রতিবেদন পাওয়ার জন্য অপেক্ষার দরকার নাই। 

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের জন্য ৫ জুলাই দিন রেখে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারিপূর্বক জামিন আবেদন নথিজাত করে ম্যাজিস্ট্রেট গুরুতর ভুল করেছেন।

উপরোক্ত ঘটনা ও পরিস্থিতি বিবেচনায় এই মামলায় এটা স্পষ্ট যে, পরোয়ানা তামিলের প্রতিবেদন পাওয়ার নামে ম্যাজিস্ট্রেট জামিন আবেদন নিষ্পত্তিতে অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব করেছেন, যা বিচারিক প্রক্রিয়ার অপব্যবহার।

এ অবস্থায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম ও সংশ্লিষ্ট মহানগর হাকিমকে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারিপূর্বক জামিন চেয়ে করা আবেদন, যেটি নথিজাত করা হয়েছিল তা দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়া হলো। এই সব পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনার মাধ্যমে আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর আদালতে এ মামলাটি করেন। এ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। 

এরপর গত ২৫ এপ্রিল প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারিপূর্বক খালেদা জিয়ার পক্ষে এ মামলায় জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। কিন্তু গত ১৭ মে জামিন না দিয়ে আবেদনটি নথিভুক্ত করা হয়। 

তার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকরের আদেশ দিয়ে ৫ জুলাই পরবর্তী দিন ধার্য করেন আদালত। এ অবস্থায় তার জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। ওই আবেদন নিষ্পত্তি করে হাইকোর্ট উক্ত পর্যবেক্ষণ ও আদেশ দেন।

এবিএন/মমিন/জসিম

এই বিভাগের আরো সংবাদ