নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ছিটানোর গ্লাস উদ্ধার
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ মে ২০১৯, ১৪:৩৫
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের গায়ে আগুন দেওয়ার সময় অগ্নিসংযোগকারীরা একটি গ্লাসে করে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন তেল ছিটিয়েছিলেন। সে গ্লাসটি উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মো. শাহ আলম জানান, সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় অধ্যক্ষের দফতরের সামনের ওয়াল কেবিনেটের ভেতর থেকে বুধবার রাতে গ্লাসটি মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়।
রিমান্ডে থাকা আসামি শাহাদাত হোসেন শামীম, জাবেদ হোসেন ও যোবায়ের আহমেদকে নিয়ে রাতে ওই গ্লাস উদ্ধারে অভিযানে যায় পিবিআই।
ওই তিন আসামি এর আগে আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও মামলায় অধিকতর তদন্তের জন্য বুধবার দুপুরে তাদের আদালতে হাজির করে আরও এক দিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই।
তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ওই আসামিরা নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার সময় কেরাসিন ছিটানোর জন্য একটি গ্লাস ব্যবহার করার কথা বলেছিল। এর ভিত্তিতেই তাদের নিয়ে রাতে মাদ্রাসায় অভিযান চালানো হয়।
পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান, পরিদর্শক মো. মোনায়েম হোসেন, পরিদর্শক লুৎফুর রহমানও সে সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে হত্যাকাণ্ডের সময় বোরকা পরিহিত থাকা শাহাদাত হোসেন শামীম ও জোবায়ের আহম্মদের দুটি বোরকা উদ্ধার করা হয়।
আলোচিত এ মামলায় এ পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। তাদের মধ্যে ওই অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহিম ওরফে শরিফ, ইফতেখার হোসেন রানা, এমরান হোসেন মামুন, মহিউদ্দিন শাকিল, হাফেজ আবদুল কাদের ও আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ওই মাদরাসার সহ-সভাপতি রুহুল আমিন রয়েছেন।
এ মামলায় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১২ জন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন- নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়ের দায়ে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মারা যায় নুসরাত জাহান রাফি।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামালা দায়ের করেন। মামলার এজহারভুক্ত ৮ আসামিসহ এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।
এবিএন/সাদিক/জসিম
এই বিভাগের আরো সংবাদ